আজাদ আবুল কালাম
বিষয়ঃ বিজ্ঞান অভিশাপ নয় আশির্বাদ।
প্রিন্সিপাল আব্দুশ শাকূর সাহেবের স্বপ্নের চারনভূমি ইকরা বাংলাদেশ ক্যাডেট স্কুল এন্ড মাদ্রাসা শ্রীমঙ্গল, ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীদের মধ্যে দু’দিন থেকে কি তালাশী ভিবুরতা, তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের জন্য বইয়ের পর বই, পাতার পর পাতা ঘাটাঘাটির কি অন্বেষী চিন্তা। বুক ভর্তি রেফারেন্স নিয়ে, সমস্ত আয়োজন সমাপ্ত করে যুদ্ধ বিজয়ের স্বপ্ন নিয়ে অবশেষে দুটি দল মাঠে নামে। আজ দুপুর ১২:৪০ মিনিটে।
কোমলমতী জ্ঞান পিপাসুদের মুখ থেকে যেভাবে শুরু হয় খই ফুটা তর্কের পালাঃ
আজকের এই বিতর্ক অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজক, বিচারক প্যানেলের সম্মানিত মডেরেটর ‘নিরাপদ সড়ক চাই বাংলাদেশ’ এর এক্সিকিউটিভ মেম্বার, ওয়েলফেয়ার সংগঠনের একনিষ্ঠ সংগঠক, শ্রীমঙ্গল স্টুডেন্ট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট, এবং ইকরা বাংলাদেশের সিনিয়র টিচার জনাব শামীম আহমদ। যার অনুপম আদর্শ আর সৃজনশীল উদ্যোগে সময়ের সাথে এক ধাপ এগিয়ে যেতে আমাদের স্টুডেন্টরা সদা সোচ্চার এবং প্রেরনায় উজ্জিবিত।
.
ছবিতে ডানদিকে বিচারকের সারিতে দেখছেন আরেক নিভৃত প্রতিভা, স্টুডেন্টদের স্বচ্ছ গাইড লাইন, সুসংহত চিন্তার কোষাগার, ইকরা বাংলাদেশ শ্রীমঙ্গল শাখার সিনিয়র টিচার, সম্মানিত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রধান প্রোপাইটর অব কম্পিউটার ল্যাব এবং একাউন্টেন্ট অব ইকরা বাংলাদেশ শ্রীমঙ্গল শাখা জনাব মাহবুব আলম সাজমান। এবং বামদিকে উপস্থাপকের চেয়ারে কোনোমতে চেপে বসা আমি এক সাধারণ শিক্ষক। সকলের স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতি ও দর্শক শ্রোতা গ্যালারীতে ছাত্রছাত্রীদের টইটুম্বুর আমেজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
ছাত্রীদের চোখে মুখে কি আশা হতাশার ছাপ, এমনভাবে আজ ওদেরকে দেখা যাচ্ছিলো, যেন আজ তারা শুধু আমাদের ছাত্রী ই নয়, জ্ঞান বিজ্ঞানের রণক্ষেত্রে ঝাপিয়ে পড়া এক ঝাক বিরাঙ্গনা।
আমাদের ছাত্রী ই নয় শুধু দুই দিগন্তের বিরাঙ্গনাদের এই আয়োজনের “বিজ্ঞান অভিশাপ নয় আশির্বাদ” এর পক্ষ দলনেত্রী ফারিহা সাদাদ সুমা, সাদিয়া আক্তার, খাদিজা আক্তার বিচক্ষনতার সাথে বলেই যাচ্ছিলো বিজ্ঞানের চরম উত্কর্ষ সাধনে মানুষের যোগাযোগ জীবনের উন্নতির কথা, কম্পিউটারের বিশ্বব্যাপী অবদানের কথা, ইন্টারনেটের সর্বব্যাপী ভূমিকার কথা। যোগাযোগ যানের দ্রুততা এবং কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞানের উন্নতি ও অবদানের কথা। সব গুছিয়ে বলেই সম্মানিত মডেরেটরের দৃষ্টি আকর্ষন করে তারা সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। আমরা ভাবতেই পারছিলাম না এই বাচ্ছাগুলো এভাবে কথা বলতে পারবে।
ধারাবাহিকভাবে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে থাকে। কিন্তু ঠাস ঠাস করে প্রতিপক্ষ দলের তুখোড় গলাবাজ তাত্ত্বিক ক্ষুদে জ্ঞান রাজ তানজিলা তান্নি, হুমায়রা তাবাসসুম মীম, মাহমুদা আক্তার বিজ্ঞান অভিশাপ বলে প্রমান করতে গিয়ে প্রথমেই বিজ্ঞানের অন্যতম আবিস্কার পারমানবিক বোমার বিধ্বংসের কথা তুলে ধরে, নিয়ে আসে বিজ্ঞানের আরেক মরন ফাঁদ মোবাইলের ক্ষতির দিক, যা কিনা ব্যাবহার করে আশ্লীল ভিডিও গান আর নষ্টামী নোংরামীতে সমাজে নেমে আসে চরম অবক্ষয়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুব সমাজের জীবনের মূল্যবান সময়ের তীব্র অপচয়। ইসলামী সভ্যতার বুকে যন্ত্রের অপব্যাবহারের কূফল। সব মিলিয়ে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি করে তুলে উভয় দলই। তবে তথ্য আর উপস্থাপন দক্ষতার ফলে “বিজ্ঞান আভিশাপ নয় আশীর্বাদ” এর বিপক্ষ দল বিজ্ঞান অভিশাপ বলে ওদের চোখে আঙুল ধরিয়ে প্রমানসহ দেখিয়ে দিয়ে বিজয় লাভ করে।
ফলাফল প্রকাশের পর তাদের চোখে মুখে নেমে আসে খুশির জোয়ার। দর্শক স্রোতাদের জয়জয়কার। অপরপক্ষের ইষত্ গ্লানি অবশ্য মুছে উঠে অন্ততো তাদের দলের খাদিজা হয়েছে আজকের বিতর্কের শ্রেষ্ট বাক প্রতিদ্বন্দী বিজয়ীনি।
আমাদের এই আয়োজনটুক যদি ছাত্র ছাত্রীদের জীবনের কিঞ্চিত্ উপকারের কারণ হয় এটাই বড় স্বার্থকতা।