Thursday 21st November 2024
Komashisha familyAdvertisementContact । Time: রাত ১১:০২
Home / Contemporary / আরাফাতের ময়দান

আরাফাতের ময়দান

জাকারিয়া আল হেলাল,

11150545_1604174959805090_5331399277341746227_nআরাফাহ ও আরাফাত- দুটিই প্রচলিত। প্রায় দুই মাইল দীর্ঘ ও দুই মাইল প্রস্থবিশিষ্ট একটি বিশাল ময়দানের নাম আরাফা। এখানেই ৯ জিলহজ হাজিরা হজের অন্যতম ফরজ ও রোকন ‘অকুফে আরাফাহ’ করেন। হজের সময় প্রতি বছর ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত ও প্রকম্পিত হয়ে ওঠে আরাফাত ময়দান।

আরাফাতের ময়দানেই মহানবি (সা.) বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন, যা সর্বকালের সব মানুষের কাছে মুক্তির দিশা হিসেবে বিবেচিত।
মক্কার মোয়াল্লা থেকে আরাফাতের মক্কা-সংলগ্ন পশ্চিম সীমান্তের দূরত্ব সাড়ে ২১ কিলোমিটার। ময়দানটির পুরোটাই হারাম এলাকার বাইরে। আরাফাহ সীমান্তের কিছুটা পশ্চিমে হারাম এলাকা শেষ হয়েছে।
বর্তমানে এই এলাকায় অনেক গাছ লাগানো হয়েছে। বাংলাদেশের মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উদ্যেগে সেখানে নিম গাছ লাগানো হয়েছে। এসব গাছ হাজিদের মধ্যে স্নিগ্ধ বাতাস বইয়ে দেয়।

আরাফাতের যেকোনো জায়গায় ৯ জিলহজ দাঁড়িয়ে, শুয়ে বা বসে এবং জেনে বা না-জেনে অবস্থান করলেই অকুফ হয়ে যাবে। অকুফের সময় হলো ৯ তারিখ সূর্য ঢলে যাওয়ার পর থেকে মুজদালিফার রাত্রির সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত। অর্থাৎ সুবেহ সাদিকের আগে পর্যন্ত।
মক্কা থেকে হজের ইহরাম পরে লাখ লাখ মুসলিম নর-নারী, যুবক ও বৃদ্ধ গভীর ধর্মীয় আবেগমিশ্রিত কণ্ঠে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিয়ামাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাকা’ অর্থাৎ আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির, আপনার কোনো শরিক নেই, আপনার মহান দরবারে হাজির, নিশ্চয়ই সব প্রশংসা, নিয়ামত এবং সব রাজত্ব আপনারই, আপনার কোনো শরিক নেই—এ হাজিরি তালবিয়া পাঠ করতে করতে মিনাতে এসে জোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজ আদায় করেন।
এরপর মিনা থেকে উচ্চ স্বরে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় আরাফাতের বিশাল প্রান্তরে হাজিরা উপস্থিত হন। জোহরের নামাজের আগে আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরার মিম্বরে দাঁড়িয়ে হাজিদের উদ্দেশে হজের খুতবা দেয়া হয়, যাতে আল্লাহভীতি বা তাকওয়া, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি, বিশ্বশান্তি ও কল্যাণের কথা ব্যক্ত করা হয়। খুতবা শেষে জোহর ও আসরের ওয়াক্তের মধ্যবর্তী সময়ে জোহর ও আসরের কসর নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা হয়। সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সব হাজি আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকেন।
আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের প্রতিদানস্বরূপ আল্লাহ সেসব হাজিকে নিষ্পাপ ঘোষণা করেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে যে আল্লাহ তাআলা আরাফার দিনে ফেরেশতাদের ডেকে বলেন, ‘হে ফেরেশতারা! তোমরা লক্ষ করো, আমার বান্দারা কী প্রকারে বহু দূরদূরান্ত থেকে এসে আজ আরাফাত মাঠে ধুলাবালির সঙ্গে মিলিত হয়েছে। তোমরা সাক্ষী থাকো, যারা আমার ঘর (কাবা) জিয়ারত করতে এসে এত কষ্ট স্বীকার করছে, নিশ্চয়ই আমি তাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিলাম।’ (বুখারি) ‘আরাফার দিন আল্লাহ এত অধিক পরিমাণ জাহান্নামিকে অগ্নি থেকে মুক্তি দেন, যা অন্য কোনো দিবসে দেন না।’ (মুসলিম)
অকুফে আরাফাতের পেছনে যে হিকমত কাজ করে তা হচ্ছে, হাজিরা আল্লাহর ভয় এবং আশা-ভরসা নিয়ে আরাফাতে হাজির হন। আল্লাহর কাছে তাদের কবুল কিংবা বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা কিংবা আশঙ্কা থাকে। এই মহান দিবসে তারা হাশরের বিচার দিনকে স্মরণ করবে। কারণ এটা হাশরের ময়দানের একটি ছোট্ট নমুনা। হাশরের দিন মানুষ সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যের মুখে পড়বে।

মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিদের মহাসম্মেলনের এই দিনে মুসলমানরা বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের নমুনা তুলে ধরে। তাদের সামনে তাদের ইমাম বা নেতা অবশিষ্ট সৌভাগ্য এবং চিরন্তন হেদায়াতের ব্যাপারে বক্তব্য তুলে ধরেন। এ সবের আলোকে তারা ইচ্ছা করলে দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণের ব্যাপারে আরো অনেক বেশি উপকৃত হতে পারেন।

(আসিফ হাসান)11952771_1644280379161560_5377248183581152282_o

Check Also

stock-marketwb_0

Asia shares continue global rebound

Asian stock markets have recorded more gains, continuing the positive lead set by the US ...