Friday 10th May 2024
Komashisha familyAdvertisementContact । Time: সকাল ৬:৪৮
Home / Contemporary / নিউইয়র্কের সরকারি স্কুলে বাংলা এখন চতুর্থ প্রধান ভাষা

নিউইয়র্কের সরকারি স্কুলে বাংলা এখন চতুর্থ প্রধান ভাষা

Untitled-33

কমাশিসা ডেস্ক : গত দুই দশকে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ থেকে আগত অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই শহরের সরকারি স্কুলগুলোতে বাঙালি ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা বাড়ছে। এদের বর্তমান সংখ্যা সাড়ে ছয় হাজারের বেশি। নিউইয়র্কের শিক্ষা কমিশনারের অফিসের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ইংরেজি ভাষার পর এই শহরের স্কুলে সর্বাধিক ব্যবহৃত ভাষা স্প্যানিশ ও চীনা। বাংলা ভাষার স্থান চতুর্থ।
বাংলা ভাষাভাষী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও নিউইয়র্কের স্কুলব্যবস্থায় বাংলা ভাষায় শিক্ষাদানের সুযোগ সমানুপাতে বাড়েনি। এই মুহূর্তে নিউইয়র্কের মাত্র তিনটি স্কুলে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলার সমান্তরাল ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। দ্বিভাষিক কর্মসূচি নামে পরিচিত এই ব্যবস্থায় ছাত্রছাত্রী একই সঙ্গে ইংরেজি ও তার মাতৃভাষায় পাঠ গ্রহণের সুযোগ পায়। যে তিনটি স্কুলে বাংলার দ্বিভাষিক ব্যবহার চালু রয়েছে, সেগুলো ব্রুকলিন, ব্রঙ্কস ও কুইন্সের বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চলে অবস্থিত।
বাংলার তুলনায় চীনা, স্প্যানিশ ও কোরিয়ান ভাষায় দ্বিভাষিক শিক্ষার সুযোগ বহুলাংশে বেশি। এই বৈষম্যের কারণ কী, জানতে চাওয়া হলে নিউইয়র্কে স্কুলব্যবস্থার চ্যান্সেলর কারমেন ফারিনার একজন মুখপাত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীর মাতৃভাষা যা-ই হোক না কেন, প্রত্যেকে যাতে সর্বোচ্চ মানের শিক্ষা লাভে সক্ষম হয়, সে ব্যাপারে নিউইয়র্কের শিক্ষা বিভাগ অত্যন্ত সচেতন। মুখপাত্রটি জানান, নিউইয়র্ক স্কুলব্যবস্থায় দ্বিভাষিক ও অন্তর্বর্তীকালীন দ্বিভাষিক ভাষা হিসেবে বাংলার ব্যবহার সম্প্রসারণের কাজ চলছে। বাংলা ভাষায় কথা বলেন—এমন শিক্ষকের নিয়োগ বৃদ্ধির চেষ্টাও চলছে।
নিউইয়র্কের স্কুলব্যবস্থার সঙ্গে দীর্ঘদিন দোভাষীর কাজ করছেন মিনহাজ আহমেদ। তিনি জানান, নিউইয়র্কে পর্যাপ্তসংখ্যক সার্টিফায়েড বাংলা দ্বিভাষী শিক্ষক না থাকায় স্কুলগুলোতে বাংলা দ্বিভাষী বা দ্বৈতভাষী ক্লাস চালু করা যাচ্ছে না। বাংলা দ্বিভাষী বা দ্বৈতভাষী ক্লাস থাকলে শিক্ষার্থীরা ইংরেজির পাশাপাশি মাতৃভাষারও অনুশীলন করতে পারত। তিনি জানান, দ্বিভাষিক কর্মসূচি চালু থাকার ফলে হিস্পানিক ও চীনা ছাত্রছাত্রীরা শুধু ইংরেজি শিখছে তা-ই নয়, তাদের মাতৃভাষাকেও প্রবাসে ধরে রাখতে পারছে।
ব্রুকলিনের একটি মাধ্যমিক স্কুলে দীর্ঘদিন ইংরেজি ভাষার শিক্ষকতা করছেন শামস আল মোমিন। তিনি মনে করেন, কোনো কোনো বাংলাদেশি মা-বাবা দ্বিভাষিক কর্মসূচির ব্যাপারে অনাগ্রহী। ‘দ্বিভাষিক শিক্ষাকে কেউ কেউ নিম্ন মেধাবী ছাত্রদের কর্মসূচি’ বিবেচনা করে তাতে ছেলেমেয়েকে পাঠাতে ইতস্তত করেন। অথচ ইংরেজি না-জানা কোনো বাঙালি ছাত্র ইংরেজি ভাষার এই দেশে কী যে অসহায়ভাবে ক্লাসে বসে সময় পার করে, নিজে চোখে না দেখলে বোঝা অসম্ভব। মোমিন মনে করেন, দ্বিভাষিক শিক্ষাপদ্ধতিতে যেহেতু দুই ভাষাতেই সমানভাবে শিক্ষা দেওয়া হয়, ফলে ছাত্ররা অতিরিক্ত মানসিক চাপ ছাড়াই ইংরেজিসহ সব বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠে।
নিউইয়র্ক শিক্ষা দপ্তরের অন্যতম এক মুখপাত্র প্রথম আলোকে জানান, দ্বিভাষিক কর্মসূচির গুরুত্ব নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে একটা বড় সমস্যা হলো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাব। তিনি জানান, নিউইয়র্ক শিক্ষা বিভাগ বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় সনদপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্দেশ্যে শিক্ষা বিভাগ প্রথাগত পথের বাইরে নিউইয়র্ক টিচিং ফেলোস কর্মসূচির মাধ্যমেও শিক্ষক সংগ্রহের চেষ্টা করছে।
ভাষার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে আগত ছাত্রদের সাফল্যের হার খুব উৎসাহব্যঞ্জক। কুইন্সের একটি মাধ্যমিক স্কুলের চিত্রকলা বিভাগের শিক্ষক মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, বিগত শিক্ষা বছরে তাঁর স্কুলের প্রথম চারজন সেরা ছাত্রছাত্রীর প্রত্যেকেই ছিল বাংলাদেশের। এ দেশে আসার আগে এদের অধিকাংশের ইংরেজি জ্ঞান ছিল সীমিত।
‘আমাদের ছেলেমেয়েদের এই সাফল্যে সবাই অবাক হয়ে গেছে।’ এই ফলাফলে কোনো ভুল আছে কি না, তা দেখার জন্য একাধিকবার কাগজপত্র ও পরীক্ষার ফল বিচার করা হয় বলে মনিরুল জানান।

সূত্র : অনলাইন

Check Also

11377093_768919959891693_8552450127626177621_n

Can anyone become a Muslim?

Yes anyone can. There are two declarations, which are necessary: 1- To bear witness that ...