Thursday 28th March 2024
Komashisha familyAdvertisementContact । Time: রাত ১০:৫৪
Home / আমল / তাবলিগের ছোঁয়ায় বদলে গেলেন নায়িকা হ্যাপি

তাবলিগের ছোঁয়ায় বদলে গেলেন নায়িকা হ্যাপি

Ehsan Bin _Komashisha

এহসান বিন মুজাহির :
সাম্প্রতিককালে চলচ্চিত্রের আলোচিত এবং বহুলসমালোচিত অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপী। সম্প্রতি চলচ্চিত্র জগত ছেড়ে ইসলামের আলোর পথের অভিযাত্রী হয়েছেন চিত্রনায়িকা হ্যাপী। চলচ্চিত্র অঙ্গনে খুব দাপটের সাথেই কাজ করেন নায়িকা নাজনিন আখতার হ্যাপি। দশর্কপ্রিয় নায়িকা হ্যাপি অভিনয় জীবন থেকে ফিরে আখিরাতের পথ বেছে নিয়েছেন। কিছুদিন আগেও তিনি ধর্মপ্রাণ প্রত্যেক মানুষের কাছে ছিলেন নিন্দিত, খুব ঘৃণিত! সমাজের ভালো মানুষেরা খুব ঘৃণ্যাভরে এই নায়িকার নাম মুখে নিতো! পরপুরুষের সাথে শারিরীক সম্পর্কসহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপে তিনি ছিলেন আলোচিত-সমালোচিত! দীর্ঘদিন চলচ্চিত্র অঙ্গনে অন্যান্য নায়িকার মতো খোলামেলা জীবন-যাপন করেছেন। অন্যসব নায়িকাদের মতো তিনিও কুকর্ম, নোংরামীসহ অনেক অনৈতিকতায় ছিলেন অভিযুক্ত! অন্যান্য অভিনেত্রীদের চেয়ে হ্যাপি ছিলেন প্রতিভাবান এবং চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার জনপ্রিয়তা ছিলো শীর্ষে। ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করে আলোড়ন সৃষ্টি করা চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপী সম্প্রতি চলচ্চিত্র ছেড়ে আল্লাহর প্রার্থনায় নিমগ্ন হয়েছেন।
বাংলাদেশের এ জনপ্রিয় নায়িকা নাজনিন আখতার হ্যাপির জীবনে বিরাট পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। কার জীবনের মোড় কখন কোন দিকে ঘুরে যায় মানুষের পক্ষে তা বলা খুব মুশকিল। এমনি নায়িকা হ্যাপির জীবনে হঠাৎ করেই অস্বাভাকি পরিবর্তন! আখেরাতের ভয়ে এই অভিনেত্রী অভিনয় জীবন থেকে ফিরে এসে ইসলামের আলোর পথের অভিযাত্রী হয়েছেন। সুন্দর ও পবিত্রময় জীবনগঠনের জন্য পূর্ণ ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার চেষ্ঠা করছেন। বাংলাদেশে অভিনয়জগতে হ্যাপির জীবন বদলের এই অস্বাভাবিক কাহিনি অনন্য এক দৃষ্টান্ত! অবিস্মরণীয় এঘটনাটি পথহারা মুসলিম নর-নারীর জন্য রয়েছে পাথেয়। পথভ্রান্ত মুসলমানদেরকে ইসলামের পথে ফিরে আসার প্রেরণা যোগাবে।
বেশ কয়েকমাস ধরে হ্যাপি নিয়ে মিডিয়া ছিলো নীরব! ফেসবুক স্ট্যটাস থেকে আবারও খবরের শিরোনাম হলেন নায়িকা হ্যাপি! নামাজ, কুরআন তেলাওয়াতসহ ধমীয় বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে ফেসবুকে একের পর এক স্ট্যটাসই তিনি আবর খবরের শিরোনাম হয়েছেন!

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় হ্যাপী চলে যাচ্ছেন শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। এই পোস্টের পরে হ্যাপীর ফোনে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন গ্রহণ করেন নি। আর এটাই ছিলো নায়িকা হ্যাপির সর্বশেষ স্ট্যাটাস!
গত ২০ আগস্ট নিজের ফেসবুক ও অফিসিয়াল পেইজে চলচ্চিত্র জগত থেকে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বিষয়ের স্ট্যটাস। পাঠকের পড়ার সুবিধার্তে স্ট্যটাসটি হুবহু এখানে উপস্থাপন করা হলো, Najnin Akter Happy, আসসালামু আলাইকুম। আমি আমার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি আরও বেশকিছুদিন আগে। আমি চলচ্চিত্র,মিডিয়া ঐসকল রঙিন দুনিয়া থেকে একেবারের জন্য বিদায় নিয়েছি। জীবনটাকেই বদলে ফেলেছি। এবং আল্লাহের কাছে তওবা করে এখন শুধু নামাজ আর ভাল মানুষ হওয়ার আকাঙ্খয় দিন কাটাচ্ছি। এর মধ্যে অদ্ভূত এক শান্তি, যে শান্তি দুনিয়ার সব সম্পদ নিজের থাকলেও সম্ভব নয়। আমাদের প্রত্যেকের এটাই চিন্তা করা উচিত যে, দুনিয়া খুব কম সময়ের এই সময়টা শুধুমাত্র আল্লাহের ইবাদাত করার জন্য,আর কোন কিছুর জন্য নয়। আমরা যদি সবাই একবার চিন্তা করি দুনিয়া কি? কিসের জন্য? মৃত্যুর পর কি হবে? তাহলে আমরা সব উত্তর পেয়ে যাব। আমি খুব ভাগ্যবতী যে,আমি নিজের ভূল বুঝে এখন শুধু আল্লাহর ভালোবাসায় মগ্ন। দুনিয়ার কোন শক্তি নেই আমাকে অসৎ পথে নিয়ে যাওয়ার বা আল্লাহের পথ থেকে সরানোর।আমার সাথে যে বা যারা অন্যায় করেছে আমি সকলকে ক্ষমা করে দিয়েছি, আর চাই আল্লাহ তাদের সঠিক পথে আসার তৌফিক দান করুক এবং তাদের ক্ষমা করুক।রবিশ্বাস করুন ইসলামের পথে চলা আর ভাল মানুষ হওয়ার চেষ্টা করার মধ্যে বেহেশতের সুখ যা আপনি আর কোনভাবে অনুভব করতে পারবেন না। দুনিয়াতে যে যত বেশি কষ্টে থাকে সে তত ভাগ্যবান/ভাগ্যবতী কারন আল্লাহ তার যেই বান্দাদের বেশি ভালবাসেন তাদেরকে দুঃখ-কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা করেন আর এই পরিক্ষায় পাশ করতে পারলে আল্লাহ তার জন্য আখিরাতে অনেক বড় পুরষ্কারের ব্যবস্থা করবেন। আর যেই মানুষ অন্য একজন মানুষকে নিয়ে হাসি-তামাসা, ঠাট্টা, বিদ্রুপ আর ছোট এবং অপমান করে তাদেরকে আল্লাহ দুনিয়াতে আরও সুযোগ দেয় এবং মৃত্যুর পর তাদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে। আমি বেপর্দায় চলতাম, ইসলাম মেনে চলতাম না, রঙ্গিন দুনিয়ায় চলতাম আমি যদি আল্লাহকে ভয় করে ও আল্লাহকে ভালবেসে ইসলামের পথে আসতে পারি তাহলে আপনি/আপনারা কেন পারবেন না? আল্লাহ সবসময় অপেক্ষা করেন তার বান্দা কখন তার কাছে ক্ষমা চায় এবং আল্লাহের দেখানো পথে চলে! আমি আল্লাহকে ভালোবেসে যে সুখ পাচ্ছি যা জীবনে আর কখনোও পাইনি।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন আমার ঈমান ঠিক রেখে বাকি জীবন আল্লাহর দেখানো পথ অনুসরণ করে চলতে পারি। মানুষ চাইলেই বদলাতে পারে আর আল্লাহর পথে চলতে চাইলে তিনি নিজে পথ দেখিয়ে দেন।এই মুহূর্তে যদি মারা যাই আল্লাহর কাছে কিভাবে পাপের জবাবদিহি করব? দুনিয়া থেকে পরকালের জন্য কি নিয়ে যাব?এইসব একবার ভাবুন তাহলেই একজন ভাল ও পবিত্র মানুষ হতে পারবেন। আমীন। এ স্ট্যটাসের পরই তার জীবনের পরিবর্তন শুরু।
ঘোষণা অনুযাযী কাজও করছেন তিনি। নিজেকে বদলাতে চিত্রনায়িকা হ্যাপি
গত ৩০ আগস্ট’১৫ (শনিবার) জীবনের প্রথম তাবলিগ জামাতের মাস্তুরাতে সময় লাগান। বিগত ৩০ আগস্ট, শনিবার রাতে তার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তাবলিগে যাওয়ার কথা জানান তিনি। ওই স্ট্যাটাসে হ্যাপী বলেন, ‘আজকে প্রথমবার তাবলিগে গিয়েছিলাম মুফতি উসামা ইসলাম ভাই এর বাসায়। পরিবেশটাই আলাদা ছিল, যেখানে অনেক অনেক মানুষ যারা শুধু আল্লাহকে ভালোবেসে আল্লাহের পথে চলার সুবিধার্থে ইসলামের আলোচনায় শামিল হয় সেই সাথে সেখানে যারা ছিল সবার মন নিশ্চয় আল্লাহের নূরে আলোকিত। এমন একটি জায়গা হাজারো সুন্দর জায়গা থেকে অনেক বেশি সুন্দর ও পবিত্র কারণ সেখানে সবার ধ্যানে শুধু মহান আল্লাহ। সেখান থেকে আসতে ইচ্ছা করছিল না। মনে হচ্ছিল সারা রাত বসে কোরআনের ব্যাখ্যা আর হাদিস শুনি আর সবার সাথে আল্লাহকে প্রাণ ভরে ডাকি। উসামা ভাই চমৎকার বয়ান করেন যার কারণে কথাগুলো মনে নাড়া দিতে বাধ্য এবং তিনি অসম্ভব ভালো একজন মানুষ’। নায়িকা হ্যাপি স্ট্যটাসে আরো বলেন, ‘ইসলামের পথে চলার আসায় এমন একটি পরিবেশে যেতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমাদের সবারই উচিত আল্লাহের কথা মেনে চলা ও তার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা, যে পারে সে পরকালের জান্নাতবাসী নি:সন্দেহে! সুবাহানাল্লহ! (-সুত্র-দৈনিক সমকালসহ বিভিন্ন পোর্টাল, ৩০ আগস্ট)

৩০ আগস্ট তাবলিগ জামাতে সময় লাগানোর ভালো লাগার অভিজ্ঞতা নিয়ে স্ট্যটাস আপলোডের পর থেকেই বেশ কয়েকটি অনলাইন পোর্টালসহ দৈনিক কাগজগুলোর শিরোনাম হন চিত্রনায়িকা হ্যাপি! চলচ্চিত্র জগত থেকে ফিরে এসে তাবলিগে সময় লাগানোর পর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, তাহাজ্জুদ, ফাজাইলে আমলের তালীম, নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত, পর্দা তথা বোরকাসহ ইসলামী বিধি-বিধান, কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন পরিচালনায় করায় অনেকের মনেই নানা ধরণের প্রশ্ন ও সংশয় জেগেছে! হ্যাপিকে নিয়ে অনলাইন পোর্টাল, সোশ্যাল মিডিয়াসহ ফেসবুকে একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে! স্ট্যটাস-কমেন্টে পজেটিভ ও নেগেটিভ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ এটাকে নায়িকা হ্যাপির স্ট্যান্টবাজি বা ভেলকিবাজি বলে আখ্যা দিচ্ছেন। কেউ কেউ তাকে নিয়ে সুনাম, প্রশংসা করছেন!
অবিশ্বাস বা বিস্ময়ের কিছু নেই! জীবনের ভুলত্রুটির উপর লজ্জিত হয়ে গোনাহর কাজে পরিহার করে খালিছভাবে যে কেউ তাওবাহ- ইসতিগফার করে আল্লাহ কাছে ক্ষমা চাইলে মহান গাফুর রাহীম সে ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দেন, দান করেন হিদায়াত নামক মহাসম্পদ! নায়িকা হ্যাপি নাজনিনের বেলায় এমটিই ঘটেছে। হ্যাপির এ পরিবর্তন নিয়ে টাঠ্রা-মশকারি, উপহাস বা অবিশ্বাসের কিছুই নেই! তার এ পরিবর্তন শুধু ফেসবুকের স্ট্যটাসেই নয়! চাল-চলন, পেশাক, ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমেও দেশবাসির কাছে পরিস্কার। অভিনেত্রী হ্যাপি বলেন, ‘আমি জীবনের পরিপূর্ণ শান্তি খুঁজে পেয়েছি। ভাগ্যবতী বলেই আমি ইসলামের পতাকাতলে আসতে পেরেছি। আমার অবস্থার এখন পরিবর্তন ঘটেছে। এই পরিবর্তনের জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি’।
চিত্রনায়িকা হ্যাপির সাথে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদক একান্ত আলাপকালে তার স্ট্যটাস ও পরিবর্তন বিষয়ে প্রশ্ন করলে নায়িকা হ্যাপি উত্তরে বললেন, ‘দেখুন সবার জীবনেই কিছু ব্যক্তিগত বিষয় রয়েছে। এটাও আমার সেই বিষয়ের অংশ। যেহেতু প্রশ্ন উঠেছে তাই সবাইকে বলতে চাই এটা কোনো ভেলকিবাজি নয়। মুসলমান হিসেবে যে দায়িত্ব রয়েছে তা পালন করছি। আদায় করছি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। এক নামাজের পর পরবর্তী নামাজের আজানের জন্য অপেক্ষা করি। এছাড়া তিলাওয়াত করি কুরআন। অথচ এইগুলো নিয়ে কটাক্ষ করা হচ্ছে। আমার সঙ্গে কথা না বলেই অনেকে উল্টাপাল্টা নিউজ করছে। তাদের কাছে অনুরোধ অন্তত আমার সঙ্গে কথা বলে মন্তব্য শুনে খবর প্রকাশ করুক। অন্তত এই অনুরোধটা তাদের রাখা উচিত। আমরা কি তাহলে সেই আগের হ্যাপীকে পাবো না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি তো সেই আগের মানুষটিই রয়ে গেছি। পরিবর্তন শুধু হয়েছে চালচলনে। এখন আমি বোরকা পরি, করি পর্দা। এই তো বেশ ভালো আছি। ইসলামের প্রকৃত স্বাদ পাচ্ছি এখন। মিডিয়ায় আর ফিরবো না। ক্যারিয়ার নিয়েএখন আর চিন্তিত নই। বাকি জীবন এভাবেই কাটিয়ে দিতে চাই’। (সুত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন, ০২ সেপ্টেম্বর’১৫)
আচমকা নায়িকার জীবনে অস্বাভাািবক পরিবর্তন হলেও বিস্ময়ের কিছুই নেই! কার জীবনের মোড় কখন কোন দিকে ঘুরে তা বলা খুব মুশকিল। মহান আল্লাহ তায়ালা যখন যাকে ইচ্ছে হিদায়াত দান করেন, যাকে ইচ্ছে পথভ্রান্ত করেন। চলচ্চিত্রের নায়িকা নাজনিন আখতার হ্যাপি হিদায়াত পাবার আশায় কুরআনের সান্নিধ্যে গিয়েছেন, ইসলামকে জানা, বুঝা ও মানার উদ্দেশ্যে তাবলিগে গিয়েছেন, অতীত কর্মকান্ডের উপর লজ্জিত হয়ে ভুল-ভ্রান্তি ও গোনাহ মাফের জন্য তাওবাহ-ইস্তেগফার করে আল্লাহর কাছে হিদায়াত কামনা করেছেন, আল্লাহপাক তার উপর রহম করেছেন, দিয়েছেন হিদায়াত!
দাওয়াত ও তাবলিগ বিস্ময়কর প্রভাব ফেলেছে এ নায়িকার জীবনে। নায়িকা হ্যাপি এখন পরিপূর্ণ ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার চেষ্ঠা করছেন। ফরজের পাশাপাশি বেশিরভাগ নফল ইবাদতেই সময় কাটাচ্ছেন। ইসলামী জ্ঞান অর্জন, ইসলাম প্রচারের ফিকিরও করছেন তিনি। তাবলিগ জামাত থেকে ফিরে এসে তার ফেসবুক কভার ফটো, টাইমলাইন ও প্রোফাইল পিকচারের অশ্লীল ও প্রাণীযুক্ত সকল পিকগুলো রিমুভ করে দিয়েছেন। কভার ও প্রোফাইলে পবিত্র কুরআন কারীমের চিত্র সম্বলিত চিত্র দিয়েছেন। ফেসবুকে প্রতিনিয়ত কুরআন-হাদীসের বিভিন্ন বিষয়ে স্ট্যটাস উপস্থাপন করেছেন। তাকে বিতর্কিত করার জন্য কে বা কারা তার নামে ফেসবুক আইডি ও লাইক পেইজ চালু করেছে। এ ব্যপারে সবাইকে সতর্ক করে হ্যাপি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং অফিসিয়াল পেইজে (Najnin Akter Happy) গত ১০ সেপ্টেম্বর স্ট্যটাসে লেখেন,
আমি এতদিন কিছু বলিনি। অনেকে অযথা ফেসবুক ও ওয়েব সাইটে আমাকে নিয়ে অনেক আজেবাজে কথা লিখেছেন সেসবে আমি বিব্রত হয়েছি। অনেকবার আমি সাবধান করেছি এবং বলেছি, আপনারা আমার ফেইক পেইজ ও আইডি বানিয়ে সেখানে বিভ্রান্তকর পোষ্ট করবেন না। কিন্তু আপনারা কানে তোলেন নি।এবং আপনারা আমার ছবি নিয়মিত পোষ্ট করছেন, যেখানে আমার ফেসবুক ও ওয়েব সাইটে আমি নিজে কোন ছবি রাখিনি।আর ফেসবুকে আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে আপনাদের? এই মুহূর্ত থেকে যদি কারও কোন পোষ্ট দেখে মনে হয়, সেই পোষ্টের দ্বারা আমাকে অপমান করার চেষ্টা হচ্ছে ,ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বা আমার সম্মান নষ্ট হচ্ছে তাহলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনের সহায়তা নেব। কারও সাহস থাকলে করে দেখান, যাতে করে আপনাকে আইনের আওতায় এনে বাকিদের দেখাতে পারি সাইবার ক্রাইমের ফলাফল। সেইসাথে এখোনো যারা আমার ফেইক আইডি আর পেইজ চালাচ্ছেন তাদেরকেও। আমি অনুরোধ করব আপনাদের কারও চোখে যদি আমাকে নিয়ে উল্লেখিত কোন কিছু চোখে পড়েতবে সঙ্গে সঙ্গে স্ক্রীনশট রেখে আমাকে জানাবেন।তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক হলো https://www.facebook.com/najninakterh। এছাড়া অন্য কোনো নামে তার ফেসবুক আইডি নেই! অফিসিয়াল পেইজ লিঙ্ক হলো: https://www.facebook.com/NAHappyOfficial?pnref=story  লাইক সংখ্যা ৬২,৫৩৩ ।
চিত্র নায়িকার আচমকা জীবন বদল নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা ও বিদ্রুপ সন্দেহ ও বাজে ধারণা করা কোন মুমিনের জন্য উচিত নয়! মহান রাব্বুল আলামীন অতিশয় ক্ষমাশীল। তাঁর পাককালাম মজীদে বারবার এ কথা ঘোষণা দিয়েছেন। আরও বলেছেন, ‘লা-তাকনাতু মির রাহমাতিল্লাহ। আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।
বাংলা চলচ্চিত্রের আলোচিত এবং বহুল জনপ্রিয় নায়িকা শাবানার কথা কি স্মরণ আছে?। তিনিও ছিলেন চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় নায়িকা! অভিনেত্রী শাবানা দীর্ঘ ৩৪ বছর অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার পরও তিনি অভিনয় জগত থেকে বিদায় নেন। চলচ্চিত্র জগত ছাড়ার পর থেকে তিনি পরিপূর্ণ ইসলামী অনুশাসন মেনে চলেছেন আজ অবধি! তাহলে হ্যাপিকে নিয়ে এতো মাতামাতি কেনো?

বর্তমানে পর্দাশীল হ্যাপী
বর্তমানে পর্দাশীল হ্যাপী

কুরআন কারীমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা অধিকাংশ কু-ধারণা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা, কিছু কিছু ধারণা করা হলো পাপ। (সূরা হুজুরাত, আয়াত-১২)
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ যেন কাউকে ঠাট্টা, বিদ্রুপ না করে। কেননা, তারা তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। (সূরা হুজুরাত, আয়াত-১১)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,তোমরা কুধারণা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা, কুধারণা হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট মিথ্যা কথা। (-সহীহ বুখারী)
শেষ কথা, প্রিয় বোন হ্যাপি! আল্লাহপাক আপনাকে হিদায়ত দিয়েছেন, দোয়া করি পুর্ণ হিদায়াত দান করুস। আপনার এ পিরবর্তন যেন একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ অর্জনের জন্য হয়। কারণ আপনার এই পরিবর্তন অসংখ্য নারীর জীবনে সত্য, সুন্দরও মঙ্গলের বার্তা পৌছে দেবে। আপনার এ পরিবর্তন তাওবা হবে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। আপনি এখন যেভাবে ইসলামী অনুশাসন, নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, বোরকা, পর্দা, নবীর সুন্নাহ মেনে চলেছেন এট যেন আমৃত্যু পালন করে যাবেন। শয়তান যাতে বিজয় না হয় এব্যপারে আপনার সর্বোচ্চ ত্যাগ জরুরি। আপনি সিরাতে মুসতাকিম, জান্নাতের এপথে, সুন্দরের এই যাত্রায় ক্রমাগত এগিয়ে যাবেন, সে প্রত্যাশাও করছি রাহমানুর রাহীমের দরবারে।
আপনি যে পথে এসেছেন এটাই মহাসফলতা। তবে এর উপর অটল-অবিচল থাকত হবে। আপনার অতীত টেনে আনা কারো জন্য উচিত হবে না। আমরা আনতেও চাই না। যা হওয়ার হয়ে গেছে, ভবিষ্যত যাতে সুন্দর হয় এ চেষ্ঠা অব্যাহত রাখবেন। শয়তানের কুমন্ত্রণাকে পরাজিত করবেন। প্রাথমিক সফল হয়েছেন, পরকালেও মহাসাফল্য লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ।

লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট

Check Also

pregnet

গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি

আখতারুন নাহার: স্বাভাবিক অবস্থায় একটি শিশু ২৮০ দিন বা নয় মাস ১০ দিন মাতৃগর্ভে বেড়ে ...