ইউরোপ আমেরিকা রাশিয়ার অস্ত্রের বাজার গরম। মুসলমানদের রক্ত ঝরিয়ে গুরিয়ে নিচ্ছে নিজেদের অচল অর্থনীতির চাকা ! কেবলই প্রহেলিকা প্রতারণা আর ধোকা! আজ নিজ দেশে পরবাসি তারা যারা সিরিয়া ইরাক ফিলিস্তিন আর আফগান লিবিয়া কাশ্মিরে বসবাস করে।
সার্বিয়া থেকে হাঙ্গেরিতে ঢোকার প্রধান মহাসড়ক গতকাল বন্ধ করে দিয়ে অবস্থান নিয়েছে হাঙ্গেরির পুলিশ। এ সময় সার্বিয়া অংশে আটকে পড়া শরণার্থীরা হাঙ্গেরিতে ঢুকতে দেওয়ার দাবি জানায় l ছবি: রয়টার্স
ইউরোপমুখী শরণার্থীর ঢল ঠেকাতে গতকাল মঙ্গলবার সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে মধ্য ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরি। শরণার্থী গ্রহণের কোটার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসে কোনো সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এদিকে গ্রিসে ঢোকার সময় তুরস্কের উপকূলে নৌকাডুবিতে অন্তত ২২ জন শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছে। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।
শেংগেন চুক্তিভুক্ত দেশ হাঙ্গেরিই প্রধান পথ হয়ে উঠেছে ইউরোপ অভিমুখী শরণার্থীদের। অভিবাসনবিরোধী নেতা ভিক্টর অরবানের সেই হাঙ্গেরি গতকাল শরণার্থী ঢোকার প্রধান পথ সার্বিয়ার সঙ্গে তার সীমান্ত বন্ধ করে দিল। শরণার্থীদের প্রধান লক্ষ্য থাকে শেংগেন চুক্তিভুক্ত একটি দেশে ঢোকা। এ চুক্তিভুক্ত ইউরোপের ২৬ দেশের মানুষ ওই দেশগুলো অবাধে ভ্রমণ করতে পারে।
হাঙ্গেরির সীমান্ত পুলিশের কর্মকর্তা লাজলো বালাজস গতকাল রাজধানী বুদাপেস্টে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাতটায় রসজকে ও আসোথালম সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তা খুলে দেওয়া হবে না।
তবে কিছুসংখ্যক আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মীরা বলছেন, আগের দিন মধ্যরাত থেকে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাঙ্গেরির পুলিশ বলছে, দুই সীমান্ত বন্ধ করার আগের দিন সোমবার একদিনেই দেশটিতে ঢুকেছে ৯ হাজার ৩৮০ শরণার্থী। দেশটির সরকার গতকাল জানিয়েছে, নতুন সীমান্ত আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার শুরু করেছে পুলিশ।
এদিকে গত সোমবার ইইউর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে কোটার বিষয়টি চূড়ান্ত না হওয়াকে ইউরোপের ‘নিজেদের অপমান’ বলে মন্তব্য করেছেন জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের জন্য কোটার ভিত্তিতে মোট ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থী নেওয়ার ঘোষণা দেয় ইইউ। সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
আরও মৃত্যু: তুরস্ক থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে গ্রিসে ঢোকার পথে নৌকা ডুবে নারী-শিশুসহ ২২ জন মারা গেছে। স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ২২ জনের মধ্যে ১১ জন নারী ও চারটি শিশু রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইউরোপের দেশগুলোর সিদ্ধান্তহীনতার কারণে ভূমধ্যসাগরে ডুবে আরও শরণার্থীর মৃত্যু ঘটবে। আইওএমের প্রধান মুখপাত্র লিওনার্দ দোয়লে গতকাল জেনেভায় সংবাদ ব্রিফিংয়ে শরণার্থীদের ‘দায়িত্বশীলভাবে ভাগাভাগি’ করে নিতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
জার্মানির হ্যানোভার থেকে সরাফ আহমেদ জানান, অস্ট্রিয়া-জার্মানি সীমান্তের রেলপথ ছাড়াও দুই দেশ বরাবর সড়কপথে বিভিন্ন স্থানে সীমান্ত পুলিশ নিয়ন্ত্রণচৌকি বসিয়েছে। এতে সীমান্তমুখী রাস্তাজুড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
জার্মানির মিউনিখে আসা শরণার্থীদের ১৬টি প্রদেশের সাময়িক শরণার্থী কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হচ্ছে।
হ্যানোভারের আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে জার্মান ভাষা শিক্ষা কোর্স করতে এসেছেন সিরিয়ার আলেপ্পো শহর থেকে আসা শরণার্থী হাসান সাওয়ার। হতাশা জানিয়ে তিনি বলেন, সার্বিয়া থেকে জার্মানি আসার পথে তাঁর ছোট ভাইয়ের পা ভেঙে গেছে। সে সার্বিয়াতে চিকিৎসাধীন। জার্মান সরকার সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় সে আসতে পারছে না।