আনওয়ার হোসাইন ::
ইয়াহিয়া ইবন আইয়ূব খাযাঈ (রহঃ) সূত্রে হাকিম (রহঃ) বর্ণনা করেছেন, (সংক্ষেপে) উমর (রাঃ) এর খিলাফাত আমলে এক অতি ইবাদাতকারী যুবক ছিল। সে সব সময় মাসজিদে পড়ে থাকতো। হযরত উমর (রাঃ) তাকে খুব মুহাব্বত করতেন।
এই যুবক ইশার সালাত পড়ে তার বৃদ্ধ পিতার খেদমতের জন্য চলে যেত। কিন্তু তার যাওয়ার পথে এক যুবতীর ঘর ছিলো এবং ওই যুবতী যুবকের উপর আসক্ত হয়ে পড়েছিলো। সে ঐ যুবককে ফুসলাতে থাকে। একদিন শেষ পর্যন্ত যুবকটি তার সাথে চলতে থাকে। যখনই যুবক ওই যুবতীর ঘরের কাছে এল তখন আল্লাহর ধ্যান চলে এল এবং কুরআনের এই আয়াত পড়তে পড়তে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। “যারা তাক্বওয়ার অধিকারী হয়, তাদেরকে শয়তান যখন কুমন্ত্রণা দেয়, তখন তারা আত্মসচেতন হয় এবং তৎক্ষণাৎ তাদের চোখ খুলে যায়”। (সূরা আর আরাফঃ ২০১)
এরপর ওই যুবতী আর তার বাদী মিলে যুবকটিকে তার ঘরের সামনে ফেলে রেখে আসে আর তাদের ঘরে টোকা দিয়ে কেটে পড়ে। যুবকটির নিজের পরিবারের লোকেরা ওই অবস্থায় তাকে ধরে ঘরে নিয়ে তুলে। মাঝরাতে তার যখন জ্ঞান ফিরে তখন তাকে ঘটনা জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি ঘটনা খুলে বলেন। তার বাবা বললেন, তুমি কোন আয়াত পড়েছিলে? তখন যুবকটি এ আয়াত আবার পড়ে এবং আবারো চেতনা হারিয়ে ফেলে। এরপর যুবকটিকে নাড়িয়ে দেখা হলে দেখা যায় যে যুবকটি মৃত্যু মুখে পতিত হয়েছে। এরপর রাতেই তার গোসল ও দাফনের
কাজ শেষ করা হল। পরের দিন উমর (রাঃ) এ ঘটনা শুনে তার পিতাকে বললেন আমাকে তার কবরের কাছে নিয়ে চল। অতএব, হযরত উমর (রাঃ) ও তার সংগীরা কবরের কাছে গেলেন। হযরত উমর (রাঃ) যুবকটিকে ডেকে বললেনঃ “হে অমুক, যে ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে তার জন্য রয়েছে দুটি জান্নাত।” (সূরা আর রহমান:৪৬)
তখন ওই যুবকটি কবরের ভিতর থেকে জবাব দিল এবং দুবার বললো, “হে উমার! আমার রব আমাকে জান্নাতের দুটি উদ্যান দিয়েছেন।”
সূত্রঃ কানযুল উম্মাল এ (১/২৬৭) এবং তাফসীর ইবনে কাসীরে (২/২৭৯) ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। ইমাম বায়হাকী (রাহ) হাসান সূত্রে এটি বর্ণনা করেছেন। (কানযঃ ১/২৬৭) ।
Check Also
জালাল উদ্দীন রুমীর কবিতা : আনন্দিতের গান
ভাষান্তর : মুসা আল হাফিজ ধরার ভূমি কেবল চুমি যান রাজা যাতে অজর সব মনোহর ...