Tuesday 3rd December 2024
Komashisha familyAdvertisementContact । Time: রাত ১১:৩১
Home / অনুসন্ধান / কমাশিসার তিতা মিঠা ?!

কমাশিসার তিতা মিঠা ?!

kabah-islamic-art-7078189
খতিব তাজুল ইসলাম ::
আমি জানি, অনেকেও জানেন, সবাই ভাল করেই বুঝেন, সুবিধাজনক অবস্থান কোনটি ? কারণ সুবিধা বা নিরাপদ জায়গায় থাকা সকলেরই কাম্য। দু-চার লাইন লিখলে শ-তিনেক লাইক খুব ইজি। বত্রিশ শেয়ারও হবে।  লন্ডন শোনেছি, রেস্টুরেন্টের শেফ বা বাবুর্চিগণ গেরাভি নামক কিছু একটা পাঁচমিশালি মশলা/শুরবা রেডি করে রাখে। ৫০ আইটেমের ডিশ হলেও কোন অসুবিধা নেই গেরাভি তার ক্যারেশমা দেখায়। সবকাজের কাজি। তাই মিক্স মশলা বা গেরাভি মার্কা লিখুন আর বাহবা কুঁড়ান।
কারণ আপনাকে কারো বিরুদ্ধে যেতে হচ্ছে না। সবার জন্য সংরক্ষিত কলম।
সেদিন দেশ-বিদেশের পরিচিত মুফাসসির মাওলানা যুবাইর আহমদ আনসারি সাহেব ‘মাদানী গার্লস স্কুল’ লন্ডনে খুব চমৎকারভাবে ইসলামের প্রথম জামানার দাওয়াতি কাজের ঘটনাবহুল বিষয়গুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন –
কুরাইশরা ৩টি প্রস্তাব নিয়ে এলো রাসুল সা.’র কাছে :
(১) তোমার যদি নেতৃত্ব ও রাজত্বের খাহিশ থাকে তাহলে বলো, আমরা তোমাকে আমাদের রাজা ঘোষণা করবো।
(২) যদি নারী চাও, তাহলে আরবের সবচেয়ে সুন্দরী যুবতি নারী তোমার জন্য ব্যবস্থা করবো।
(৩) যদি চাও ধন-দৌলত চাও, তাহলে সোনা, রূপা, মণি-মুক্তা রাশি রাশি তোমাকে এনে দিবো; তবুও বাপ-দাদার রুসম রেখে যাওয়া আদর্শ আর যে স্বকীয়তা আছে তার বিরুদ্ধাচরণ করো না। অবজ্ঞা-বিরোধিতা থেকে ফিরো আস। আমাদের বদ্ধমূল আক্বীদা-বিশ্বাস চলমান সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে যে কুঠারাঘাত হানছো, যে সংস্কারের কথা বলছো, তা কোনোভাবেই আমরা মেনে নিতে পারি না। আমাদের দীর্ঘদিনের এই ইতিহাস-ঐতিহ্য কি জলে ভেসে যাবে ?
রাসূল সা. বললেন, ‘না, আমার এক হাতে সূর্য আর অপর হাতে যদি তোমরা চাঁদ এনে দাও তবুও আমি বিন্দুমাত্র নড়বোনা, আমার দাবী থেকে ফিরে আসবো না। প্রয়োজনে আমার জান গেলেও না। এ কথাগুলো রাসুল সা. তাদের প্রত্যুত্তরে বললেন।’
তারা হতাশ হয়ে অন্যভাবে ভাবতে শুরু করলো। বসলো কুরাইশদের পার্লামেন্ট। আসলো বয়কটের ডাক। পরামর্শ হলো ‘হজ্জের সময় রাস্তার কোনায় কোনায়, গলির প্রান্তে দাঁড়িয়ে আগুন্তুকদের অবহিত করা যে, মুহাম্মদ একজন পাগল, মানসিক ভারসাম্যহীন। তার কথায় কেউ যেনো কান না দেয়।’ এই পদ্ধতি হীতে বিপরীত হলো। লোক ভাবলো, এমন পাগলের কথা তাহলে আমাদের শোনা দরকার। মক্কার বড় বড় হুমড়া-চুমড়ারা মুহাম্মদকে পাগল বলে এতো প্রচারের হেতু কি? নিশ্চয় বিশেষ কিছু আছে। তাই উল্টো তারা লুকিয়ে লুকিয়ে আসতো আর রাসূলের সান্নিধ্য পেয়ে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতো। সুবহানাল্লাহ।
বাপ দাদার রুসম, চলে আসা রেওয়াজ যতই মধুর হোক, আরামদায়ক হোক; কিন্তু তা যদি ইসলামবান্ধব না হয় তাহলে তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
কিন্তু এই সংস্কার এবং পরিবর্তনের কাজ কি খুব সহজ বা ইজি ছিলো? নিশ্চয়ই না। জীবনের ঝুকি নিয়ে রাসূল সা., সাহাবায়ে কেরাম পাহাড়ের মতো অবিচল থেকে সকল বাঁধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে মনজিলে মকসুদে পৌছেছিলেন।
এতো বিরুধিতার পরও কি কুরাইশরা ইসলামের অগ্রযাত্রা রুখতে পেরেছিলো? না, পারে নি। কিন্তু রাসুল সা. ও তাঁর সাহাবাকে রা. অনেক কষ্ট-যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে।
LogoLeft
২. আজ যারা কমাশিসার জন্য আমাদের গালি দিচ্ছেন। প্রপাগান্ডা চালাচ্ছেন, তুহমত দিচ্ছেন; তারা সত্যের বিরুধিতা করছেন। নিজেদেরকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে না দিলেও কম করছেন না।
ইনশাআল্লাহ কওমি শিক্ষার নবজাগরণের অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না। লক্ষ লক্ষ ছাত্র, হাজার হাজার উস্তাদ-শিক্ষকদের উজ্জল ভবিষ্যতকে যারা গলাটিপে হত্যা করতে চায়, তাদেরকে রুখতে চায়, তারা আর বেশি দিন নয়; ইনশাআল্লাহ ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিপতিত হবেন।
সংস্কারের কথায় যাদের গাত্রদাহ শুরু হয়, তিতা তিতা লাগে তাদের চিন্তার অগভীরতার বহিঃপ্রকাশ। নিজের না বুঝা ও না জানার অক্ষমতাকে কেন অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চান? প্রয়োজনে সংস্কারের লক্ষ্যে সত উদ্দেশ্যে নিজে নিজেরা কোনো ফর্মূলা দিন; তাতে তো কেউ বাধা দিচ্ছে না।
৩. কোনো সংস্কারই ফুলের বিছানা নয়। প্রসব বেদনার ভয়ে কি নারীরা সন্তান ধারণ ছেড়ে দিয়েছে?
অতএব কওমি শিক্ষার উন্নয়ন ও যুগচাহিদাকে সামনে রেখে সংস্কার ও তা বাস্তবায়ন করা সময়ের দাবী। আর এই যৌক্তিক দাবী অপছন্দ হলে বা ভুল ধারণা নিয়ে কমাশিসার কার্যক্রমকে মিটিয়ে দিতে যারা যুদ্ধ ঘোষণা করছেন, তাদের জন্য শুধু করুণা আর প্রার্থনা ছাড়া আপাতত কিছু বলার নেই।
আল্লাহ ও তার রাসূল সা. যদি খুশি হন, ইসলামের যদি সুদিন আসে, খেলাফতে রাশেদার পতাকা যদি আবার উড্ডিন হয় তবেই আমরা সফল। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সেই সোনালি দিনের জন্য কবুল করুন। আমীন!

Check Also

নও মুসলিম

কানাডীয় নও-মুসলিম মিসেস ‘লারা’

অনলাইন ডেস্ক :: ইসলাম শান্তি, মানব-প্রেম, ন্যায়বিচার, বুদ্ধিবৃত্তি, যুক্তি, সংলাপ ও পরমত-সহিষ্ণুতার ধর্ম হওয়া সত্ত্বেও ...