গাবতলী (বগুড়া) থেকে আল আমিন মন্ডল : বগুড়া জেলাসহ গাবতলী ও শিবগঞ্জ উপজেলায় পবিত্র ঈদুল আযাহাকে সামনে রেখে গরু ব্যবসায়ী ও খামারীরা গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ইতিমধ্যে গরু ছাগল খামার করে বেকার থেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন মোকামতলার চকপাড়া গ্রামের শাহজাহান আলী মন্ডল ভোলাসহ শতাধিক খামারীরা। এখন তারা লাখ টাকা থেকে কোটি টাকার স্বপ্ন দেখছেন। জানা যায়, এ মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ঈদুল আযাহা পশু কোরবানী জন্য সকল প্রকার প্রস্ততি গ্রহণ করছেন। সাধ্যের মধ্যে তারা পশু ক্রয় করে কোরবানী দিবেন। এই দিনকে সামনে রেখে দীর্ঘ মাসব্যাপী বসবে বগুড়া জেলাসহ গাবতলী ও শিবগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে পশু কেনাবেচার জন্য কোরবানী’র হাট। সে হাটে সবচেয়ে বড় পশু বিক্রি করবে খামারীরা। আর সে জন্য তারা গরু-ছাগল ও ভেড়া মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অধিক মুনাফা লাভের আশায় দরিদ্র বেকার শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা অল্পমূল্যে এঁড়ে বাছুর ক্রয় করে ২ থেকে ৩ বছর লালনপালন করে আসছে। গরু মোটাতাজাকরণ ও শরীরে মাংস বৃদ্ধির জন্য এখন ব্যস্ত খামারীসহ ব্যবসায়ীরা। সেক্ষেত্রে গরুকে অধিক পুষ্টিকর খাবার ভূষি, সবুজ ঘাস, খড়, খৈলসহ নিয়মিত ঔষধ ও চিকিৎসা করা হচ্ছে। এমন একটি বেকার পরিবার ছিল শিবগঞ্জের মোকামতলা চকপাড়া গ্রামের আকবর আলী মন্ডলের ছেলে শাহজাহান আলী মন্ডল ভোলা। সে গত ১০বছর পূর্বে বেকার জীবনে স্ত্রী মাহফুজা বেগমের সহযোগিতা ও উৎসাহে শুরু করেন ভোলা ডেরি ফার্ম। আজ তার খামারে রয়েছে উন্নতজাতের বিদেশী এঁড়ে (ষাঁড়) গরু বিদেশী ৩টি, ৫টি গাভী ও ২৮টি ছাগল। এরপর ভোলা’র পরিবার কঠোর পরিশ্রম ও ইচ্ছাশক্তি সংসারে ফিরে পেয়েছে সুখ ও সুদিনের দেখা। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে খামারের সুনাম। তার খামারে ভোর ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অবিরাম পরিশ্রম ও মেধা খাটিয়ে একের পর এক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আজ তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। ফলে সে স্বপ্ন দেখছেন কোটি টাকা দিন বদলের। মাটি ও মানুষের কল্যাণের স্বপ্ন দেখতে ভাল বাসেন ভোলা। তার স্বাবলম্বী হওয়ার কথা জানতে চাইলে শাহজাহান আলী মন্ডল ভোলা প্রতিবেদককে জানান, আমার কোন প্রশিক্ষণ নেই। প্রথমে আমি ১টি গাভী পালন করি। এখন আমার খামারে ১০টি বিদেশী গরু রয়েছে। এবছরে ঈদুল আযাহা’য় কোরবানী’র জন্য একটি বিদেশী ২ দাঁত বিশিষ্ট প্রায় ২৫মণ ওজনের ষাঁড় গরু যার উচ্চতা ৯ফিট, দৈর্ঘ্যে ২০ফিট, গায়ের রং সাদাকালো বিক্রি হইবে। ইতিমধ্যে গরুটির দাম ৪ লাখ টাকা চাওয়া হলে দাম বলা হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর গরুটি দেখতে অনেকে তার বাড়িতে ভিড় জামাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ০১৭২৫-৮২৪৩৪১ যোগাযোগ করছেন। গরুটি ৩ বছরে লালনপালন করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। তবুও ভাল দাম পেলে এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হবে। তার এ সাফল্যের পিছনে বৃদ্ধ পিতা আকবর আলী মন্ডল, স্ত্রী মাহফুজা বেগম, ছেলে মাসুদ রানা সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন তিনি। ভোলা আরো জানান, প্রতিটি মানুষ ইচ্ছা করলেই আমার মত সুদিনের সন্ধান পেতে পারেন। শেষে তার আগামী দিনের প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে ভোলা বলেন, আল্লাহর অসীম রহমতে আগামী দিনে খামারটি আরো প্রসার ঘটাতে চেষ্টা করবো। খামারী মো. মাসুদ রানা জানান, গরু মোটাতাজাকরণে প্রতিমাসে খাদ্যর পাশাপাশি খামারকে রোগবালাই থেকে মুক্তি রাখতে নিয়মিত চিকিৎসা করতে হয়। এছাড়াও গরুর ওজন বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত উন্নতমানের খাবার দিতে হয়। মাহফুজা বেগম জানান, আমাদের সবার পরিশ্রমের ফলে আজ আমরা স্বাবলম্বী হতে পেরেছি। তবে আমার স্বামীর সাফল্য দেখে আমার খুব ভাল লাগে। তার সততা ও পরিশ্রম আজ তাকে সুখের দিনের সন্ধান দিয়েছে। তাদের খামার দেখে আশপাশের শতাধিক খামার গড়ে উঠেছে।
সুত্র: ইনকিলাব
Check Also
অনিশ্চিত, পরনির্ভর, স্বীকৃতিবিহীন বঞ্চিত জনপদ কওমি মাদ্রাসার সংস্কার প্রসংগ
সংগৃহীত পোস্ট : এদেশে মাদ্রাসা শিক্ষার ইতিহাস বহু পুরানো। ইংরেজ আমলের আগে থেকেই দেশে মাদ্রাসা ...