● হাসন রাজা নাকি প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরতেন। কোথাও কোনো নারীকে পছন্দ হলে তার গলা থেকে একটি হার খুলে পরিয়ে দিতেন। অনেক নারী বর্তমানের এংগেজম্যান্টের আংটির ন্যায় সেই হারকে ধারণ করে হাসন রাজার স্ত্রী মনে করে দিনাতিপাত করেছে বছরের পর বছর। হাসন রাজা কারো কারো খোঁজ নিয়েছিলেন, আবার অনেকে নারী আজীবন রাজরানী হওয়ার স্বপ্নই শুধু দেখেছেন। রাজবাড়ি ওঠার তৌফিক হয় নি।
হাসন রাজার কাহিনী নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, আসলে এরকমই আমাদের সমাজ। আমাদের ঐতিহ্য। গরীব ও অসহায় মানুষেরা স্বপ্ন বুনে সামর্থবানদের commitment এ। উপরের মানুষের বেখেয়ালে করা আশ্বাসের উপর বিশ্বাস করে জীবনভর অপেক্ষা করে আলো’র আগমনের।
●দেখা যায়, অনেক উচ্চশ্রেণীর মানুষ মনের খেয়ালে পরিচিত/আত্মীয় গরীব ফ্যামিলির মেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকে “ছেলের বউ” বলে ডাকেন। এতে একদিকে মেয়ের ফ্যামিলি স্বপ্ন দেখে “ধনীর বউ’’ হবে, অন্যদিকে সমাজে প্রতিষ্ঠা পায়, সম্ভাব্য ভবিষ্যত সম্পর্কের। পরবর্তীতে সেই ফ্যামিলিতে বিয়ে না হওয়ার কারণে মেয়ে এবং পরিবারকে নিয়ে সমাজে অনেক কিছু রটে যায়। পরিবারটি মুখোমুখি নানা রকম অনাকাঙ্খিত মানহানির।
▪ উচ্চবিত্তরা হয়তো বলবে, “আমরা তো তখন ঢং করতাম। এটা কি সম্ভব!”
● দেখা যায়, অনেক প্রবাসী দেশে গিয়ে গরীব মানুষকে কথার ফাঁকে বিভিন্ন আশ্বাস দেন। মুখ রক্ষার্থে বলে আসেন, “তোমার ছেলের বিদেশের ব্যাপারে দেখবো”। কিন্তু বেচারা গরীব! বছরের পর বছর অপেক্ষা করে, বিদেশ থেকে কোনো ডাক আসে কি না। অথচ, আপনি দিব্যি ভুলে গেছেন।
▪ আপনাকে জিজ্ঞেস করলে হয়তো হু হু করে উঠবেন। বলবেন, ওটা ছিল তো কথার কথা।
☆প্লিজ। গরীব মানুষকে অলিক স্বপ্ন দেখাইয়েন না। কারো স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা না করতে পারলে, অন্তত তার নিজের সীমিত পরিসরের স্বপ্নকে ভেঙ্গে দিবেন না।
লেখক : ফাহিম বদরুল হাসান, ফ্রান্স প্রতিনিধি