Sunday 28th April 2024
Komashisha familyAdvertisementContact । Time: বিকাল ৩:০২
Home / ঘর-সংসার / একজন মডার্ন নারী এবং তার মা ভক্ত স্বামী

একজন মডার্ন নারী এবং তার মা ভক্ত স্বামী

ইসলামে নারী

এম এ হাসান ::

ঘটনাটা শুনে মনে বড় কষ্ট পেলাম। আছরের নামাজের পর কয়েক বন্ধু মিলে চা খাচ্ছিলাম। গল্প হচ্ছিল সমান তালেই। এরমধ্যে আরো দুজন এসে শামিল হলেন। আলোচনার মোড় এদিক ওদিক থেকে চলে গেলো একজন সরকারি চাকুরীজীবির ব্যাক্তিগত ব্যাপারে। উপস্থিত সবাই উনাকে চিনি। বড়ই মিশুক সহজ সরল মানুষ। নামাজও পড়েন নিয়মিত।
পরিবার নিয়েই থাকেন সরকারি কোয়ার্টারে। পরিবারের সদস্য বলতে উনার মা, স্ত্রী, এক সন্তান এবং উনি। ছোট্ট পরিবার। কিন্তু উনার স্ত্রীর আচার আচরণে এই শিক্ষিত মানুষটি একেবারে নাজেহাল।
উগ্র আচার আচরণ, স্বাধীন মুক্ত চালচলন। আধুনিক হাল ফ্যাশনের উন্মুক্ত পোশাকের অভ্যস্ত একজন স্বাধীনচেতা নারী। নামাজ, হিজাব এসবের ধারে কাছে ও নাই। সরকারি টাকার লম্বা বেতনের রুজিতে ছোট্ট এই পরিবার সুখ শান্তিতে ভরে থাকার কথা থাকলে ও এখানে এর বিপরীত হালচাল! অপচয়, অপব্যয়, আর অন্যায় আবদার মিটাতেই স্বামী নামক পুরুষটির বেহাল দশা।
কারণ বিয়ে করেছেন বড়লোকের আদরের সুন্দরী সুশিলা নারী।
স্বামী এবং শাশুড়ি চান তাদের বউ নামাজ পড়ুক, পর্দায় থাকুক, আদর্শ চরিত্রবান গৃহিণীর মত ঘরের ভেতরেই চলাফেরা করুক। পরপুরুষের সাথে মাখামাখি আর যখন তখন মার্কেটিং এর নামে বডি শো থেকে বিরত থাকুক। কিন্তু কে মানে কার কথা! তিনি যেই পরিবারে গড়ে উঠেছেন সেই পরিবার তাকে এর বিপরীতে চলতে ফিরতে অভ্যস্ত করে বড় করে ছেড়ে দিয়েছে। যে শিক্ষা এবং সংস্কৃতিতে সে অভ্যস্ত তার বিপরীতে চলা কিভাবে সম্ভব?
তাই স্বামীর সাথে হামেশাই ঝগড়া, বিবাদ আর মনকষাকষি নিত্য দিনের নিয়মিত রুটিন।
স্বামী অফিসে গেলে আড্ডা ইয়ার্কি আর মার্কেটিং এর একটা সুযোগ থাকলেও এখানে শাশুড়ি এক বাধার প্রাচীর হয়ে পাহারাদারের মত চোখে চোখে রাখেন সবসময়। তাই এই বাধার প্রাচীর দুর করতে উঠেপড়ে স্বামীর কান ভারি করা শুরু করলেন। তোমার মা এই করে সেই করে। ঘরের পরিবেশ নষ্ট করে! অভিযোগ আর নালিশ হরদম হররোজ।
ছেলে তো জানে তার জন্মদাত্রী জননী কেমন। তাই বউয়ের এইসব ঘেনরঘেনরে পাত্তা দেয়না। আসল রোগ যে কোথায় সেটা তো তার জানা।
মুক্ত বিহংগ আর বাধহীন উন্মুক্ত উড়ন্ত পাখি যে এই মায়ের কারনে খাচায় বন্ধী তা স্বামী বেচারা বুজতে পারলে ও সুন্দরী স্ত্রীকে তো আর তা বলা যায়না!
অবশেষে আল্টিমেটাম! তোমার মাকে সরাও না হয় আমাকে সরাও! আমাকে চাইলে মাকে সরিয়ে দাও! আর মাকে চাইলে আমার পথে আমি চললাম!
তোমার ছেলেকে ও তুমি রাখো। আমি আর এই বন্দী খাচায় থাকবোনা। ঝামেলা ও রাখবো না।
শ্যাম রাখি না কোল রাখি এ দুটানায় পড়ার মত লোক এই মানুষটি নয়। যা বলবে ঝটপট বলবে। তিনি মায়ের পক্ষই নিলেন। তার এই মানুষ হিসাবে গড়ে উঠার পেছনে একমাত্র অবদান তার মা। সুতরাং মায়ের এই বৃদ্ধ বয়সে, অসুস্থ হালতে অন্য কোথাও নয় আমার ঘরই হবে আমার মায়ের উপযুক্ত স্হান। এখান থেকে কিছু সময়ের জন্য হলেও আমার মাকে আমি চলে যেতে দেবনা। তুমি ও থাকো আমার মা ও থাকুক। অনেক বুজালেন। নসীহত করলেন। হুমকি ধমকি দিলেন। কিছুতেই কাজ হলোনা।
বউ থাকবেনা। চলেই গেলো অবশেষে। সাত আট বছরের একটি ফুটফুটে ছেলেকেও রেখে গেলো! কারণ উন্মুক্ত উড়ালপথে এও যে এক বাধা!
যাওয়ার বেলায় স্বামী বেচারার নামে একটা ডিভোর্স লেটার দিয়ে গেলো! মুক্ত বিহংগ হয়ে গেলো সে আজ থেকে। যেখানে স্বামী থাকবেনা বাধা দিতে। শাশুড়ি থাকবেনা পাহারা দিতে। সন্তান থাকবেনা ডিস্টার্ব করতে।
যাই হোক। আমি দোয়া করি এই মানুষটার জন্য। যে সুন্দরী স্ত্রীকে না আটকিয়ে মায়ের শীতল আচলকেই বেছে নিলো।
মাকে বৃদ্ধাশ্রম অথবা অন্য কোথাও না পাঠিয়ে নিজের সাথে রাখার এই বিনিময় আল্লাহ অবশ্যই দুনিয়া এবং আখেরাতে তাকে দিবেন। বউয়ের দয়া নয় মায়ের দোয়াই যে সন্তানের ইহ পরকালিন উন্নতির পথের পাথেয় এটা আজকের অনেক শিক্ষিত ছেলে না বুজলে ও কিছু মানুষ সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে ও যে ভুলে নাই এ জন্য আল্লাহ পাকের শুকরিয়া।
কারণ মায়ের পদতলে যে সন্তানের জান্নাত।
আল্লাহ আমার মা এবং বাবার হায়াত বাড়িয়ে দিন। এবং তাদের খেদমত করার আরো তাওফিক দান করুন।
এবং যারা আমার সাথে আমীন বলবে তাদের মা বাবাকে ও হায়াতে তাইয়্যিবা দান করুন। আমীন।

Check Also

pregnet

গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি

আখতারুন নাহার: স্বাভাবিক অবস্থায় একটি শিশু ২৮০ দিন বা নয় মাস ১০ দিন মাতৃগর্ভে বেড়ে ...