Friday 19th April 2024
Komashisha familyAdvertisementContact । Time: দুপুর ২:২৮
Home / Today / সাধারণ শিক্ষা ও দারসে নেজামীর সমন্বিত সিলেবাস : একটি রূপরেখা

সাধারণ শিক্ষা ও দারসে নেজামীর সমন্বিত সিলেবাস : একটি রূপরেখা

দারুল উলূম দেওবন্দ
দারুল উলূম দেওবন্দ

মাওলানা মুহাম্মদ সালমান ::
দারসে নেজামী বা কওমী মাদরাসা সিলেবাস যখন প্রণীত হয়েছিল তখন সমকালীন চাহিদা ও প্রয়োজন পূরণের জন্য তা ছিল সবচেয়ে উন্নত ব্যবস্থা। তাতে তাফসীর, হাদীস ও ফিকাহর নির্ভরযোগ্য ও মৌলিক গ্রন্থাদির সাথে রাখা হয়েছিল বুদ্ধিবৃত্তিক ও অভিজ্ঞতানির্ভর বিভিন্ন শাস্ত্র। ইসলামী জ্ঞানবিদ্যা মানবজীবনের বৈষয়িক দিকগুলোতে প্রয়োগ করার জন্য এবং সমকালীন সমাজ, রাষ্ট্র ও পরিবেশের গতির সাথে ইসলামের প্রায়োগিকতা প্রমাণের মতো প্রয়োজনীয় সব বিষয় সিলেবাসভুক্ত রাখা হয়েছিল সুচিন্তিত পরিকল্পনার সাথে। এ কারণেই দারসে নেজামীর শিক্ষাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির মধ্যে অপূর্ণতা থাকতো না। কিন্তু আস্তে আস্তে অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে ঔপনিবেশিক শক্তির আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলে ইসলামী মনীষীরা দ্বীনের মৌলিক দিকগুলো রক্ষার প্রতি মনোযোগ দেন। আর আধুনিক শাস্ত্রাদি ও বিষয়সমূহের যে বিশেষায়ন ও সম্প্রসারণ ঘটে, তা থেকে ধর্মীয় শিক্ষালয়গুলো বঞ্চিত থেকে যায়। ভারতীয় উপমহাদেশসহ মুসলিম দেশগুলো স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু তারা তাদের আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল হতে পারেনি। এসব ব্যাপারে তারা প্রধানতঃ পশ্চিমা দেশগুলোর নির্দেশনার ওপর নির্ভরশীল।
আমাদের মুসলিম দেশগুলোতে শিক্ষাব্যবস্থা অন্যতম প্রধান অবহেলিত ক্ষেত্র। আমাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী ভাবধারা ও বিষয়বস্তুসমূহ যেমন উপেক্ষিত থাকে, তেমনি মুসলিম তরুণ প্রজন্মকে ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী দীক্ষা দীক্ষা দেয়ার ও গড়ে তোলার ব্যবস্থা নেই বললে চলে। অন্যদিকে আমাদের সনাতনী কওমী মাদরাসাগুলোতে চালু রয়েছে ঐতিহ্যবাহী দারসে নেজামী সিলেবাস। যাতে দ্বীনের মৌলিক বিষয়গুলো সবচেয়ে উন্নত পদ্ধতিতে শিক্ষা দেয়া হয়। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে সৃষ্টি হওয়া নতুন বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এই দারসে নেজামীতে মানবীয় জ্ঞানসমূহ এবং স্থানীয় ও সমকালীন আন্তর্জাতিক ভাষাও যথাযথভাবে নেই। অথচ আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের সব বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে নতুন কাঠামো অনুযায়ী। সেখানে কওমী মাদরাসার স্নাতকরা সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে সামগ্রিক উন্নতির ক্ষেত্রে জাতি এসব মেধাবী সন্তানের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে কওমী মাদরাসার স্নাতকরা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের বাইরে থেকে যাচ্ছে। এজন্য মুসলিম উম্মাহর এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন শিক্ষার ঐতিহ্যবাহী ধারার সাথে আধুনিক জাগতিক জ্ঞান বিদ্যার সমন্বয় সাধন করা এবং শিক্ষার্থীদেরকে ধর্মীয় জ্ঞান, দর্শন ও নৈতিকতার পাশাপাশি প্রচলিত বিষয়সমূহেও উপযুক্ত করে তোলা, যাতে তারা রাষ্ট্র ও সমাজের সব ক্ষেত্রেই কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে পারেন। আর ইসলামী ভাবধারা ও নৈতিকতার ছাপ যেনো তাদের আচরণ ও কার্যকলাপে ফুটে ওঠে। এজন্যই আমরা কওমী মাদরাসার ঐতিহ্যবাহী সিলেবাস ও জাতীয় কালিকুলামের সমন্বয়ে নতুন শিক্ষাধার চালুর প্রস্তাব করছি।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
আমাদের উদ্দেশ্য এমন আলিমদের তৈরি করা যারা দারসে নেজামীর শেষ স্তর দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার স্নাতক স্তরও সম্পন্ন করবে। তারা একই সাথে উভয় ধারার শিক্ষায় সমৃদ্ধ হবে এবং ধর্মীয় ও বৈষয়িক ক্ষেত্রে সমানভাবে সেবা করার দক্ষতা অর্জন করবে।

দারস প্রদান ব্যবস্থা
দারস প্রদান ব্যবস্থা

বৈশিষ্ট্য
♦ বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ও জাতীয় শিক্ষাবোর্ডের সিলেবাস অনুসরণ।
♦ উভয় সিলেবাসে সমন্বয় ও সমতা বিধান।
♦ ছাত্রদেরকে আরবী ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা।
♦ আরবী ও ইংরেজিতে অনর্গল কথোপকথনের যোগ্য করে তোলা।
♦ বক্তৃতা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা।
♦ আবাসিক ছাত্রদের সার্বক্ষণিক শিক্ষকের তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণে রাখা।
♦ শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্রদের তরবিয়তের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা।
♦ দাওয়াতী ও ইসলাহী প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ।
♦ অবসরে বই পড়া, খেলাধুলা, সাহিত্য চর্চা ও লেখালেখির প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।
♦ প্রত্যেক ছাত্রের কমপিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।
♦ মেধার ভিত্তিতে পুরস্কার ও বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা।

পরিচালনা
পরিচালনার জন্য থাকবে অভিজ্ঞ পরিচালনা পর্ষদ। খ্যাতনামা ওলামায়ে কেরাম, ইসলামী চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে গঠিত হবে কার্যকরি ক্ষমতাসম্পন্ন উপদেষ্টা পরিষদ, যারা একাডেমিক কার্যক্রমে সুপরামর্শ প্রদান করবেন। পাঠদান করবেন জেনারেল ও মাদরাসা উভয় বিষয়ে শিক্ষিত যোগ্য শিক্ষকমণ্ডলী।

কর্মসূচি ও রূপরেখা
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাব্যবস্থা পাঁচ স্তরে বিভক্ত হবে।
প্রথম স্তর (ইবতিদায়ী/প্রাথমিক) : ১ম শ্রেণী থেকে ৫ম এবং মক্তব থেকে তাইসীরুল মুবতাদী পর্যন্ত এতে সম্পন্ন হবে। এ স্তরের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। ৫ম শ্রেণীতে স্কুল বোর্ড’র সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ।
দ্বিতীয় স্তর (মুতাওয়াসসিতা সুফলা/নিম্ন মাধ্যমিক) : আমাদের জাতীয় শিক্ষা ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী এবং কওমী মাদরাসার মীযান থেকে হেদায়াতুন্নাহু জামাত পর্যন্ত এতে সম্পন্ন হবে। এ স্তরের মেয়াদ হবে তিন বছর। নাহবেমীর জামাতে (৭ম শ্রেণী) কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড’র (বেফাক) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ। ৮ম শ্রেণীতে (হেদায়াতুন্নাহু জামাত) স্কুল বোর্ড’র জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ।
তৃতীয় স্তর (মুতাওয়াসসিতা/মাধ্যমিক) : জাতীয় শিক্ষা ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ৯ম ও ১০ম শ্রেণী এবং কওমী মাদরাসার কাফিয়া জামাত সম্পন্ন হবে। স্কুল বোর্ড’র এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ।
চতুর্থ স্তর (সানাবিয়্যাহ/উচ্চ মাধ্যমিক) : দুই বছর মেয়াদী তৃতীয় স্তরে জাতীয় শিক্ষাক্রমের উচ্চ মাধ্যমিক স্তর ও কওমী মাদরাসার শরহে বেকায়া জামাত সম্পন্ন হবে। উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ।
পঞ্চম স্তর (ফযীলত/স্নাতক) : তিন বছর মেয়াদী পঞ্চম স্তরে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের স্নাতক পর্যায় এবং কওমী মাদরাসার হেদায়াহ, জালালাইন ও মিশকাত জামাত সম্পন্ন হবে। এ সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হবে।
ষষ্ঠ স্তর (তাকমীল) : ষষ্ঠ ও চূড়ান্ত স্তর হবে এক বছরের। এ সময়ে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন হবে। দাওরা হাদীস জামাতে কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ। দাওরায়ে হাদীসের পর ছাত্ররা মাস্টার্স/তাখাসসুস করতে পারবে।
শিক্ষকমণ্ডলী
এ ধরণের প্রতিষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত শিক্ষক হবেন তারাই যাদের কওমী মাদরাসা ও সাধারণ শিক্ষা উভয় প্রেক্ষাপট আছে। যদি এমনটি না পাওয়া যায়, তাহলে কওমী মাদরাসার মেধাবী আলিম ও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের গ্রাজুয়েটদের নির্বাচন করা হবে।

শিক্ষক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা
শিক্ষক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা

শিক্ষাব্যবস্থা
এটা হবে একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাব্যবস্থা। যা মুসিলম উম্মাহর চাহিদা পূরণ করবে। এতে প্রাথমিক স্তর থেকে স্নাতক ও গবেষণা সুবিধা পর্যন্ত সবকিছুই সম্পন্ন করা হবে। এটি সম্পূর্ণ আবাসিক শিক্ষাব্যবস্থা, যাতে সম্মানিত শিক্ষকরা ছাত্রদের সর্বস্তরে দেখাশোনা করতে পারেন।

সম্পূরক সিলেবাস ও সহপাঠ্যক্রম
সাহিত্য ও সংস্কৃতি : (ক) বক্তৃতা (বাংলা, ইংরেজি, আরবী ও উর্দূ) (খ) আবৃত্তি (বাংলা, ইংরেজি, আরবী) (গ) বিতর্ক (বাংলা, ইংরেজি, আরবী) (ঘ) হামদ-নাত (বাংলা, ইংরেজি, আরবী, উর্দূ) (ঙ) প্রবন্ধ রচনা (বাংলা, ইংরেজি, আরবী) (চ) সংলাপ (ইংরেজি, আরবী, উর্দূ) (ছ) অভিনয়, (জ) সাধারণ জ্ঞান কুইজ প্রোগ্রাম (ঝ) বিভিন্ন শিক্ষা প্রদর্শনী (ঞ) আঁকাআঁকি।
খেলাধুলা : (ক) ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব (খ) গ্রন্থাগারে অধ্যয়ন (গ) কমপিউটার প্রশিক্ষণ (ঘ) বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা (ঙ) দৈনিক এসেম্বলী (চ) বৈকালিক শরীর চর্চা ও কুচকাওয়াজ (ছ) শিক্ষাসফর।

ছাত্রদের ২৪ ঘণ্টার কর্মসূচি
♦ ফজরের নামাযের আধা ঘণ্টা পূর্বে নিদ্রা ত্যাগ এবং নামাযের পূর্ব পর্যন্ত তেলাওয়াত।
♦ যে সকল নামাযের পূর্বে সুন্নাত আছে, সেই সমস্ত নামাযের ১০ মিনিট পূর্বে আর অন্যান্য নামাযে জামাতের ৫ মিনিট পূর্বে মসজিদে যাওয়া অপরিহার্য।
♦ বাদ ফজর ‘সূরা ইয়াসিন’ তেলাওয়াত। অতঃপর ১৫ মিনিট প্রাতঃভ্রমণ।
♦ সকাল ৭.০০ পর্যন্ত ক্বেরাতের ক্লাস।
♦ সকাল ৭.৫০ থেকে ৮.০০ পর্যন্ত এসেম্বলি।
♦ সকাল ৮.০০ থেকে দুপুর ১.০০ পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস।
♦ ক্লাসের মাঝখানে সকাল ১০.২০ থেকে ১০.৪৫ পর্যন্ত বিরতি।
♦ বিরতির সময় বিনা অনুমতিতে গেটের বাইরে যাওয়া নিষেধ। যে কোন ব্যক্তিগত প্রয়োজন মাদরাসার অভ্যন্তরে পুরো করতে হবে।
♦ যোহরের নামাযের পূর্বে দুপুরের খাবার।
♦ যোহরের জামাতের ৪৫ মিনিট পর থেকে আসরের আযানের ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত হাতের লেখা। আসরের আযানের আগে এক ঘণ্টা ঘুম।
♦ আসরের নামাযের পর ১০ মিনিট তালিম, অতঃপর মাগরিব পর্যন্ত খেলাধুলা।
♦ বাদ মাগরিব ‘সূরায়ে ওয়াকিয়া’ তেলাওয়াতের পর এশার নামাযের আযান পর্যন্ত ক্লাসের পাঠ আয়ত্ত করা।
♦ এশার নামাযের পূর্বে রাতের খাবার খাওয়া।
♦ এশার পর ১০টা পর্যন্ত ক্লাসের পাঠ আয়ত্ব করা।
♦ ১০.১৫ টার মধ্যে জরুরত সেরে ঘুমানো ও বাতি, গেট বন্ধ।

শুক্রবারের আমল
♦ সকাল ৭.০০ পর্যন্ত পড়াশুনা।
♦ ৭.৩০ থেকে ৮.৩০ পর্যন্ত নাস্তা ও বিশ্রাম।
♦ ৮.৩০ থেকে ১০.০০টা পর্যন্ত পড়াশুনা। অতঃপর রুম, বারান্দা ও মাদরাসার আঙিনা পরিস্কার করে ১১.৩০ মিনিট’র ভেতর গোসল সম্পন্ন করা আবশ্যক।
♦ ১২.৩০টায় মাদরাসা মসজিদে গমন।

একাডেমিক ক্যালেন্ডার
শিক্ষাবর্ষ শুরু : শাওয়াল মাস
লিখিত ভর্তি পরীক্ষা : ১০ শাওয়াল
ভর্তির শেষ তারিখ : ১৩ শাওয়াল
ক্লাস (দারস) শুরু : ১৪ শাওয়াল

১ম টিউটোরিয়াল পরীক্ষা : ৩-৭ জিলহজ্ব
খাতা নিরীক্ষণ : ২৫ জিলহজ্ব
খাতা ক্লাসে বিতরণ : ২৭ জিলহজ্ব

১ম পার্বিক পরীক্ষা : মহররমের শেষ সপ্তাহ
খাতা নিরীক্ষণ : ১৪ সফর
খাতা ক্লাসে বিতরণ : ১৫ সফর
ফলাফল ক্লাসে বিতরণ : ১৭ সফর

২য় টিউটোরিয়াল পরীক্ষা : ৯-১৪ রবিউল আউয়াল
খাতা নিরীক্ষণ : ১৯ রবিউল আউয়াল
খাতা ক্লাসে বিতরণ : ২০ রবিউল আউয়াল

২য় পার্বিক পরীক্ষা : রবিউস সানী শেষ সপ্তাহ
খাতা নিরীক্ষণ : ১২ জমাদিউল উলা
খাতা ক্লাসে বিতরণ : ১৪ জমাদিউল উলা
ফলাফল ক্লাসে বিতরণ : ১৫ জমাদিউল উলা

৩য় টিউটোরিয়াল পরীক্ষা : ১৪-১৮ জমাদিউল উখরা
খাতা নিরীক্ষণ : ২৩ জমাদিউল উখরা
খাতা ক্লাসে বিতরণ : ২৩ জমাদিউল উখরা

৩য় পার্বিক পরীক্ষা : শাবানের ২য় সপ্তাহ
খাতা নিরীক্ষণ : ২৮ শাবান
খাতা ক্লাসে বিতরণ : ২৯ শা’বান
ফলাফল ক্লাসে বিতরণ : ২ শাবান
বার্ষিক ফলাফল ও মেধা পুরস্কার অনুষ্ঠান : ২৫ রমযান
নতুন সেশনে ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের কোচিং শুরু : ২৫ শাবান
নতুন সেশনে ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের কোচিং শেষ : ২৫ রমযান

বি.দ্র. : ০১. নির্ধারিত তারিখসমূহ চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল।
০২. ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের ২৫ শাবান থেকে ২৫ রমযান পর্যন্ত কোচিং।
০৩. সকল ক্ষেত্রে আরবী তারিখই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।

ছুটি সংক্রান্ত তথ্যাদি
ঈদুল আযহা : ১০দিন (৭ জিলহজ্ব থেকে ১৬ জিলহজ্ব)
১ম পার্বিক পরীক্ষার পর : ৭দিন
২য় পার্বিক পরীক্ষার পর : ৭দিন
৩য় পার্বিক পরীক্ষার পর : ৭দিন
ঈদুল ফিতর : ১৪দিন (২৫ রমযান থেকে ৯ শাওয়াল)
আশুরা : ১দিন
রবিউল আউয়াল : ১দিন
১৫ শাবান : ১দিন
২১ ফেব্র“য়ারি : ১দিন
২৬ মার্চ : ১দিন
২৬ ডিসেম্বর : ১দিন

প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যে কোন প্রোগ্রাম পরিবর্তন করতে পারেন। প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত ছুটি ছাড়া কোন ছাত্রকে ছুটি দেয়া হবে না। বিশেষ জরুরী পরিস্থিতিতে ছুটি মঞ্জুর করা প্রতিষ্ঠানের বিবেচনার ওপর নির্ভর করে।

সাক্ষাত ও ফোনের সময়
প্রতিদিন আসর থেকে মাগরিব, প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে মাগরিব এবং শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে মাগরিব পর্যন্ত সাক্ষাত ও ফোনে কথা বলা যাবে। নির্ধারিত সময় ছাড়া সাক্ষাত/ফোন প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘœ ঘটায়। বিধায় এ ব্যাপারে সকল অভিভাবকের সহযোগিতা প্রয়োজন।

পরীক্ষা পদ্ধতি
শিক্ষাবর্ষ তিনটি পর্বে বিভক্ত করে সর্বমোট ৬টি মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শ্রেণীতে উপস্থিতি, উপস্থাপনা এবং চরিত্রের জন্য সার্বিক পরীক্ষায় ১০ নম্বর নির্দিষ্ট থাকে।
টিউটোরিয়াল ও পার্বিক পরীক্ষার মানবণ্টন
১ম টিউটোরিয়াল + ১ম পার্বিক পরীক্ষা ২৫+৭৫=১০০
২য় টিউটোরিয়াল + ২য় পার্বিক পরীক্ষা ২৫+৭৫=১০০
৩য় টিউটোরিয়াল + ৩য় পার্বিক পরীক্ষা ২৫+৭৫=১০০
এ ছাড়া প্রত্যেক বিষয়ের শিক্ষক কর্তৃক ক্লাস টেস্ট (ঈ.ঞ) এবং মৌখিক পরীক্ষা (ঙ.ঞ) গ্রহণ করা হয়। উপরোক্ত সকল পরীক্ষার সময় মেধা তালিকা প্রণয়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি গ্রেডিং সিস্টেমে করা হয়। প্রাপ্ত গ্রেডিং একই হলে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধা তালিকা নির্ণয় করা হয়। মেধা তালিকায় প্রথম তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। পরবর্তী ক্লাসে প্রমোশনের জন্য কমপক্ষে গড়ে ৫০% নম্বর পেতে হবে।

নির্ধারিত ইউনিফর্ম
বিবরণ : পাজামা, পাঞ্জাবী, পকেট ব্যাজ এবং টুপি।
রঙ : পাজামা, পাঞ্জাবী, পকেট ব্যাজ ইত্যাদির নির্ধারিত বিশেষ রঙ থাকবে। টুপি হবে সাদা।
যে সব দ্রব্যবাদি মূল্যের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহ করা হবে-
♦ সকল শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক।
♦ খাতা, সাদা কাগজ, ডায়রী।
♦ কলম, পেন্সিল, রাবার।

হাফেজে কুরআন ছাত্রদের জন্য বিশেষ কোর্স
হাফেজে কুরআন ছাত্রদের মাধ্যমিক শ্রেণীতে ভর্তির জন্য নিম্নোক্ত কোর্সটি থাকবে। যে সব ছাত্র নুরানী অথবা প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর যে কোন স্তর থেকে হিফজ বিভাগে ভর্তি হয়ে হিফজ সমাপ্ত করেছে, তাদের জন্য এই কোর্সটি উপযুক্ত হবে। যেহেতু হিফজ বিভাগে সাধারণ শিক্ষা প্রদান করা হয় না, তাই সময়ের ব্যবধানে এ বিভাগের ছাত্ররা পূর্ববর্তী শিক্ষার অনেকাংশই ভুলে যায় অথবা তাদের স্মৃতিতে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। ভুলে যাওয়া বা সুপ্ত অবস্থায় থাকা সে শিক্ষাকে কিভাবে জাগ্রত করে সাধারণ শিক্ষার সাথে সমন্বয় করা যায় সেদিকে লক্ষ্য করে কোর্সটিকে সাজানো হয়েছে।
কোর্সের মেয়াদ : তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া ছাত্রদের ২ বছর মেয়াদী কোর্স এবং চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া ছাত্রদের জন্য ১ বছর মেয়াদী কোর্স।
এ কোর্সে পড়ানো হবে-
০১. প্রথম বর্ষ : প্রথম শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণীর সমস্ত পাঠ্যপুস্তকের নির্বাচিত অংশ।
০২. দ্বিতীয় বর্ষ : চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর সমস্ত পাঠ্যপুস্তকের নির্বাচিত অংশ এবং উর্দূ কায়দা, পহেলী, দোসরী, এসো আরবী শিখি (১ম খণ্ড)।
উল্লেখ্য, এই বিশেষ কোর্স সমাপ্তির পরে হাফেজ ছাত্ররা ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে উন্নীত হবে।

বি. দ্র. : হাফেজ ছাত্রদের হিফজ মজবুত রাখার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে-
০১. প্রতিদিন ফজরের আজানের আধা ঘণ্টা আগে উঠানো হবে তেলাওয়াত করার জন্য।
০২. প্রতিদিন ফজরের নামাযের পর থেকে নাস্তা পর্যন্ত একে অপরকে পড়া শোনানো। (কমপক্ষে ১ পারা)।
০৩. প্রতি বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর ও এশার পর থেকে ঘুমানো পর্যন্ত (১০টা) সবিনা খতম।

ভর্তির নিয়মাবলী
ভর্তির আবেদন
প্রতি আরবী বছরের ১০ শাওয়াল লিখিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ১১, ১২, ১৩ শাওয়াল ভর্তি কার্যক্রম চলবে। শাওয়াল মাসের ১৪ তারিখ থেকে দারস শুরু হবে। প্রার্থীকে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের ছাপানো নির্ধারিত আবেদনপত্রের ফরম এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে ১০০ টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করতে হবে। আবেদনপত্রটি যথাযথভাবে পূরণ করে আবার সেই অফিসেই জমা দিতে হবে।
আবেদনকারীর যোগ্যতা
ক. আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত শ্রেণীভিত্তিক বয়স অনুযায়ী হতে হবে।
খ. মেধা ও শারীরিক যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে।
গ. পূর্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ পরীক্ষার সত্যায়িত নাম্বারপত্র জমা দিতে হবে।
ঘ. চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলে আবেদনপত্রের সাথে ২ কপি পাসপোর্ট ও ১ কপি স্ট্যাম্প সাইজ সদ্য তোলা রঙ্গিন ছবি জমা দিতে হবে।
শ্রেণীভিত্তিক বয়স
শ্রেণী বয়সসীমা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে।
ভর্তি পরীক্ষা (লিখিত ও মৌখিক)
যে সমস্ত আবেদনকারীর আবেদনপত্র ত্র“টিমুক্ত বলে বিবেচিত হবে তাদেরকে লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের কুরআন শরীফ, বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর মোট ১০০ নাম্বারের পরীক্ষা নেয়া হবে। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধানুসারে নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে।
চূড়ান্ত নির্বাচন
সমস্ত পরীক্ষায় উপযুক্ত বিবেচিতদের মধ্য থেকে মেধার ক্রমানুসারে নির্দিষ্টসংখ্যক আসনে প্রার্থীদের চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত বলে ঘোষণা দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে বাছাই কমিটির সুপারিশ নিয়ে মুহতামিম সাহেবের চূড়ান্ত অনুমোদন সাপেক্ষে আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিতে হবে।
ভর্তি ও অন্যান্য ফি
ভর্তি ও মাসিক বেতন তালিকা (অনাবাসিক) প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে।
ভর্তি ও মাসিক বেতন তালিকা (আবাসিক) প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে।
একজন ছাত্রের পিতা/অভিভাবককে ভর্তি ও মাসিক নির্ধারিত ফি ছাড়াও আনুসাঙ্গিক কিছু ব্যয় (বাৎসরিক এককালীন) করতে হবে। যথা:
ক. গ্রন্থাগার ফি
খ. পরিচয়পত্র
গ. রেজাল্ট কার্ড
ঘ. বেতন কার্ড
ঙ. ডায়রী

উল্লেখ্য যে, সকল প্রকার ফি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

অপরাধ ও শাস্তি 
প্রতিষ্ঠানে সাধারণভাবে শারীরিক প্রহার নিষিদ্ধ। মারাত্মক নৈতিক অধঃপতন ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে পরামর্শ বা বারবার উপদেশের মাধ্যমে সুপথে আনার চেষ্টা করা হবে। কোনোভাবেই চেষ্টা সফল না হলে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ছাত্রের স্বার্থে তাকে বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র দেয়া হবে।
কোন ছাত্র যদি পরপর তিনটি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয় অথবা শতকরা ৫০ ভাগের কম নম্বর পেয়ে কৃতকার্য হয়, তবে তাকে পরবর্তী শিক্ষা বছরে পুনরায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেয়া হবে না।

হাটহাজারী মাদরাসা
হাটহাজারী মাদরাসা

প্রস্তাবনা
০১. দেশের প্রতিটি অঞ্চলে পর্যায়ক্রমে এ সিলেবাসের আওতায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা।
০২. কেন্দ্রীয় বোর্ড গঠন করে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে এক নীতিমালার আওতায় নিয়ে আসা।
০৩. বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে শিক্ষা বিনিময় চুক্তি সম্পাদন করা। যার আওতায় আমাদের স্নাতক ডিগ্রিধারী ঐসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি উচ্চ শিক্ষার সুযোগ লাভ করে।
০৪. নারীদের ইসলাম শিক্ষা প্রসারে, প্রস্তাবিত সিলেবাসের আওতায় মহিলা শাখা স্থাপন করা।
দেশের ইসলামী ও শিক্ষার বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ভিসি সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি ও অন্যান্য শিক্ষাবিদদের আমন্ত্রণ করে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা এবং মতবিনিময় করা।

Check Also

11377093_768919959891693_8552450127626177621_n

Can anyone become a Muslim?

Yes anyone can. There are two declarations, which are necessary: 1- To bear witness that ...