অনেকেই পবিত্র কুরআন-হাদীসের বাণী লিখে স্ট্যাটাস দিয়ে থাকেন। এটা খুবই ভাল, দাওয়াতের কাজ, সওয়াবের কাজ। কিন্তু দেখা যায় কোন একটা বাণী লিখে নিচে লিখে দেওয়া হয় -আল-কুরআন অথবা-হযরত মুহাম্মদ সা:। একজনের দেখাদেখি আরও অনেকে এভাবে লিখে থাকেন। আসলে কুরআন হাদীসের বাণী অন্য সাধারণ বাণীর মত নয়। এটা রেফারেন্স সহ লিখতে হয়। নিয়ম হল ; পবিত্র কুরআনের বাণী হলে সুরার নাম ও আয়াত নম্বর উল্লেখ করা। পবিত্র হাদীসের বাণী হলে কিতাবের নাম, হাদীস নং অথবা পৃষ্ঠা নং উল্লেখ করা। এবং তরজমা/অনুবাদ লেখার ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য কোন তরজমার কিতাবের অনুসরণ করে লেখা, যাতে কোন প্রকার তারতম্য না হয়। কারণ আল্লাহ পাকের ওহীর বাণীতে নিজের পক্ষ থেকে কোনপ্রকার পরিবর্তন পরিবর্ধন করার সুযোগ নেই। এজন্য খুবই কেয়ারফুল থাকা প্রয়োজন।
শেখ সা’দী র. বলেন; “গভীর সমুদ্রে যেমন অনেক দামী মনি মুক্তা পাওয়া যায় তেমন আবার সেখানে জীবনের চরম ঝুকিও আছে।”
জেনে রাখা দরকার! কুরআন-হাদীস মনগড়া প্রচার করা মানে নিজেই নিজের ঠিকানা জাহান্নামে তৈরি করে নেওয়া। আবার অনেকে প্রাচীনকালের অনেক শিক্ষনীয় স্টোরি লিখে থাকেন; কিন্তু এর কোন রেফারেন্স উল্লেখ করেননা।
জনাব! আপনার স্টোরি যত হৃদয়গ্রাহী ও শিক্ষনীয়ই হোক, রেফারেন্স ছাড়া এর কোন মূল্য নেই। যেহেতু এটা অনেক আগের ঘটনা, আপনি এর প্রত্যক্ষদর্শী নন। অতএব, আপনি এ ঘটনা কোথায় পেয়েছেন? অবশ্যই কোন কিতাব বা বই থেকে সংগ্রহ করেছেন। সে তথ্যসূত্র এখানে উল্লেখ করবেন না?
অনেকেই অন্যের লেখা হুবহু কপি করে পোস্ট করে দেন। যাচাই বাচাই নেই। একই গল্প অনেকের পোস্টেই দেখা যায়। কোথাও রেফারেন্স নেই। রেফারেন্সের কথা বললে অথবা ভুল তরজমা সংশোধনের কথা বললে তর্ক জুড়ে দেন। এটা খুবই দু:খজনক। এসমস্ত সেনসিটিভ বিষয়ে খুবই কেয়ারফুল হওয়া জরুরি বলে মনে করি।
আবার অনেকে ফটোশপ করা আজগুবি ছবি পোস্ট করে আল্লাহর কুদরত বলে চালিয়ে দেয়, আর এটাতে হাজার হাজার লাইক-কমেন্ট পড়ে। এটা আল্লাহর কুদরতের সাথে তামাশা ছাড়া আর বিছু নয়।
আমি মনে করি পাঠকদেরও একটা দায়ীত্ববোধ থাকা প্রয়োজন। সেটা হল- যাচাই বাচাই ছাড়া রেফারেন্সহীন আজগুবি সব লেখা-ছবিতে গণহারে লাইক কমেন্ট্স না করা।