■ ফারাও সম্রাটকে যখন বলা হল, তোমার সাম্রাজ্যে এমন একজনের জন্ম হতে যাচ্ছে, যে তোমার রাজত্বকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেবে। সাথে সাথে ফেরাউন সিদ্ধান্ত নিল, এবছর থেকে যত ছেলে-সন্তান জন্ম নেবে তাদেরকে হত্যা করা হবে। তার সিদ্ধান্ত মত যথারীতি শিশুহত্যা চলছিল। কিন্তু ফেরাউনের পতনকারী মুসা আ.কে আল্লাহ তা’আলা ফেরাউনের ঘরেই প্রতিপালন করালেন। মুসা-ফেরাউনের ঘটনা বা ইতিহাস সর্বজ্ঞাত, বিধায় বেশি বলাটা কালক্ষেপণ।
এরকম শত-সহস্র ঘটনা ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করে রেখেছে। দেখা যায়, তারা আল্লাহর নূরকে ফুৎকার দিয়ে নেভাতে যেয়ে আগুনের স্ফুলিঙ্গ বহুগুণে ছড়িয়ে পড়েছিল।
■ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা থেকে ধর্মকে বিচ্ছিন্ন করে অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি জাতিতে পরিণত করতে একটি গোষ্ঠী বেশ ক’বছর থেকে মাস্টারপ্ল্যান করে যাচ্ছে। তাই ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে কেউ যাতে রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ে না যেতে পারে, তারা সবদিকের সম্ভাব্য ছিদ্র বন্ধ করতে মরিয়া।
● “রাষ্ট্রকে ধর্মহীন করতে হলে প্রথমে শিক্ষাকে ধর্মহীন করতে হবে”-এটা তারা খুব ভাল করে জানে। তাই তারা সর্বদিক থেকে ছিদ এজন্য সর্বপ্রথম তারা প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিলেবাসে হাত দিল। পাঠ্যসূচির বইগুলোকে এমনভাবে সাজিয়েছে যে, দশম শ্রেণিতে পৌঁছে একটি স্টুডেন্ট’র মস্তিষ্কে এই বিশ্বাস অংকুরিত হবে- ‘ধর্ম হচ্ছে নিছক কিছু বিশ্বাসের নাম, কিছু অনুভূতির সমষ্টি। ধর্ম এক জিনিস আর রাষ্ট্র অন্য জিনিস, ধর্মের কথা উপাসনালয়ে থাকবে আর রাষ্ট্র চলবে জনগণের কথায়’ ইত্যাদি।
অতঃপর মাদরাসা থেকে যাতে কেউ রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ে না পৌঁছতে পারে, শুরু হল একের পর এক আইন, অধ্যাদেশ। মাদরাসা ছাত্রদেরকে টার্গেট করেই মূলতঃ ফেরাউনের উত্তরসূরীরা ঢাবি সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন করলো, যাদের যে সব বিষয়ে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে 200 মার্ক নেই, তারা সেই সব বিষয়ে ভর্তি হতে পারবে না। এই নিকৃষ্ট আইনের মাধ্যমে ইংরেজি, অর্থনীতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মাদরাসা ছাত্রদের অযোগ্য বিবেচিত হল। এরপর বলা হল, কামিল পাশ করে কেউ বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
শেষমেশ আইনের মারপ্যাঁচ গলিয়ে যখন কিছু ছাত্র জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাল সাবজেক্টে ভর্তি হতে চলেছে তখন শুরু করলো, technical চাতুরী। অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে পরিলক্ষিত হল যে, মাদরাসার ছাত্রদেরকে অনলাইনে ভর্তিফরমে সাবজেক্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে ”ইসলামের ইতিহাস” এবং “ইসলামি স্টাডিজ” ছাড়া অন্যান্য সাবজেক্ট চয়েজের সুযোগ দেয়া হচ্ছিল না।
●এরকম আরো কত যে হীন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে এবং হবে, তা আল্লাহ্ই মালুম। তবে রাষ্ট্র থেকে ইসলামের “কালো ছায়া” মুছে দিয়ে ধর্মহীন রাষ্ট্র বানানোর জন্য যাদের নাহি নিদ, তারা ইতিহাস বিষয়ে অন্ধ, বধির; চিন্তা-চেতনায় প্রতিবন্ধী। তা না হলে তারা জানতো, “আলো”কে কখনো ‘অন্ধকার’ দিয়ে ঢাকা যায় না। কখন তাদের উদরে মুসার জন্ম হবে-এটা তাদের কল্পনারও বাহিরে।
☆একটি গৃহকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করতে সর্বদিক থেকে আবদ্ধ করতে হয়; কিন্তু একটি অন্ধকার গৃহকে আলোকিত করতে টিনের চালে একটি ছোট্ট ছিদ্রই যথেষ্ট।
লেখক : অনলাইনি এক্টিভিটস