মঙ্গলবার, ১৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সকাল ৮:৪৩
Home / কর্তব্যের বিষয়ে আমরা এখনো এলোমেলো

কর্তব্যের বিষয়ে আমরা এখনো এলোমেলো

খতিব তাজুল ইসলাম::

আমাদের ইসলামিক দলগুলো নির্বাচন আসলে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে শুরু করেন। জাতীয় নির্বাচ থেকে স্থানীয় নির্বাচন। সবখানে দৌড়-ঝাপ চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশের ৪৫ বছরের ইতিহাসে জামাতি ইসলাম একমাত্র দল যারা পেয়েছিলো সংসদে সর্বোচ্চ ১০-১২টা সিট। অন্যান্যরা ১টা ২টা করে।তাহলে কি বাংলাদেশের মানুষ ইসলাম চায়না? তালগুলটা কিন্তু আমরা এখানেই পাকিয়ে ফেলেছি।মানুষদের বলছি আমাকে ভোট দাও আমি ইসলাম কায়েম করবো। কিন্তু লোক ভোট দেয়না। মানুষ মনে করে নামাজ রোজা হজ্জতো আদায় করছি। সাধ্যমতো যাকাত দিচ্ছি। ঈদ কুরবানি বিয়ে শাদিতে ইসলাম আছে। তাহলে না্ই কোথায়? পাবলিক ভাবছে বেটা ইসলাম কায়েমের মিথ্যা বুলি দিয়ে ভোট কামাই করতে চাইছো? ভাত দে কাপড় দে নাইলে গদি ছেড়ে দে ? শিক্ষা শেষে চাকুরি দে নাইলে ক্ষমতা ছেড়ে দে ? পাবলিকের কাছে পেটের কথাই সার। যেখানে হুজুরগণ নিজেই অন্যের উপর সেখানে আমাদের কি করে দিবে কোথা থেকে দিবে? ইহা একটি মনস্থাত্বিক ব্যাপার। কারণ হুজুর ইমাম মৌলানাদের একটা গন্ডি আছে যা সকলের জানা। পাবলিক মেম্বার চেয়ারম্যান সাংসদ মন্ত্রী এমপি পদে হুজুরদের সেটাপ কখনো দেখেনি। যা আছে সবই ইতিহাসের পাতায়। এখন কল্পনায় ইসলামী খেলাফতের সোনালী যুগের কথা পাবলিক বিশ্বাস করেনা। পাবলিক যখন ডাক্তারে যায় তখন একজনকে দেখে। আদালতে যায় তখন আরেকজনকে দেখে। ব্যাংক অফিসে সচিবালয়ে যায় তখন দেখে অন্যজন। গোটা সংসদ অন্যদের দ্বারা পরিপূর্ণ।পুলিশ মেলেটারি কর্ণেল মেজর জেনারেল প্রফেসর ওদের চেহারা আর হুজুরদের চেহারার মিল তারা খুঁজে পায়না। প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী পদে তারা কখনো কোন হুজুরকে দেখেনি। তাহলে হুজুরগণ কাগজে কল্পনায় ইতিহাসে বক্তৃতায় আলাপ আলোচনায়।vote box

তাহলে এই হুজুরদের করণীয় কি? বসে বসে আংগুল চুষবে নাকি কিছু একটা তাকে করতে হবে? তাকে কোন উদাহরণ পেশ করতে হবেনা? নগদ জাতিকে কিছু দেখিয়ে দিবেনা? তারা তাদের মেধা যোগ্যতা দক্ষতার প্রমাণ কি দিবেনা? পাবলিক ইতিহাস কতটুকু জানে? বই পুস্তক ঘাটানোর শাক্তি কতটুকু আছে তাদের মাঝে? পেটের জ্বালা কি মিটে মিষ্টি মিষ্টি বয়ানে? ইতিহাস কি শুধু চায়ের কাপে তুলা ঝড় হলেই কামিয়াব?

না আপনাকে উদাহরণ পেশ করতে হবে। প্রমাণ বা স্বাক্ষর রাখতে হবে। মেধা যোগ্যতার দলিল জনগণ দেখতে চায়। আপনার খতমে দেশের সীমান্ত রক্ষা হবেনা।মিলাদে বসে দেশ পরিচালনা করা যাবেনা। তাবীজ দিয়ে হাসপাতাল চালানো যাবেনা। আপনাকে প্রতিটি ক্ষেত্রে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। আপনি একথা বলে লাভ হবেনা যে আমার চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র। কারণ চোর ডাকাতরাও যদি উদাহরণ সৃষ্টি করে ফেলে তাহলে সে আপনার জন্য ফেক্টর।

আপনাকে হুজরা শরীফ থেকে বেরোতে হবে।মিম্বরের কাজ শেষ করে সামাজের কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। আপনার চেহারা যখন সে আদালতে দেখবে, হাসপাতাল স্কুল কলেজ ভার্সিটিতে দেখবে,পুলিশ সেনা সচিবালয়ে দেখবে, তখন তার চোখ খুলবে। সে ভাবতে শুরু করবে যে না ওরা তাহলে কিছু করার যোগ্যতা রাখে। সাধারণ পাবলিকের কছে ডক্টরেট ডিগ্রী না থাকলেও তারা তাদের ভোটের মাধ্যমে মন্ত্রী এমপি প্রধানমন্ত্রী বানায়। তাই তারা আপনাকও বানাতে আগ্রহী হয়ে উঠবে।

প্রতিদিন লাশ পড়ছে, নারীরা ধর্ষিতা হচ্ছে। অন্যায় অনাচার অত্যাচারে দেশ সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। আর আপনি লড়ছেন একটি মেম্বার আর চেয়ারম্যান পদের জন্য। কয়েক হাজার পদের মাঝে গোটাতিনেক পদ দখল করে আপনি ভাবছেন পরিবর্তন নিয়ে আসবেন? বোকার স্বর্গ বলতে কিছু আছে বলে জানিনা তবে না থাকলেও সেই বোকার রাজ্যেই আপনার বসবাস। একজন মানুষ সে ঘরের মালিক হতে চায়। কিন্তু এই ঘরের রাস্তা ঘাট দরজা জানালা রুম বাথরুম সম্পর্কে তার কোন ধারনা নেই। এমনকি এই ঘরটি রক্ষা করার মতো কোন সরঞ্জামও তার হাতে নেই।ব্যাংক থেকে বিল পাশ করার মতো জরুরী ডকুমেন্টও নেই। এই ঘর যদি কেউ এমনিই তাকে গিফ্ট করে দেয় তারপরও বলবো যে সে এই ঘরের যোগ্য নয়। পাবলিকের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিষয় আসয় সম্পর্কে যার কোন ধারণা নেই।  সে একজন ফিরিস্তা তুল্য মানুষ হলেও তাতে পাবলিকের কাছে একপয়সার মুল্য নেই। পাবলিক চায় নগদ নারায়ন।

ফায়ার সার্ভিসের লোক এসে ট্রেনিং দিয়ে যায় যে আগুন লাগলে কিভাবে বেরুতে হবে বাঁচতে হবে।ভুমি কম্প আসলেও আজকাল বিভিন্ন টেকনিক বলে দেয়া হয় যাতে বিপদের সময় কাজে লাগানো যায়। আপনি সমাজের চলমান স্রোত থেকে বহু দুরে। এই তাগুতি বস্তির রন্ধ্রে রন্ধ্রে শয়তানের রাজত্ব। আপনি কি এসে কিছু ওয়াজ নসিহত করে দোয়া দুরুদ পড়ে আয়াতুল কুরসি পড়ে সমাধান করে নিবেন? না কখনো না। সবকিছুর একটা ট্রেনিং আছে। এই গুনে ধরা সমাজ বিনির্মাণ করতে কি হাতিয়ারের দরকার তা আপনার জানা থাকতে হবে।vote dakati

আপনি চল্লিশ বছর পর এসে বলবেন শয়তানের বাক্স্র (টিভি) এখন দ্বীনের সুটকেস? এই চল্লিশটি বসন্তে কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তার কি হিসেব কষে দেখেছেন? আপনি এখন বলছেন ভিডিও নেটে ইসলাম প্রচার ফরজে আইন! আর তার আগে কত মানুষকে দোজখের ঠিকানায় লাগিয়ে দিয়েছেন ভিডিওর কারণে। সবই বুঝি তবে একটু বেশি দেরী করে। আজ টিভি মিডিয়া নেটে তাগুতের দৌরাত্ম্য। এখন জান বাঁচানোর জন্য হাত পা মরছি।

আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আমি ইসলামের হয়ে থাকবো নাকি স্রেপ ধর্মীয় কিছু অনুশাসন নিয়ে চলবো।যতদিন পর্যন্ত মানব জীবনের তাবৎ প্রয়োজনীয় চারণ ভুমিতে চষে বেড়ানোর কঠিন সংকল্প না হবে তথদিন পর্যন্ত এভাবেই লেজেগোবরে অবস্থা বিরাজ করতে থাকবে অবিরত অভিরাম !!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *