(১ম পর্ব)
নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) যেহেতু সর্বশেষ নবী ও রাসূল। শেষ নবী মোহাম্মদ (সা.) এর পর নবুওয়াত নিয়ে কোনো নবী আসবেন না। তাই শেষ ও শ্রেষ্ঠ নবীর উম্মতের শ্রেষ্ঠ সম্প্রদায় ওলামায়ে কেরামকে নবীর প্রকৃত উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যারা বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মিশনকে নবুয়ত ও রিসালাতের মাধ্যমে সৃষ্ট ধারায় কেয়ামত পর্যন্ত বিশ্বে দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিত থাকবেন। তাই শ্রেষ্ঠ উম্মতের কর্ণধার ওলামা কেরামকে আল্লাহ প্রদত্ত নিজ নিজ সামর্থ্য, জ্ঞান ও দক্ষতা অনুযায়ী সমাজে প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যথাযথ অবদান অবশ্যই রাখতে হবে।’
নবীজী (সা.) তার শিক্ষার মাধ্যমে মানবের চরিত্র গঠনে আদর্শ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে যেভাবে আত্মনিয়োগ করেছেন, জিহাদ করেছেন, সমাজে বিদ্যমান মুনকার কাজগুলোকে সমূলে উত্খাত করে তথায় মারুফকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, মূর্খ ও বর্বর জাতিকে মাত্র ২৩টি বছরে বিশ্বের দরবারে এক অনন্য সভ্যজাতি হিসেবে তুলে ধরেছেন, তেমনিভাবে উম্মতের প্রকৃত দিশারী ওলামায়ে কেরামকেও জাতির সর্বস্তরের মুসলিম জনতাকে সম্পৃক্ত করে সুুকৌশলে নবীজী প্রদত্ত দায়িত্ব পালনে সর্বান্তকরণে এগিয়ে আসতে হবে।
নানা সীমাবদ্ধতার কারণে কোনো ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালনে কেউ অক্ষম হলে তা পালনে যারা সামর্থ্য রাখেন, তাদের দিয়ে সেক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখা যেতে পারে। তা বিবেচনা করে তাদের সক্রিয় ভূমিকা পালনে আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ দিতে হবে এবং তাদের উৎসাহিত করতে হবে।
এ মহান কাজতে কাজকে নফল ও মুস্তাহাব মনে করে চোখ বুজে থাকা সমাজের অপকর্ম ও অপসংস্কৃতির প্রতিরোধ করাকে প্রচলিত নোংরা রাজনীতির মতো মনে করে ঘরে বসে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করাকে চরম দায়িত্বহীনতা ও মহাপাপ বলে বিশ্বাস করতে হবে। মন-মানসিকতায় আমাদের সব সময় নবী করীম (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের আদর্শে কাফের ও নাস্তিক মুরতাদদের মোকাবিলায় অত্যন্ত কঠোর হতে হবে, একে অন্যের সাথে সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে হবে। হতে হবে জাতির এক অতন্দ্র প্রহরী যাতে ইসলাম ও সমাজের দুশমনরা কোনোরূপ বিভেদ সৃষ্টি করতে না পারে। যাবতীয় অভ্যন্তরিণ মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) অত্যন্ত পরিতাপ করে বলেন, ‘জাতির কর্ণধার ওলামায়ে কেরাম আজও যদি তাদের অর্জিত ইলমে দ্বীনের সঠিক চর্চা করতেন এবং সমাজ গঠনে তা সঠিকভাবে উপস্থাপন করতেন, তাহলে তাদের জাতি তাদের সম্মানজনকভাবে নেতৃত্বের আসনে অবশ্যই অধিষ্ঠিত করত’। কিন্তু তারা তা না করে ইলমে দ্বীন ও তাদের দতাকে পার্থিব স্বার্থলাভের কাজে ব্যয় করছেন। ফলে জাতির চোখে তারা হচ্ছেন চরম অবহেলিত, তিরস্কৃত ও খাটো। (মিশকাত শরীফ)
চলবে