বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, সমাজের দরিদ্র অসহায় মানুষগুলো সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে ঋণ গ্রহণের সুযোগ পেলে ঋণ খেলাপি হয় না। তারা ঋণ পরিশোধে সব সময় আন্তরিক থাকে।
আজ রোববার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে (বিবিটিএ) ‘সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আবাসন সমস্যা দূরীকরণে গৃহায়ণ তহবিল’ বিষয়ক এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্য দেন তিনি।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ। এতে অন্যান্যের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলম, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রহিমসহ বিভিন্ন এনজিওর প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেন, গৃহায়ণ তহবিলের ঋণের আদায় হার প্রায় ৯৩ শতাংশ। বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সার্বিক ঋণ ব্যবস্থাপনা বিবেচনায় এমনকি ক্ষুদ্র ঋণের আদায়ের তুলনায় জামানত বিহীন ঋণের আদায় পরিস্থিতি অবশ্যই সন্তোষজনক। তাই, আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, সমাজের দরিদ্র অসহায় মানুষগুলো সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে ঋণ গ্রহণের সুযোগ পেলে ঋণ খেলাপি হয় না।
তিনি বলেন, গৃহায়ণ তহবিল প্রতিষ্ঠার পর সতেরোটি বছর অতিবাহিত হয়েছে। এ সময়ে সরকারের কাছ থেকে গৃহায়ণ তহবিল ১৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা পেয়েছে, যা সফল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ৩৪৮ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এ তহবিলের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৬৩ হাজারের বেশি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে ৩ লাখ ১৬ হাজার মানুষের আশ্রায়নের ব্যবস্থা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১১ কোটি টাকা অনুদান হিসাবে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রদান করা হয়েছে।
গভর্নর আরও বলেন, বর্তমানে গৃহায়ণ তহবিলের ঋণ কার্যক্রম শুধু দরিদ্র মানুষের জন্য গৃহ নির্মাণেই সীমিত নেই। বিভিন্ন শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের আবাসনের জন্য হোস্টেল বা ডরমিটরি নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়েছে।
২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব বিনির্মাণে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ (এসডিজি) অর্জনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে তা অর্জনেও আমরা সক্ষম হব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ তহবিলও নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ও ভিশন নিয়ে এগিয়ে যাবে বলে আমার প্রত্যাশা রয়েছে।’
কর্মশালার শুরুতে গৃহনির্মাণ ঋণ বিতরণে এনজিওগুলোর সুবিধা, অসুবিধা ও পরামর্শ নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকার একশটি এনজিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ৪০ জন উপকারভোগী এ কর্মশালায় অংশ নেন।