মুছা আল-হাফিজ
ইউরোপ শরণার্থী মুসলিমদের প্রশ্নে মানবিক হতে পারছে না, এটা যেমন সত্য,তেমনি সত্য – গোটা ইউরোপে বিবেকবান মানুষ মানবিক আবেদনে সোচ্চার। লক্ষ লক্ষ মানুষের মিছিল হচ্ছে দেশে দেশে প্রতিদিন। এই সব মানুষের অধিকাংশই অমুসলিম। তারা বলছেন -শরণার্থীদের জায়গা দিন। রাষ্ট্র অমানুষের নয়। মানুষ এসেছে কাছে, দিতে হবে স্থান।
ইউরোপের বিবেকী মানুষ মুসলমান না হয়েও যা পারছে,আমরা মুসলমান হয়েও এ দেশে তা পারিনি, বিবেকী না হবার ফলে। আমাদের চোখের সামনে লক্ষ লক্ষ আরাকানী মুসলিম আগুনে পুড়ছ্ব,সাগরে ডুবছে,নিহত হচ্ছে ভয়াল সন্ত্রাসে। ধর্ষিতা হচ্ছে তাদের বোন,সে কি আমার ও বোন নয়? লাঞ্চিতা হচ্ছেন তাদের জননী, টুকরো টুকরো করে ফেলা হচ্ছে শিশুর শরীর। হাজারো আয়লান আমাদের বিবেকের দরোজায় করাঘাত করে আমাদের জাগাতে পারেনি। তারা দেশ ছেড়েছে, সাগরে ভেসেছে। আশ্রয় চেয়েছে এ দেশে। সরকার আশ্রয় দেন নি। তেমনই আচরণ করেছেন, যেমনটি করছে না অমুসলিম অস্ট্রিয় সরকার।
আমরা তখন কোথায় ছিলাম? কোথায় ছিলাম মানুষ পরিচয়ের প্রতিটি প্রাণী? এই আওয়ামী লীগ,বিএনপি,এই জাতীয় পার্টি, জামাত, এই ইসলামী দল ও গোষ্ঠী – কোথায় ছিলাম আমরা তখন? এই ইমাম -মুসল্লি, পীর -মুরিদ,এই ছাত্র -শিক্ষক,নেতা -কর্মী,এই ওয়ায়েজ -শ্রোতা,আমীর -মামুর – আমরা কী পারতাম না একটি বারের জন্য বিবেকী হতে? পথে নামতে? আওয়াজ তুলতে? যেমনটি পেরেছে ইউরোপের লাখো মানুষ।
আজো আরাকান গণহত্যা ও প্রলয়ের নৃত্যে কম্পমান।আজো লাখো মুসলিম জীবনের শেষ আশ্রয় হিসেবে এদেশের মাটিতে ঠাঁই চায়।কিন্তু তাদের রোদনে আমাদের কালঘুম নষ্ট হবে কেন?স্বার্থপরতার চরম নজির দেখিয়ে আমরা বিবেকের দরোজায় তালা দিয়ে বসে আছি। মানব পরিচয় নিয়ে যারা গর্বিত,আসুন আরাকানের মজলুম মানুষের জন্য কিছু করি।একটি ইতিবাচক আহ্বানে লাখো মানুষ এক কাতারে দঁাড়াবে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়ায় ক্ষমতার জন্য এদেশে গণজাগরণ হয়েছে, কিন্তু মানুষ ও মানবতার জন্য সেটা হতে দেরি কেন? আমরা কি নেতৃত্ব আশা করতে পারি না হেফাজতে ইসলামের কাছে?