Sunday 28th April 2024
Komashisha familyAdvertisementContact । Time: বিকাল ৪:২৪
Home / কর্মসংস্থান / যা হবার তা হচ্ছে না কেন ?

যা হবার তা হচ্ছে না কেন ?

Komashisha-Logo-01
কওমি মাদরাসায় লেখাপড়ার অন্যতম উদ্দেশ্য কুরআন হাদিসের জ্ঞান অর্জন। জানার সাথে সাথে মানা তথা আমল করা। সমাজে সেগুলো বাস্তবায়ন করা। অনাচার-অবিচার দূর করার জন্যে লড়াই করা।
দুঃখজনক হলে ও সত্য, হাজার হাজার মাদরাসা এবং লাখ লাখ কওমি পড়ুয়ার জন্ম হচ্ছে; কিন্তু সেই অনুপাতে কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে কি? উত্তর দু’ভাবেই দেয়া যায় ‘হা এবং না’ । একেবারেই যে হচ্ছে না তা যেমন বলা যাবে না, তেমনি শতভাগ হচ্ছে তাও বলা যাবে না । কেন এমন হচ্ছে একটু জেনে নেই।
১) কওমি মাদরাসা চাঁদা নির্ভর। জনতার চাঁদায় চলে কওমি মাদরাসা। কওমি পড়ুয়ারাও অনেকটা চাঁদা আর খতমের উপর নির্ভরশীল৷ কোন প্রতিবাদ প্রতিরোধে গেলেই এর বাস্তবতা দেখতে পাওয়া যায়। তখন দানকারীগণকে প্রায়ই বলতে শোনা যায়, আরে ! ওরা আমাদের খায়, আমাদের পরে আবার আমাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে।
দান সম্পর্কে থানাবী (রহ) এর বক্তব্য
কেউ যদি স্বেচ্ছায় মাদরাসায় দান করে অবশ্যই হালাল দান গ্রহণ করা হবে। জোর-জবরদস্তি করে চাঁদা আদায় হারাম। তিনি আরো বলেন, জনতার বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা উত্তোলন উলামাদের শান-মানের পরিপন্থী । এবং ছাত্রদেরকেও চাঁদার জন্য কারো কাছে পাঠাতে তিনি নিষেধ করেছেন। এগুলোকে ভিক্ষাবৃত্তি বলতেও তিনি পিছপা হন নি।
তিনি আরো বলেছেন, জনতার কাছ থেকে চাঁদা আদায় না করলে এতো এতো মাদরাসা চলবে কিভাবে ? তারপর বলেন, কওমি মাদরাসা চলবে তাকওয়ার ভিত্তিতে। কারো দয়া ও করুণায় নয়। কারণ আলিম-ওলামার কাজ হল দীনের প্রচার-প্রসার। চাঁদা বা সহযোগিতা করার দায়িত্ব বাকি সব মুসলমানের। তারা যদি তাদের দায়িত্ব পালন করে না আপনি আপনার সাধ্যের ভেতরে দীনী কাজ চালিয়ে যান। আপনার দ্বারা পাঞ্জম পর্যন্ত পরিচালনা সম্ভব, আপনি তাই করেন। আপনি টাইটেলের চিন্তা করবেন না। এবং আল্লাহকে বলেন, আমার দ্বারা যা সম্ভব ছিল তা করেছি। তারচে’ বেশির জন্য অনেক পুঁজির প্রয়োজন ছিল। সে পুঁজি আমাদের কাছে ছিল না। যাদের কাছে ছিল তারা দান করে নি।
তিনি আরো বলেন, অধিকাংশ চাঁদা কালেকশনকারীদের চরিত্র খারাপ হয়ে যায় এবং ইলমের প্রভাব দূর হয়ে যায়। একারণেই ধনীরা তাদের সন্তানদেরকে মাদরাসায় পড়ান না। কেউ কেউ তো বলে দেন, আমরা আমাদের সন্তানদেরকে গর্দভ বানাতে চাই না। যদিও তাদের এ ওযর যথেষ্ট নয়; কিন্তু কিছুটা ভিত্তি তো রাখে ।
থানাবী (রাহ)-এর কথা থেকে কি বুঝলাম :
ক) খুশি মনে দান করলে গ্রহণ করা যাবে।
খ) চাঁদার জন্যে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাওয়া চলবে না।
গ) আলেমদের কাজ দীনের প্রচার-প্রসার আর সাধারণের কাজ আলেমদের ব্যয়ভার।
ঘ) সাধারণ যদি আলেমদের ব্যয়ভার বহন করে না তখন আলেম সাধ্যের ভেতরে দীনী কাজ চালিয়ে যাওয়া। বাকির জন্য আল্লাহর কাছে অভিযোগ দায়ের করে রাখা।
ঙ) ধনীর সন্তানদের ইলমেদ্বীন শিখানো জরুরি। ওদের যত বেশি কাজে লাগানো যাবে ততই কল্যাণ।
এবার বলুন আমাদের সমাজের ধনীরা মাদরাসায় দানের ব্যাপারে কতটুকু ইচ্ছুক ? ইচ্ছুক না বললে অত্যুক্তি হবে না। তাহলে আসুন থানবী (রহ) কি বলেন জেনে নেই, “নিজে কাজ করে খাও অথবা না খেয়ে ঘরের কোণে মারা যাও তবুও ওদের কাছে হাত পেত না।”
এতে কি প্রমাণ হয় না কর্ম শিখা, কর্ম শিখানো, স্বনির্ভরতা অর্জনের চেষ্টা করা কত জরুরি? যদিও সবার আগে তাকওয়ার গুণ অর্জন করা মহাজরুরি।
সমাজের ক্ষমতাবানরা দীন থেকে দূরে থাকা এবং তাদের সন্তানদেরকে দীনের জন্য কুরবান না করা ও সর্বজনীন সাফল্যের পথে অন্যতম এক বাধা। এরচে’ও বড় বাধা উলামায়ে কেরামদের স্বনির্ভর অর্থনীতির কোনো রাস্তা সামনে না থাকা। আর এই পরনির্ভরতা দক্ষ আলিম তৈরির পথে পদে পদে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
লেখক : মুহাদ্দিস ও কলামিস্ট

Check Also

madrasa student -1

কমাশিসার ২১ দফা (৫নং দফা)

মানসিক ও শারীরিক টর্চারমুক্ত সৌহার্দপূর্ণ পাঠদান ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ইসলামী তাহযিব-তামাদ্দুনে  আগ্রহী করে গড়ে তুলুন। ...