তামিম বিন হামমাদ ::
যে বয়সে একটি শিশুর বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, সমবয়সী সহপাঠী-বন্ধুদের সঙ্গে খেলার কথা, সে সময় তারা দু’মুঠো খাবার, এক ফালি কাপড় আর সামান্য মাথা গোঁজার স্থানের বিনিময়ে অন্যের বাসায় কাজ করে। ক্ষেত্রবিশেষ তাদের কাজের বিনিময়ে কোনো পারিশ্রমিক প্রদান করা হয় না। এদের কোনো কর্মঘণ্টা নির্ধারিত নেই ৷ ভোর থেকে গভীর রাত অবধি তারা কাজ করে ৷ কাজের ক্ষেত্রে সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতি হলেই শুরু হয় অকথ্য ভাষায় গালি ও শারীরিক নির্যাতন ৷ মালিক অথবা গৃহকর্ত্রীর কোনো নির্দেশ লঙ্ঘিত হলে তো কোনো কথাই নেই। পাশবিক নির্যাতন চলতে থাকে তাদের ওপর। শিশু গৃহকর্মীকে গরম চামচ বা খুন্তি দিয়ে সেঁকা দেওয়া, বেলনা দিয়ে পেটানো, গরম পানি ঢেলে দেওয়া, বাথরুমে আটকে রাখার খবর প্রায়ই পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এমনকি কখনও তারা বাড়ি ফিরে লাশ হয়ে ৷ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, সচিব, এমপি, পুলিশ, সামরিক কর্মকর্তা, ডাক্তার, শিক্ষক, ব্যবসায়ী এবং খেলোয়ারের বাড়িতেও ঘটছে গৃহকর্মী নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনা ৷
অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের সমাজের অনেকেই গৃহকর্মীদের দাস-দাসী মনে করে। মনে রাখতে হবে, গৃহকর্মীরা দাস-দাসী নয় ৷ ইসলাম চিরতরে দাসপ্রথার বিলুপ্ত সাধন করেছে। গৃহকর্মীরা আমাদের মতোই স্বাধীন মানুষ ৷ সব মানবিক অধিকারে সমান অংশীদার৷
ইসলাম বলেছে, ‘তোমরা নিজেরা যা খাবে-পরবে, কাজের লোকদেরও তাই খেতে-পরতে দেবে’ তাদের হক ও প্রাপ্যের ব্যাপারে অবহেলাকে জুলুম বলা হয়েছে ৷
ক্ষমা করা মুত্তাকির পরিচয় ৷ ক্ষমাশীলদের জীবনকল্যাণ, বরকত ও পুণ্যতায় ভরে ওঠে ৷ ক্ষমা দুনিয়া-আখিরাতে মুক্তির চাবিকাঠি ৷
গৃহপরিচারিকা নির্যাতন এড়াতে কাজের লোকদের ত্রুটি-বিচ্যুতির ব্যাপারে শাস্তির পরিবর্তে ক্ষমার দিককে প্রাধান্য দেওয়া ৷