শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ৪:০২
Home / প্রতিদিন / বিজয়ের মাস ডিসেম্বর (০১)

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর (০১)

41379ইলিয়াস মশহুদ ::
শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ দেশ মাতৃকার টানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি যে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই যুদ্ধের চূড়ান্ত ফল আসে এই মাসে। এ মাসেই রচিত হয় বাঙালির নতুন ইতিহাস। বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় নতুন এক দেশ বাংলাদেশ।
ডিসেম্বর স্মরণ করিয়ে দেয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করা লাল-সবুজের ‘সোনার বাংলা’র। আমাদের লাল-সবুজের পতাকা অর্জন, সেই সঙ্গে সমৃদ্ধশীল একটি দেশ গড়ে তোলার রক্তশপথের কথা। মনে করিয়ে দেয় চুয়াল্লিশ বছর ধরে সেই লাখো প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীন এই দেশে অনাহারে-অর্ধাহারে থাকা মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার কথা।
স্বাধীন দেশে স্বাধীণভাবে মত প্রকাশের কথা। আমাদের প্রাপ্য অধিকারের কথা। আমরা কথা বলব, রাস্তাঘাটে নির্ধিদ্বায় ঘুরে বেড়াব, ধর্ম পালন করব নিশ্চিন্তে, নিরাপদে; কেউ আমাদের বাঁধা দেবে না, কথা বলতে গেলে ঠুঠি চেপে ধরবে না, চলার পথে কেউ বন্দুকের নল তাক করে দাঁড়িয়ে থাকবে না, এমন রঙ্গীন স্বপ্ন দেখেই আমরা প্রতিটি প্রহর পার করি। ভোরের সূর্য দেখি। প্রশ্ন হলো- স্বাধীনতার চুয়াল্লিশবছর অতিক্রম করেও আমরা কী স্বাধীন?

indexআবারো এসেছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। তাই এবারের ডিসেম্বর হোক অঙ্গীকারের মাস। প্রত্যয়বদ্ধ হওয়ার মাস। নতুন চেতনায় জেগে ওঠার মাস। দেশপ্রেমকে শাণিত করার মাস। অধিকার আদায়ের মাস। নতুন করে বিজয়ী হওয়ার  মাস।
মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৪৪ বছর পরও আমরা জাতিগত জীবনে যা অর্জন করতে পারিনি, জাতি হিশেবে এগিয়ে যেতে আমাদের যেসব ঘাটতি রয়েছে, সে সব ঘাটতি পূরণে মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবভিত্তিক আদর্শিক চেতনা সমাজ-রাষ্ট্রে ছড়িয়ে দিতে হবে এই মাসে।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেই ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। দেশকে পিছিয়ে দিতে চায় একটি গোষ্ঠি।  কোনোভাবেই বাংলাদেশের অভ্যুদয় মেনে নিতে পারেনি তারা। এই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে একটি অপাঙক্তেয় রাষ্ট্র হিশেবে প্রমাণ করার চেষ্টা হয়েছে। সংবিধান থেকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অসাম্প্রদায়িক চেতনার দোহাই দিয়ে সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বানানোর কসরত চলছে। ঈমান-আক্বিদা, ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর কৌশলী আক্রমণ এখনো অব্যাহত রয়েছে। সংবিধান থেকে মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস এবং বিসমিল্লাহ উচ্ছেদ করা হয়েছে। ভাবদৃষ্টে মনে হচ্ছে- লাল-সবুজের এ বাংলা যেনো কোনো গোষ্ঠির পৈত্রিক সম্পত্তি।
চলমান ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। জনগণের সম্মিলিত শক্তিই সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করতে পারে। সমুলে উৎপাঠন  করে দিতে পারে। এনে দিতে পারে নতুন মুক্তি। আমাদের স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা। পরাধীনতার জাল ছিন্ন করে বেরিয়ে আসা। স্বাধীনতার চুয়াল্লিশ বছরেও সে লক্ষ্য পূরণ হয়নি। দারিদ্রতা দূরিকরণ সম্ভব হয়নি। ভাব’র বিভেদ এখনো নিঃশেষ হয়নি। জাতি হিশেবে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, আসেনি অর্থনৈতিক মুক্তি। সবার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান নিশ্চিত করা যায়নি। যেদিন দেশের সব মানুষ পাবে প্রকৃত শিক্ষার আলো, পাবে নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা, যেদিন সব মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত হবে, সেদিনই অর্জিত হবে কাঙ্খিত বিজয়। সেদিনের অপেক্ষায় আছি আমরা। সর্বক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে বিজয়। বিজয় মাসের প্রারম্ভে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...