ধারণা করা হয় এটিই ভারতের প্রথম মসজিদ। যাকে চেরামন জুমা মসজিদ নামে ডাকা হয়। নবী মুহাম্মদ সা. এর সময়ে ভারতের কেরালা রাজ্যের কদুঙ্গালোর এলাকায় নির্মিত হয়েছিল। মসজিদটির মূল কাঠামো রেখে একাধিকবার এটি নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে একে পুরনো আদলে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
চেরামন জুমা মসজিদ নির্মাণ করেন সে সময়ের সেক্যুলার রাজা হিসেবে পরিচিত রাজা চেরামন পিরুমাল। এক সময় তিনি হিন্দু ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। তারপরই এ মসজিদ নির্মাণ করেন।
মসজিদ রক্ষা কমিটির প্রধান ডা. মুহাম্মদ সাঈদ বলেন, ঐতিহাসিক মতে, ৬২৯ হিজরিতে এ মসজিদ নির্মিত হয়। মসজিদটি আমাদের দেশের সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। এটি সংরক্ষণ ও সংস্কার আমাদের কর্তব্য।
এই এলাকায় আরো কয়েকটি প্রাচীন মসজিদ রয়েছে। এগুলোও দেশিও ঐহিত্য হিসেবে সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত।
ইসলামপূর্ব যুগেও অঞ্চলটিতে বণিকদের ব্যবসায়িক যাতায়াত ছিল। আরব ব্যবসায়ীরা সর্বপ্রথম নদীপথে মালাবারে আসতেন। ব্যবসায়ীরা তাদের মতবিনিময়ের জন্য এখানেই বৈঠক করতেন। এলাকাটিকে ‘প্রাচীন বন্দর’ নাম দিয়ে এর সংরক্ষণের জন্য একটি বৃহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে প্রদেশ সরকার।
তবে এলাকার মানুষদের দাবি, মসজিদটি সংস্কার হলেও এর পুরনো ইমারত যেন ধ্বংস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
চেরামন জুমা মসজিদ সেক্যুলার মসিজদ হিসেবে বহুল পরিচিত। এ বিষয়ে ডা. সাঈদ বলেন, এটি সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত। এখানে মুসলিম ব্যতীত অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও যাতায়াত রয়েছে। বিশেষ করে অন্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের সন্তানদের প্রথম মাটিতে পা ফেলার জন্য এখানে আনেন। এটি এ এলাকার এক বিশেষ কাজ। এছাড়া এ এলাকার সন্তানদের শিক্ষার সূচনাও হয় মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে। এলাকার মানুষের ধারণা, এরকম করার ফলে সন্তান মণিষী ব্যক্তিদের আশির্বাদ লাভে ধন্য হবে। মসজিদটিতে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব ধরনের মানুষের প্রবেশের সুন্দর ব্যবস্থাপনার নিজেদের বিশেষ দায়িত্বও বলে মনে করেন ডা. সাইদ।
ডা. সাঈদের মতে, ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদের স্বপ্নও ছিল এমন। তিনি সব ধর্ম ও মতের চিন্তায় লিপ্ত থাকতেন। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলতেন। আমরা এ কাজকেই অনুসরণ করছি। এটি বাস্তবায়ন করাই আমাদের স্বপ্ন।
বিবিসি উর্দু থেকে অনুবাদ