লিখেছেন: সালেহা বেগম
একজন মুসলিম নারী অপর মুসলিম পুরুষের সাথে তখনই ঘর-সংসার করার বৈধতা পায় যখন তাদের মধ্যে ইজাব-কবুল তথা প্রস্তাব দান ও তা গ্রহণ করা হয়। কেননা, ইসলাম কিংবা প্রচলিত আইন কোন দিক থেকেই ইজাব-কবুলের আগে তারা পরস্পর স্বামী স্ত্রী হিসেবে পরিগণিত হয় না। অতএব, এনগেজমেন্ট হওয়া সত্ত্বেও তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে গণ্য হতে পারে না। তখন তাদের একে অপরের সাথে পর-পুরুষ কিংবা পর-নারী হিসেবেই ব্যবহার করতে হবে। কোন সভ্য সমাজে যদি একজন পর-নারীর সাথে কোন পুরুষের চলাফেরা করাকে দোষণীয় মনে করা হয় তাহলে, কেন বিবাহের আগে এদের পরস্পরের সাথে চলাফেরা করা দোষণীয় হবে না?
আমাদের সমাজে অনেক স্থানে এনগেজমেন্ট তথা বাকদান বা বিবাহের কথাবার্তা পাকাপাকি হওয়ার পরে পাত্র-পাত্রীদেরকে মনে করা হয় যেন এদের পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হয়ে গেছে। তাই তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে একসাথে বসে গল্প গুজব কিংবা চলাফেরা করার ওপেন পারমিশন দেয়া হয়। বিশেষ করে শহর এলাকায় এটা বেশী দেখা যায়। ফলশ্রুতিতে অনেকাংশে তাদেরকে একত্রে ছেড়ে দেয়া হয়, তারা একত্রে বিভিন্ন স্থানে আড্ডা দেয়া কিংবা বেড়াতে বের হয়। ইসলামের দৃষ্টিকোণ ও যুক্তির আলোকে ভেবে দেখি এ বিষয়টা কতটুকু সঠিক হচ্ছে?
শুধুমাত্র এনগেজমেন্টের কারণে তাদের মধ্যে সম্পর্ক হয়ে যায় না। কেননা, বিবাহে হাজারো ওয়াদা থাকলেও বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময় কথা পাকা পাকি করা সত্ত্বেও বিবাহ অনেক সময় ভেঙ্গে যায়। কখনও কখনও বিবাহের মজলিসেও বিবাহ ভেঙ্গে যায়। ইসলামের দৃষ্টিতে এমতাবস্থায় বিবাহের আগে সামান্য সম্পর্ক রাখাও বৈধ নয়। কেননা, নির্জনে বেগানা পুরুষ ও নারীর একত্রে অবস্থান করা হারাম। এমতাবস্থায় শয়তান হয় তাদের সঙ্গী ও তৃতীয়জন। রাসুল [সা.] বলেছেন, কোন পুরুষ যেন অন্য কোন বেগানা মহিলার সাথে নির্জনে একত্রিত না হয়, কেননা, তখন তাদের তৃতীয়জন হয় শয়তান। [তিরমীজি, নাসায়ী, আহমদ]
বেগানা পুরুষ ও নারীর এই নির্জনাবস্থানই এ সমাজের অনেক পাপের মুল। এর কারণে তারা অনেক সময় অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। তাদের যদি একে অপরের সাথে সাক্ষাত করতে হয় তবে, অবশ্যই তাদের সাথে তৃতীয় কোন মাহরাম আত্মীয় থাকতে হবে। এবং এ পাত্রীর সাথে পর্দা করতে হবে। কেননা, শুধুমাত্র ইজাব কবুলের পরেই তাদের সম্পর্ক স্থাপিত হয়, তখন স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কোন পর্দা করতে হবে না। কেননা, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পর্দা নেই।