শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ দুপুর ১২:২৪
Home / প্রতিদিন / বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন : চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন : চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য

SIMsকমাশিসা ডেস্ক :: বায়োমেট্রিক বা আঙুলের ছাপ নিয়ে মোবাইল সিম নিবন্ধন ইস্যুতে শুরু হয়েছে অন্যরকম এক লড়াই। চলছে পাল্টা-পাল্টি। প্রচার-অপ্রচার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অপারেটরদের কাছে গ্রাহকদের দেয়া আঙুলের ছাপ সম্পূর্ণ নিরাপদ। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা মাধ্যমে অনেকে বিষয়টি সম্পূর্ণ নিরাপদ নয় দাবি করছেন অনেকে। বলা হচ্ছে, মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে যে ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়া হচ্ছে তা বাইরের দেশে পাচারের মাধ্যমে বেহাত হয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর কোনো দেশে এই প্রকল্প শুরু হয়নি। এ নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রচারণা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গলদঘর্ম হয়ে উঠেছে। তারা এখন উপায় খুঁজছে কিভাবে এ লড়াই মোকাবিলা করা যায়। এদিকে বিভিন্ন প্রচারণার ফলে গ্রাহকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। গতকাল সরজমিন রাজধানীর বেশ কয়েকটি গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে ঘুরে তাদের এ প্রতিক্রিয়ার কথা জানা যায়। গুলশানে সিটি করপোরেশন মার্কেটে সিম নিবন্ধন করতে আসা হানিফ বলেন, সরকারের নির্দেশনা মেনে আঙুলের ছাপ দিয়ে সিম নিবন্ধন করতে এসেছি। কিন্তু এ নিয়ে যা শুনছি তাতে কিছুটা আতঙ্কিত। অপারেটররাও বিষয়টি নিয়ে কিছু বলছে না। গুলশানের শাহজাহান সাজুর মতে, এই ছাপ দেয়া আসলে মারাত্মক ভুল কাজ। কারণ আমরা বিদেশি কোম্পানির কাছে কিসের জন্য এই মূল্যবান ছাপ দিতে যাবো। আর সিম হারিয়ে গেলে আমার নামের সিম নিয়ে কেউ বাজে কাজ করলে তার জবাব আমি দেবো কেন? তবে কেউ কেউ এর ভালো দিকটাও দেখতে পাচ্ছেন। হাসান পারভেজ জানান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। আশা করি আমাদেরই লাভ হবে। দেশের লাভ হবে। এতে অপরাধপ্রবণতা কমবে। আরিফ নামের আরেক গ্রাহক সোহরাব হাসান বলেন, যারা বিভিন্ন ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত শুধু তারাই এর বিরোধিতা করতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার কারণে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। রোববার মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে তিনি বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ নিয়ে শুধু কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে রক্ষিত আঙুলের ছাপের সঙ্গে যাচাই করা হচ্ছে। এখানে কোনোভাবেই এই ছাপ সংরক্ষিত হচ্ছে না। একই ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়ে পরে তা বাতিল করে বিটিআরসি। বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত নীরব ভূমিকা পালন করছে অপারেটররা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিমন্ত্রীর অনুরোধে শিগগিরই তারা গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে প্রচারণা চালাবে। আগামী সপ্তাহ থেকে ওই প্রচারণা শুরু হবে। এ প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অফ মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ-এর (অ্যামটব) মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির গতকাল মানবজমিনকে বলেন, অপারেটররা এ নিয়ে যথেষ্ট আন্তরিক। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। যাতে খুব দ্রুত এই কাজ শেষ হয়, তাদের সদিচ্ছা রয়েছে। অপারেটরদের নীরব ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে তাদের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হবে। এক্ষেত্রে অপারেটররা সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবগুলো অপারেটরের লোগো ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। একই ইস্যুতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যারা অপপ্রচার করছেন, বিরোধিতা করছেন, তাদের ভেরিফিকেশন দরকার। গোড়ায় হাত দেয়া হবে। তাদের খুঁজে বের করা হবে। দুই-একজনকে বের করে ধরতে চাই। ভুয়া পরিচয়ে অথবা নিবন্ধন ছাড়া সিম কিনে নানা অপরাধে ব্যবহারের অভিযোগ বাড়তে থাকায় সমপ্রতি গ্রাহকদের তথ্য যাচাই ও সিম পুনঃনিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর মোবাইল গ্রাহকদের সিমের তথ্য যাচাইয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার ব্যবহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত ১৬ই ডিসেম্বর সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় আঙুলের ছাপ না দিয়ে এখন আর নতুন সিম কেনা যাচ্ছে না। পাশাপাশি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুরনো সিমের পুনঃনিবন্ধন চলছে, যা এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ পর্যন্ত দুই কোটি ৫৩ লাখ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন বা পুনঃনিবন্ধন শেষ হয়েছে। কাজী সোহাগ-মানব জমিন।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...