বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সকাল ১১:১৮
Home / ইউরোপ / বিলেতের অলিতে গলিতে – (১ম পর্ব)

বিলেতের অলিতে গলিতে – (১ম পর্ব)

যানবাহন রাস্তাঘাট সম্পর্কীয় – ১ম কিস্তি

খতিব তাজুল ইসলাম:

uk-privitional-driving-liceneবিলেতে আগে এমন একদিন ছিলো বাংলাদেশিদের যারা ১১০ নাম্বার বাস ইংরেজিতে বলতে পারতেন না তারা নিজস্ব পরিভাষায় বলতেন দুইলগ্গি এক আন্ডা। মানে দুই লাঠি একটা ডিম।এভাবে ঘর  এবং বাসের নাম্বার তারা ঠাহর করতেন। লেখাপড়ার সীমারেখা কি ছিলো তা  আর ব্যাখ্যার দরকার নেই। সেই সময়ে গাড়ি চালনার জন্য কোন ইন্সট্রাক্টারের দরকার পড়তোনা। আপনি চালাতে পারেন ব্যাশ ড্রাইভিং অফিসারের সামনে একবার চালাতে পারলেই পাস। ছবি যুক্ত ছিলোনা।এখন প্রতিটি আদনা থেকে আদনা কাজে ছবি লাগে। বর্তমান সময়ে ড্রাইভিং টেস্ট  উত্তীর্ণ হওয়া মানে একপ্রকার জিসিএসি টেস্টের কাছাকাছি। সাথে আছে পাহাড় সম অর্থের লগ্নি। অনেকে খেই হারিয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছেন।২০০৫ শালে যখন ড্রাইভিং পাসকরি তখন ছিলো ৩টা টেস্ট। ১০০০ প্রশ্নোত্তর। তারপর হাজার্ট টেস্ট। অতঃপর প্রাক্টিক্যাল টেস্ট। বর্তমানে ৪টি টেস্ট। ২০০০ হাজার প্রশ্নো্ত্তর পর্ব ইংরেজিতে হতে হবে। যাকে বলে থিওরি টেস্টের প্রথম পর্ব। অতঃপর ২য় পর্বে হাজার্ট টেস্ট।আবার প্রাক্টিক্যালে দুই পর্ব। প্রথম দিনের টেস্ট তারপর রাতের টেস্ট। এভাবে কঠিন থেকে কঠিন করে তুলা হয়েছে ড্রাইভিং পাসকে। বলা হয়ে থাকে বৃটেেনের ড্রাইভিং সিস্টেম সারা বিশ্বের সেরা। কমপক্ষে ৫ হাজার রোড মার্ক আছে বিভিন্ন  এংগ্যালে যা একজন চালককে অবশ্যই জানতে হবে।

বৃটেনে বসবাসরত ১৮ বছরের যে কোন নাগরিককে প্রথম প্রভিশনাল লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হয়। আবেদনের সাথে ৫০ পাউন্ড ফীস পে করার পাশাপাশি ২কপি ছবির সংগে পাসপোর্ট অথবা অন্য কোন ফটো আইডি সংযোগ করতে হবে।সপ্তাহ তিনেকের ভিতর  প্রভিশনাল লাইসেন্স কার্ড ডিভিএলএ’র পক্ষথেকে আপনার ঠিকানায় পৌছে যাবে। ১০বছর মেয়াদী এই কার্ড হাতে আসার পর  আপনি ড্রাইভিং লেসন নেয়ার উপযুগী হবনে। এর আগে স্টিয়ারিংএ হাত লাগানো আইনত অবৈধ। যেনতেন ভাবে শিখতে পারবেন না। সরকার কর্তৃক অনুমোদিত লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যক্তিরাই কেবল নির্দিষ্ট কারের মাধ্যমে আপনাকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবে। প্রতি ঘন্টায় পে করতে হবে নুন্যতম ২০ পাউন্ড। হ্যাঁ আপনার পরিচিত কোন বন্ধু বা আত্মীয় যে কেউ শিখাতে পারে তবে শর্ত হলো তিনবছর পুরানা ড্রাইভিং লাইসেন্সের অধিকারি হতে হবে তাকে। সাথে থাকতে হবে ইন্সুরেন্স এবং প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল সাপোর্ট সাইনবোর্ড ইত্যাদি।একজন সাধারণ আয়ের মানুষের পক্ষে আজকাল ড্রাইভিং লাইসেন্স সোনার হরিণ।uk-theory-test-book

কলেজ ভার্সিটির ছেলেমেয়েদের জন্য এসব কিছুটা আসান হলেও ড্রাইভিং পাস করার পর গাড়ি চালাতে গিয়ে বিপত্তি। নতুন ড্রাইভারদের জন্য  ইন্সুরেন্স শুরু হয় বাৎসরিক তিনহাজার পাউন্ড থেকে।ইন্সুরেন্স নিয়ে আলোচনা অন্য কলামে হবে। শুধু জেনে রাখা ভাল বৃটেনে বিনা  ইন্সুরেন্সে গাড়ি চালানোকে মার্ডারের কাছাকাছি অপরাধ গন্যকরা হয়।

প্রভিশনাল কার্ড হাতে আসারপর শুরু হলো থিওরি টেস্টের দৌড়। অর্থ এবং সময় দুটো মিলিয়ে যারা আটকে যান তাদের ভোগান্তির কোন সীমা থাকেনা। আবার থিওরি পাস করে নিলে ২বছরের ভিতর প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষায় পাস করতে হবে, নতুবা তা বাতিল বা ডেইট এক্সপেয়ার হয়ে যাবে।এভাবে থিওরির গ্যাড়াকলে বর্তমান বৃটেনে হাজার হাজার ড্রাইভিং প্রত্যাশিরা আটকে আছেন। গভর্মেন্ট চাচ্ছে গাড়ির সংখ্যা কমিয়ে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বেশি বেশি ইউজ হতে। কারণ মানুষের সাথে পাল্লাদিয়ে গাড়ির সংখ্যা যদি বাড়তে থাকে তাহলে মানুষের জন্য হয়তো  উপরের দিকে তালা বাড়ানো যাবে কিন্তু গাড়ির জন্য ক’তালা করবেন? তারপরও লন্ডনের বুকচিরে মাকড়শার জালের মতো মাটির নীচে আন্ডারগ্রাউন্ড আছে।ওভার ব্রিজ আছে অসংখ্য।ওভার গ্রাউন্ড ট্রেইন আছে বেহিসেব। তারপর ও ক্রাউড সামলানো হয়ে পড়েছে মুশকিল। গাড়ির লাগাম টেনে না ধরলে মহাবিপদ। তাই সারা লন্ডন মেগাসিটি ব্যাপী বাই সাইকেলের আয়োজন চোখে পড়ার মতো। বিগত বছর পাঁচেক যাবত রাস্তার পাড়ে কোণায় কোণায় সরকারি আয়োজনে সারি সারি করে রাখা লাখ লাখ বাই সাইকেল। যে কেউ হায়ার করে নিতে পারে। অনলাইন নাম রেজিস্ট্রি করে কোড নাম্বার বা কার্ড ছোয়াপ করে পার্কিং থেকে সাইকেল নিয়ে ভোঁ দৌড়।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

সীমান্তে অভিবাসী শিশুদের তাড়াতেও কাঁদানে গ্যাস!

কমাশিসা: কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে চারদিক। আতঙ্কে ছুটোছুটি করছে অনেকগুলি পরিবার। শিশুদের জাপটে ধরেছেন ...