বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সন্ধ্যা ৭:৫১
Home / অর্থনীতি / প্রসঙ্গ – আপনি কেন চাঁদাবাজি করেন?

প্রসঙ্গ – আপনি কেন চাঁদাবাজি করেন?

12833393_458134147730933_383997314_n (1)
আল-খাইর ফাউন্ডেশনের জনক ইমাম কাসেম রাশেদের সাথে খতিব তাজুল ইসলাম।

খতিব তাজুল ইসলাম::

সঙ্গীন আদালত (পর্ব ১)
আমি কখনো কোন ব্যক্তি নিয়ে কটাক্ক করে লিখা পছন্দ করিনা। একটি মিশন আদর্শ চিন্তা নিয়ে আমার পথচলা। সেখানে ব্যক্তি তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধেও যদি যায় তাহলেও কি আমাকে তা লিখতে হবেনা?
ফতোয়া বা হালাল হারামের কোন বিষয় নয় যে, আসমান ভেংগে পড়েছে কিংবা জমিন তুলপাড় হয়েগেছে। সামাজিক কোন ভাল জিনিস সময়ের ব্যবধানে কোন সময় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই মনে করুন – আপনি চাঁদাবাজির বিরোধীতা করেন ; আবার নিজেও চাঁদাবাজি করেন? চাঁদা, ফান্ডরেইজিং বা ফান্ড সংগ্রহ। আবহমান কাল থেকে তা চলে আসছে। কোরআন হাদীসের আলোকে রাসুল সাহাবার জীবনের পরতে পরতে রয়েছে ফান্ড সংগ্রহের ইতিহাস। যারা ভিক্ষুক তারা অভাবের তাড়নায় ভিক্ষা করে।
বা কোন ব্যক্তি দল গোষ্ঠী বা অর্গানাইজেশন অসহায়দের জন্য কাজ করে। দুর্যোগপুর্ণ মুহুর্তে যারা হঠাৎ পথে নামে তাদের সহায়তা। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধেও ফান্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। আজকাল ধনী দেশগুলো ছোট বা গরীব দেশগুলোকে রাষ্ট্রীয় এইড দেয়। জনগন দেশকে টেক্স দেয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারের পক্ষথেকে অনুদান দেয়া হয়। ধনীরা ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিষ্ঠান কায়েম করে।
বিশেষ করে কওমি মাদরাসাগুলো জনগণের ফান্ডে চলে। তাই ফান্ড মুসলমানরা এনে মাদরাসায় দিয়ে যাবার কথা। যা থানভী রাহ’র কথা।
এখন মাদরাসা হয়েছে বেশী। ডিমান্ড প্রচুর। তাই কর্তৃপক্ষ বাহির থেকেও চাঁদা কালেকশন করে। বাংলাদেশের কাছে বাহিরের দেশ থেকে আসা কোটি কোটি টাকার ফান্ড সরকারের সাথে যাদের সম্পর্ক ভাল তারা ৮০% ভাগ লোটেপুটে খায়, লাগায় নাম মাত্র অংশ।
এমনকি আজকাল রাস্তাঘাট সরকারী বিল্ডিং অফিস প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ থেকে ৭৫% ভাগ খেয়ে ফেলে রডের বদলা বাঁশ দিয়ে দালান বানানোর নজির দেশবাসি দেখেছে।
ঠিক তেমনি মাদরাসা বা দ্বীনী প্রতিষ্ঠান গড়া ও পরিচালনার নামে মারাত্মক ভেজাল ঢুকে পড়েছে। কোন যোগ্যতা ছাড়াই চলে একাজ। কোন প্রকার আইনি বাধ্য-বাধকতা নেই। পেটের ফিকিরের জন্য নাম প্রতিষ্ঠানের কাম বা চাহিদা মিটে ব্যক্তির। হ্যাঁ একটা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। অথচ এখানে আছে বৈষম্য। বিলেতে মসজিদের ফান্ড গ্রাস করার শত শত নজির আমরা দেখছি।
বিলেতে এসে দেশের মাদরাসার জন্য ফান্ড সংগ্রহ করে নিজে থাকেন শহরে বাসা করে আর গ্রামের মাদরাসার অবস্থা থাকে বেহাল। শত শত মানুষকে দেখেছি ভুয়া মসজিদ মাদসার নামে ফান্ড সংগ্র চলছে।
আরো দেখেছি কুফরের করাল গ্রাসে সমাজ একদিকে বিলীন হয়ে যাচ্ছে আর অন্যদিকে তিনি কেবল মাদরাসা মসজিদে দামী টাইল্স লাগাতে ভিজি। আর্তমানবতার সেবার নামে মানুষকে ধর্মান্তরীত করা হচ্ছে। আর বেশির ভাগ উলামারা আছেন নিজেদের নিয়ে। কারণ যে পন্থায় লেখাপড়া করেছেন এখন তাকে মসজিদ মাদরাসার আঙ্গিনা ছাড়া আর কোথও যাবার সুযোগ নেই।
আলেম উলামা সম্পর্কে মানুষের মাঝে নেতিবাচক কিছু চাওর হয়েছে।বিস্তার ঘটেছে। যে তাদের জীবন পরগাছি। তারা কেবল চাঁদা করেই খায়।আমি বড় কোন আলেম না হলেও তাদের খাতায় আমার নাম লিখা আছে। এসব কর্মকান্ড অপবাদ আমাকে পীড়া দেয়। অপমান বোধকরি। তলিয়ে দেখি এখানে আমাদেরও গাফলতি প্রচুর।
তাই চাঁদা নির্ভর না হয়ে আলেম উলামা যাতে ভাল উপার্জন করতে পারেন। তাদের জীবনে স্বাচ্ছন্ধ্য ফিরে আসে। তারা যাতে মসজিদ মাদরাসার জন্য প্রাণ খোলে দান করতে পারে। তারা ফান্ড কালেকশন করে সমাজের বঞ্চিত অসহায় মানুষকে সাহায্য করতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই চলমান চাঁদাবাজির স্টাইলের প্রতি ক্ষোভ।
একজন ইমাম কাসেম রাশেদ। আল-খাইর ফাউন্ডেশনের জন্মদাতা। তিনি আলেমে দ্বীন কওমির গর্ব। যিনি বিশ্বের দরবারে আলেম সমাজের নাম উজ্জল করেছেন।
তিনি কোন মসজিদ মাদরাসার জন্য নয় আর্তমানবতার কল্যাণের জন্য মাঠে নেমেছেন। সত্যিই আমার হিংসা হয় তার কাজ দেখে যে আমি যদি এমন হতে পারতাম। অথচ পাশে মসজিদ মাদরাসাও কায়েম হচ্ছে।
ব্যাপক ভাবে যোগ্যতা দক্ষতা অর্জন করে উলামারা নিজের জন্য উপার্জন করুন। দ্বীনের জন্য ব্যায় করুন। যে কাজ করে খায় আর মানুষের কল্যাণের জন্য নিজের উপার্জন থেকে দান করে অন্যের কাছহতে ফান্ড এনে মানুষের সেবা করে। আমি সেই দলের অন্তর্ভুক্ত হতে চাই। তাই চাঁদাবাজির বিষয়টি আশাকরি আপনাদের সকলের কাছে এখন পরিষ্কার হয়েছে।
 

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমীর নিউ ভার্সন এবং রাষ্ট্র থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসন!

সৈয়দ শামছুল হুদা: বাংলাদেশের একটি আলোচিত অন্যতম রাজনৈতিক দলের নাম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সরকারে থাকা ...