আবুল কালাম আজাদ
আল্লাহ মুনাফিকদের থেকে আমাদের হেফাজত করুন।
প্রায় ৬ মাস আগের ঘটনা। দুইটি ইসলামি দলের দুইজন কর্মী একটি বাজারের মধ্যখানে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে কথা বলছিল। আমি ছিলাম তাদের থেকে প্রায় ১০ ফুট দূরে। তারা কি একটি বিষয় নিয়ে কথা বলাবলির একপর্যায়ে তর্কে লিপ্ত হয়ে যায় এবং তাদের কথার আওয়াজও একটু বড় হয়ে যায়। আমি তখন তাদের দিকে একটু লক্ষ্য করলাম। তাদের আওয়াজ শুনে পাশ থেকে আরেকজন বড় ভাই তাদের পাশে আসলেন। তিনি যখন তাদের পাশে আসলেন তখন আমিও তাদেরকে একটু ফলো করলাম। দেখলাম, সেই ভাই এসেই একজনকে আক্রমণ করে কথা বলছেন, তাকে হুমকি দিচ্ছেন, ভয় দেখাচ্ছেন। এসব দেখে আমি পাশে গিয়ে তিন জনকেই জিজ্ঞাসা করলাম, কি হয়েছে এখানে? আপনারা এতো জোরে কথা বলছেন কেনো? তখনও সেই বড়ভাইকে দেখলাম খুবই রাগাম্বিত অবস্থায় একজনকে ধমক দিচ্ছেন। তখন আমি একটু বড় আওয়াজে বললাম, আরে ভাই! একটু থামেন না। আগে বলেন তো এখানে কি হয়েছে? দেখলাম, প্রথমে তারা দুইজন ঝগড়া করলো, আর পরে এসে আপনিও একজনের পক্ষ নিয়ে নিলেন! আপনি কি কোনো খোঁজ নিছেন, তারা কি জন্য ঝগড়া করছে? তিনি তখন থামলেন। তখন তাদেরকে আবার প্রশ্ন করলাম, কি নিয়ে তোমরা দুইজনে তর্ক করছো। তারা আমতা আমতা করে কি বলল, আমি কিছুই বুঝতে পারি নি। কারণ, তারা প্রথমে স্বাভাবিকভাবেই কথা বলছিল। শেষপর্যায়ে তর্কে জড়িয়ে যাওয়ায় তারা দুইজনই লজ্জিত। তাদের দিকে তাকালেই বিষয়টা বুঝা যাচ্ছে। পরে অবশ্য আমি উভয়কে দু’এক কথা বলে কোলাকুলি করালাম।
যাইহোক, প্রশ্ন সেটা না। দুইজনের কথা কাটাকাটি হতে পারে। তর্ক-বিতর্কও হতে পারে। কিন্তু আফসোসের বিষয়, ৩য় যে বড় ভাই হঠাৎ করে এসে একটি পক্ষ নিয়ে আরেকজনকে যে হুমকি-ধমকি দিতে লাগলেন, তা কতটুকু ন্যায়সঙ্গত হল? সবচেয়ে বড়কথা, সেই ভাই একটি ইসলামি দলের ঝাণ্ডাকে উচু করতে দিন রাত পরিশ্রম করেন। কথার মধ্যে খৈই ফোটান। দিনরাত শুধু সামাজিকতা আর ইসলাম প্রচার নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। মুখের কথা শুনলে মনে হয় সুফী সাব। তিনির অবশ্য অনেক বড় স্বপ্ন আছে। থাকাটাই স্বাভাবিক। থাকতেই পারে। কিন্তু মানুষকে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে স্বপ্নকে কোনো দিন বাস্তবায়ন করা যায় না। আগে নিজের চরিত্রকে সংশোধন করা দরকার। বুক আর মুখকে এক করা দরকার। জাহিলিয়্যাত যুগের চরিত্র পরিবর্তন করা দরকার। তবেই না মানুষের মন জয় করা সম্ভব।