পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুর শব্দটি হচ্ছে ‘মা’। জগৎ-সংসারের শত দু:খ-কষ্টের মধ্যে যে মানুষটির একটু সান্ত্বনা আর স্নেহ-ভালোবাসা আমাদের সমস্ত বেদনা দূর করে দেয় সেই মানুষটিই হলো ‘মা’। মায়ের চেয়ে আপনজন পৃথিবীতে আর কেউ নেই। দু:খ-কষ্টে, সংকটে-উত্থানে যে মানুষটি স্নেহের পরশ বিছিয়ে দেয় তিনি হচ্ছেন আমাদের সবচেয়ে আপনজন ‘মা’।
প্রত্যেকটি মানুষ পৃথিবীতে আসে এবং বেড়ে ওঠার পেছনে প্রধান ভূমিকা মায়ের। পৃথিবীর প্রতিটি মা যদি সহিষ্ণু, মমতাময়ী, কল্যাণকামী না হতেন তবে মানব সভ্যতার চাকা অচল হয়ে যেত। জন্মের সূচনাপর্ব থেকে পরিণত বয়স পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে মায়ের অবদান অতুলনীয়। সন্তানের জন্ম ও বেড়ে ওঠার পেছনে মা-বাবার উভয়ের হাত রয়েছে-একথা অনস্বীকার্য। তবে এটি সর্বজনস্বীকৃত যে, এক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকাই প্রধান।
মা হচ্ছেন সন্তানের সুখে-দু:খের অনন্ত সাথী। মা সন্তানের সুখে সুখী হন, আবার সন্তানের দু:খে দু:খী হন। নিজের সমস্ত স্বাদ-আহলাদ, আনন্দ-বেদনা বিলিয়ে দেন সন্তানের সুখ-শান্তির জন্য। তার হৃদয়ের প্রবহমান প্রতিটি রক্তকণিকায় রয়েছে সন্তানের জন্য ভালোবাসা। মা তার সন্তানকে তিলে তিলে গড়ে তোলেন। সন্তানকে ঘিরেই মায়ের স্বপ্নের ডাল-পালা বিস্তার করতে থাকে।
পৃথিবীতে একমাত্র মায়ের ভালোবাসা ও দানই নি:স্বার্থ ও বিনিময়হীন। মায়ের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় আমরা দেখতে পাই বসুন্ধরার এই বিচিত্র সৌন্দর্যের সমারোহ। মায়ের কাছেই আমরা গ্রহণ করি জীবনের প্রথম পাঠ। ‘মা’ শব্দটি উচ্চারণের মধ্যদিয়েই প্রত্যেকের পরিচয় ঘটে ভাষার বিস্তৃত ভূবনের সাথে। মা আমাদেরকে শেখান মহানুভবতার শিক্ষা, সেবাই আদর্শ, মহাৎপ্রাণ চাহিদা। মায়ের দীক্ষায় আমরা অনুপ্রাণিত হই প্রকৃত উৎকর্ষে, সচেষ্ট হই নৈতিক দায়িত্ববোধে। মা বিধাতার শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। মায়ের তুলনা অন্য কারো সাথে চলে না।
সন্তানের ওপর মায়ের যে হক তা কখনো আদায় হওয়ার মতো নয়। মায়ের বুকের এক ফোঁটা দুধের মূল্য সন্তানের গায়ের চামড়া দিয়ে জুতা বানিয়ে দিলেও আদায় হবে না। সন্তানের জন্য মায়ের একরাতের কষ্টের বিনিময় আদায় করা যাবে না কোনোভাবেই।
এজন্য প্রত্যেকের উচিৎ ‘মা’ নামক মহানিয়ামতের যথার্থ মূল্যায়ন করা। প্রেভুর দরবারে দোয়া করলে মায়ের হক যৎকিঞ্চিত আদায় হতে পারে। মা জগতের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। মা সন্তানের জন্য জান্নাতের সহজ পথ। যে সন্তান মায়ের সান্নিধ্য গ্রহণ করার পাশাপাশি মাকে সন্তষ্ট করতে পেরেছে তারাই সাফল্যের সন্ধান পেয়েছে। সন্তানের কামিয়াবী নিহিত আছে মায়ের দোয়াতে। এজন্য প্রত্যেকের উচিৎ ‘মা’ নামক মহানিয়ামতের যথার্থ মূল্যায়ন করা।