>>>মধ্যপ্রাচ্যের শরানার্থীর অন্তরালে এপ্রিল ফুলের গন্ধ<<<<
লিখেছেন: সাইমুম সাদী
আজকাল অনেককেই দেখি,
ইউরোপ মধ্যপ্রাচ্যের শরনার্থী নিচ্ছে বলে, ইউরোপীয়ানদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে– মধ্যপ্রাচ্যের সমৃদ্ধশালী দেশগুলোর জনগণ আজকে শরনার্থী হলো কেন ??
এর পেছনে মূল কারণ ছিলো মন্দায় আক্রান্ত পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের অস্ত্র ব্যবসা। নিজেদের আর্থিক মন্দা দূরীকরণে তারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছিলো, যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়েছিলো মুসলমানদের মধ্যে, সৃষ্টি করেছিলো বিশাল অস্ত্রের বাজার, মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তারা মধ্যপ্রাচ্যে বিক্রি করতে সমর্থ হয়েছে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র।
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করার কারণেঃ
১) মিশর অস্ত্র ক্রয় করে চীন, আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়া, ইতালি, জার্মানি, সাউথ আফ্রিকা ও স্পেন থেকে।
২) সিরিয়া অস্ত্র কয় করে রাশিয়ার থেকে।
৩) ইরাক অস্ত্র ক্রয় করে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চেক রিপাবলিক, জার্মানি, সাউথ কোরিয়া থেকে।
৪) সউদী আরব ক্রয় করে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, স্পেন, সুইডেন ও সুইজারল্যন্ড থেকে।
৫) ইরান ক্রয় করে রাশিয়া থেকে।
৬) আরব আমিরাত ক্রয় করে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ড ও সিঙ্গারপুর থেকে।
উল্লেখ্য সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের কারণে ২০১১ সাল থেকে শরনার্থীর সৃষ্টি হয়, যার সংখ্যা প্রায় ৩৮ লক্ষ। কিন্তু হঠাৎ করে ২০১৫-তে শরনার্থীরা কেন ইউরোপ মুখী হবে ? যেখানে ইউরোপেই চলছে বড় ধরনের মন্দা, চাকুরীর অভাবে ইউরোপের অধিবাসীররাই মারামারি-কাটাকাটি করছে। আসলে এর কারণগুলো হতে পারে-
১) ইউরোপের সরকারগুলোই মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতপূর্ণ দেশগুলোতে মানবপাচারকারী পাঠিয়েছে। তারা উন্নত জীবনের লোভ দেখিয়ে শরনার্থীদের ইউরোপের আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।
২) ইউরোপে আসার নাম দিয়ে যুদ্ধাক্রান্ত মুসলমানদের সারা জীবনের জমানো টাকা পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে মানবপাচারকারীরা। গার্ডিয়ান বলছে, জার্মানিতে প্রবেশ করতে শুধু খরচ হচ্ছে আড়াই লক্ষ টাকা, হিসেবের বাইরে খরচ তো রয়েছেই।
৩) ‘কয়েক হাজার লোক ইউরোপে প্রবেশ করেছে’ মিডিয়ার সামনে এটা খুব ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু কত লক্ষ শরনার্থীকে ইউরোপে ডেকে আনা হয়েছে এবং কত লক্ষকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে তার কোন হিসেব আসছে না্। খবর নিলে দেখা যাবে, থ্যাইলান্ড-মালয়েশিয়ায় যেমন বাংলাদেশীদের গণকবর পাওয়া গিয়েছিলো, একইভাবে ইউরোপের সমুদ্রতীরবর্তী এলাকাগুলোতেও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানদের গণকবর পাওয়া যাবে।
৪) মুসলমানদের প্রতি মুসলমানদের সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ধনী মুসলমানদের থেকে বিপুল পরিমাণে চাদা সংগ্রহ করছে জাতিসংঘসহ নানার পশ্চিমাপন্থী সংগঠনসমূহ।
মুসলমানদের একটা স্বভাব হচ্ছে, আমরা আমাদের শত্রু সম্পর্কে অবগত নয় এবং আমরা ইতিহাস থেকেও শিক্ষা নেই না। ফলে একই গর্তে আমরা বার বার পড়ি । যে পশ্চিমারা সামান্য অস্ত্র ব্যবসার জন্য আমাদের মধ্য কলহ বাধিয়ে ছিলো, সেই পশ্চিমারা ই আবার আমাদের আদর করে আশ্রয় দান করছে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। শরনার্থী আশ্রয়দানের পেছনে অবশ্যই ‘এপ্রিল ফুলের মত’ কোন না কোন সত্য লুকিয়ে আছে, যা পরে মিডিয়ায় ফাঁস হবেই হবে।
লেখার জন্য প্রয়োজনীয় সূত্র:
১) http://goo.gl/WTjM8g
২) http://goo.gl/tqrmYQ
৩) http://goo.gl/nBR5U9
৪) https://goo.gl/32FrZe