শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৩:৫৮
Home / অনুসন্ধান / সমকামিতার ভয়াবহ পরিণাম!

সমকামিতার ভয়াবহ পরিণাম!

 

এইচ এম এরশাদ সাহেবের ওয়াল থেকে:
বর্তমান বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টিকারী মরণ ব্যাধি এই এইডস, যার পরিণাম নিশ্চিত মৃত্যু। ১৯৮১ সালের দিকে বিজ্ঞানীরা এ রোগের খবর পেলেন। বিজ্ঞানীরা এ রোগের কারণ নির্ণয় করতে গিয়ে বলেন যে, এটি একটি বদমায়েশী রোগ যা শুধু মাত্র বদমায়েশদেরকে আক্রমণ করে। ডা: রবার্ট রেডিফিল্ড বলেন, AIDS is a sexully Transmitted disease. অর্থাৎ এইডস হচ্ছে যৌন অনাচার থেকে সৃষ্ট রোগ। রেডফিল্ড বলেন: আমাদের সমাজের (মার্কিন সমাজের) অধিকাংশ নারী-পুরুষের নৈতিক চরিত্র বলতে কিছুই নেই। কম বেশী আমরা সকলেই ইতর রতি:প্রবণ মানুষ হয়ে গেছি। এইডস হচ্ছে স্রষ্টার তরফ থেকে আমাদের উপর শাস্তি ও অন্যদের জন্য শিক্ষাও বটে। আমেরিকার প্রখ্যাত গবেষক চিকিৎসক ডনডেস সারলাইস বলেন: বিভিন্ন ধরনের পতিতা আর তাদের পুরুষ সঙ্গীরা এইডস রোগ সৃষ্টি, লালন পালন করে এবং ছড়ায়। ডা: জেমস চীন বলেন, দু’হাজার সালের আগেই শিল্পোন্নত দেশগুলোতে ইতর রতি:প্রবণতা প্রাধান্য লাভ করবে। পেশাদার পতিতা ও সৌখিন পতিতাদের সংস্পর্শে যারা যায় এবং ড্রাগ গ্রহণ করে তারাই এইডস জীবানু সৃষ্টি করে এবং তা ছড়ায়। এক কথায় অবাধ যৌনাচার, পতিতাদের সংস্পর্শ, সমকামিতার কু- অভ্যাস ও ড্রাগ গ্রহণকেই এইডসের জন্য দায়ী করা হয়। এইডস সংক্রমণের প্রধান পন্থা যৌন মিলন। শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ আক্রান্ত ব্যক্তিই এ পদ্ধতিতে আক্রান্ত হয়েছে। সারা
বিশ্বের সমাজবিজ্ঞানীসহ বিশ্বে মানবাধিকারের প্রবর্তকরা ঐ সমস্ত ভয়াবহ যৌন সংক্রামক ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়া এবং তা দ্রুত ছড়ানোর প্রধান কারণ হিসেবে সমকামিতা, বহুগামিতা এবং অবাধ যৌনচারকে চিহ্নিত করেছেন।

যৌন সংক্রামক রোগগুলি যেমন এইডস, সিফিসিল, গনোরিয়া, শ্যাংক্রয়েড, লিম্ফোগ্র্যানুলোমা, ভেনেরিয়াম, ডানোভেনোসিস ও অন্যান্য। এর মধ্যে এইডস সবচেয়ে ভয়াবহ। এই রোগগুলিতে আক্রান্ত রোগীর সাথে মেলামেশা বা যৌন মিলনের মাধ্যমে সুস্থ লোক আক্রান্ত হয়। অত্যন্ত আতঙ্ক ও হতাশা সৃষ্টিকারী মরণ ব্যাধি এইডস আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে ১৯৭৯ ইং সালে সমকামী এক ব্যক্তির কাছে প্রকাশ পায়। তারপর এই ভয়াবহ রোগে যারা আক্রান্ত হতে থাকে তাদের অধিকাংশ লোকই সমকামী। এ ভয়ঙ্কর রোগটির সংক্ষিপ্ত নাম (AIDS) ইংরেজীতে AIDS এর পুরা বাক্য হচ্ছে Accrued Immune Deficiency Syndrome (একোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিন্ড্রম) অর্থাৎ- শরীরের অর্জন করা সুরক্ষিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অব্যহতি বা বিলুপ্ত হওয়া।

ডা: মুহাম্মাদ মনসুর আলী বলেন :
বর্তমান কালের সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাধি এইচ. আই. ভি। এইডস এমনই এক সময়ে সমগ্র বিশ্বে চরম আতঙ্ক এবং নিরতিশয় হতাশা সৃষ্টি করেছে যখন
চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নতির অত্যুঙ্গ শিখরে অবস্থান করছে। এ মরণ ব্যাধির উৎপত্তি এবং বিস্তারের কারণ হিসাবে দেখা গেছে চরম অশ্লীলতা, যৌন বিকৃতি ও কুরুচিপূর্ণ সমকাম ও বহুগামীতার মত পশু সুলভ যৌন আচরণের উপস্থিতি। শতকরা প্রায় ৯৫% সমকামী এবং বহুগামী পুরুষ ও মহিলাদের মাধ্যমে এইডস সমগ্র বিশ্বে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এবং দিন দিন এইডস নামক মরণব্যাধিতে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে। জাপানের বাৎসরিক বিশ্ব প্রচার সংস্থা উল্লেখ করেছে যে, সেখানে অনেকের অভিমত, বিশ্বে এইডস রোগ ছড়ানোর পিছনে রয়েছে আমেরিকা। তারা আরও উল্লেখ করেছে যে, বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ায় এইডস রোগ বিস্তার করেছে আমেরিকাবাসী। সদা সর্বদা দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪০ হাজার আমেরিকান সৈন্য রয়েছে। রদবদল ও তাদের সাথে সাক্ষাত করার জন্য প্রতি বছর হাজার হাজার আমেরিকান ওখানে গমন করে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এর সংখ্যা ছিল প্রায় ১০,০০,০০০ (দশ লক্ষ), পশ্চিম জার্মানে ছিল এক লক্ষ, আর শতকারা ৯৮% জন এই রোগে আক্রান্ত
রোগী অজানা অবস্থায় ছিল। এ এইডস রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর শতকরা ৪৮ জন রোগী সাধারণত: ১ বছরের মধ্যে মারা যায়। [1] বিশ্বব্যাপী এ ব্যাধি শুরু থেকে ব্যাপক আকারে দেখা দেয়া পর্যন্ত প্রায় ১৩ মিলিয়ন নারী-পুরুষ ও শিশু এইচ, আই, ভি, তে আক্রান্ত হয়েছে যা এইডস রোগের কারণ। বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী ২০০০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ মিলিয়ন এবং এইডস রোগীর সংখ্যা ১২ থেকে ১৮ মিলিয়ন হতে পারে। প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার লোক এইচ আই ভি, তে আক্রান্ত হচ্ছে। [2] এ ভয়ংকর ব্যাধি আল্লাহর দেয়া বিধি নিষেধ অমান্যকারীদের উপর
গযব হিসাবে দেখা দিয়েছে। বর্তমান বিশ্বে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ১ কোটি ৭০ লাখের বেশী লোক এইডস এ আক্রান্ত হয়েছে বলে বিশ্ব সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশী বিদেশী পত্র পত্রিকায় খবর পাওয়া গেছে। ১৯৯৬ সালের জুন পর্যন্ত দুই কোটি পঞ্চাশ লক্ষ প্রাপ্ত বয়স্ক লোক এইচ, আই, ভি, সংক্রমিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের দুই কোটি দশ লক্ষ এ পর্যন্ত এইচ, আই, ভি, সংক্রমিত রয়েছে এবং ৪৫ লক্ষ লোক এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।[3] এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
ﻓَﺄَﺻَﺎﺑَﻬُﻢْ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺕُ ﻣَﺎ ﻛَﺴَﺒُﻮﺍ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻇَﻠَﻤُﻮﺍ ﻣِﻦْ ﻫَﺆُﻟَﺎﺀِ
ﺳَﻴُﺼِﻴﺒُﻬُﻢْ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺕُ ﻣَﺎ ﻛَﺴَﺒُﻮﺍ ﻭَﻣَﺎ ﻫُﻢْ ﺑِﻤُﻌْﺠِﺰِﻳﻦَ .
তাদের দুস্কর্ম তাদেরকে বিপদে ফেলেছে, এদের মধ্যে যারা পাপী তাদেরকেও অতি সত্ত্বর তাদের দুস্কর্ম বিপদে ফেলবে। তারা তা প্রতিহত করতে সক্ষম হবে না।”[4] আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন :
ﻗُﻞْ ﻫُﻮَ ﺍﻟْﻘَﺎﺩِﺭُ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﻥْ ﻳَﺒْﻌَﺚَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺑًﺎ ﻣِﻦْ ﻓَﻮْﻗِﻜُﻢْ ﺃَﻭْ ﻣِﻦْ
ﺗَﺤْﺖِ ﺃَﺭْﺟُﻠِﻜُﻢْ .
“আপনি বলুন, তিনি (আল্লাহ) তোমাদের উপর দিক থেকে এবং তোমাদের পদতল থেকে তোমাদের উপর আজাব পাঠিয়ে দিতে সক্ষম।”[5] নিশ্চয়ই এই এইডস নামক শাস্তি যা বর্তমান বিশ্বকে ঘিরে রেখেছে তাতে শারীরিক ও মানসিক যে শাস্তি ও বেদনা রয়েছে তা আক্রান্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুর পূর্বেই হাজার বার হত্যা করে থাকে। জিম শ্যালী এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮৭ সালে ৭ই মার্চ মারা যায়। মৃত্যুর পূর্বে সে বলেছে: আমার শরীরে একটা ভাইরাস আছে, সেটা আমার সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ খেয়ে ফেলছে। মাঝে মাঝে আমি জেগে উঠি। তখন আমি ওর অস্তিত্ব টের পাই, আমাকে কুড়ে কুড়ে খেয়ে ফেলেছে। আর এ মরণব্যধির উৎপত্তি ঘটেছিল লূত আ.- এর সমপ্রদায়ের কুকর্মের মাধ্যমে। আর সেটি হলো, লূত আ. এর সমপ্রদায় ব্যভিচার করেছিল, মহিলাদের বাদ দিয়ে পুরুষে-পুরুষে। সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “আমি লূতকে প্রেরণ করেছি, যখন সে তাঁর সমপ্রদায়কে বলল: তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বের কেউ করেনি। তোমরা তো নারীদের ছেড়ে কামবশত: পুরুষদের কাছে গমন কর। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ। [6] অপর এক আয়াতে বলা হয়েছে : সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরুষদের সাথে কুকর্ম কর? আর তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্য যে স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে বর্জন কর। বরং তোমরা সীমা লংঘনকারী সমপ্রদায়। [7] ইব্ন কাছীর রহ. বলেন : সাদূম সমপ্রদায়ের ধ্বংসের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট ফেরেশ্তাগণের এ দলটির প্রধান ছিলেন জিবরাঈল, ‘আলাইহিস্ সালাম এবং অপর দু’জন ছিলেন মীকাঈল, ও ইস্রাফীল ‘আলাইহিস্ সালাম। [8] আস-সুদ্দী রহ. এর মতে, ফেরেশ্তাদের সংখ্যা ছিল চারজন, তাঁরা হলেন : জিব্রাঈল, মীকাঈল, ইস্রাফীল এবং রাফাঈল ‘আলাইহিস্ সালাম। [9] ইবরাহীম ‘আলাইহিস্ সালামের ভীতি ভাব দূরীভূত হলে তিনি ফেরেশ্তাগণের সাথে লূত সমপ্রদায়ের ধ্বংসের ব্যাপারে যুক্তিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। তিনি বললেন : সাদূমবাসীর মধ্যে যদি ৫০ জন ঈমানদার মানুষ থাকে, তবুও কি তাদেরকে ধ্বংস করা হবে? ফেরেশ্তাগন বললেন : তাদের মধ্যে ৫০ জন মু’মিন থাকলে তাদেরকে ধ্বংস করা হবে না। ইবরাহীম ‘আলাইহিস্ সালাম বললেন ৪০ জন, ৩০ জন, ২০ জন, এ ভাবে শেষ পর্যন্ত বললেন : যদি ১০ জন মু’মিন থাকে? ফেরেশ্তাগণ বললেন : ১০ জন মু’মিন থাকলেও তাদেরকে ধ্বংস করা হবে
না। অন্য এক বর্ণনায় সা‘ঈদ ইব্ন জুবায়র, সুদ্দী, কাতাদাহ ও মুহাম্মদ ইব্ন ইসহাকের সূত্রে ইব্ন কাছীর রহ. যে সংখ্যা উল্লেখ করেছেন তা হল পর্যায়ক্রমে নিম্নরূপ : ৩০০ জন, অতঃপর ২০০ জন, অতঃপর ৪০ জন, অতঃপর ১৪ জন মু’মিন থাকলেও ফেরেশ্তাগণ লূত ‘আলাইহিস্ সালামের সমপ্রদায়কে ধ্বংস করবে না বলে ইবরাহীম ‘আলাইহিস্ সালামকে নিশ্চয়তা দেন। ইব্ন ইসহাকের বর্ণনায় আছে, ইবরাহীম ‘আলাইহিস্ সালাম শেষ পর্যন্ত বললেন : যদি একজন মু’মিন থাকে? ফেরেশ্তাগন বললেন : একজন মু’মিন থাকলেও তাদেরকে ধ্বংস করা হবে না। অপর এক বর্ণনায় জানা যায় যে, উক্ত সংখ্যা ছিল : ৪০০ জন, ৩০০ জন, ২০০ জন, ১০০ জন, ৪০ জন ও ১ জন।[10] ইব্ন কাছীর রহ. বলেন : ফেরেশ্তারা বলল : আমরা তাঁর তথা লূত ‘আলাইহিস্ সালামের স্ত্রীকে বাঁচাব না, সে তাদের কুফর এর উপর অধিক উৎসাহিত করত এবং তাদেরকে অশ্লীল কাজের জন্য উৎসাহ যোগাত। তিনি আরও বলেন : জিব্রাঈল ‘আলাইহিস্ সালাম লূত ‘আলাইহিস্ সালামের সমপ্রদায়ের বসতিকে সূর্যোদয়কালে বিকট শব্দে মূল হতে উৎপাটন করে আসমান পর্যন্ত উত্থিত করলেন এবং তা উল্টিয়ে নিক্ষেপ করলেন। [11] এ ছাড়া তাদের ঐ বসতিতে একটি চিহ্নিত পাথরও ছুড়লেন। আর তাদের ঐ বসতিকে একটি দুর্গন্ধময় তিক্ত পানির সাগরে পরিণত করে দিলেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা একটি উপদেশমূলক স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রেখে দিলেন। আর কিয়ামত দিবসেও তারা কঠিন শাস্তি ভোগ করবে।[12] এ আয়াত ও হাদীসগুলোর মাধ্যমে চৌদ্দ শত বছর আগে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে বাণী প্রচার করে গেছেন, আজ একবিংশ শতাব্দীর প্রথম প্রান্তে এসে পবিত্র ধর্মের বিধানের মাঝে বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন সত্যের সন্ধান ও আশ্রয়। বর্তমান বিশ্বের প্রতি আমরা যদি নজর দেই তাহলে দেখতে পাই যে, আমেরিকা, ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে মাত্র কয়েক বছর পূর্বে এমন রোগ দেখা দিয়েছে এবং তারপর তা বিভিন্ন দেশে দ্রুত প্রসার লাভ করে অল্প সময়ে হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ১৯৮৫ সালের অন্য এক পরিসংখানে বলা হয়েছে : ১৪,৭৩৯ জন এইডস রোগে আক্রান্ত রুগীর মধ্যে ১০৬৫৩ জন রুগীই পুরুষ সমকামী।

আমেরিকার মত উচ্চ শিক্ষিত সূসভ্য এবং সর্বদিক থেকে শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার হয়ে সমকামীতার মত নিকৃষ্ট ঘৃণিত মানবতা বিরোধী অশ্লীলতাকে যদি আইন করে বৈধ করে তাহলে কি ভাবে সম্ভব অশ্লীলতাসহ মানব সভ্যতা ধ্বংসের সকল ধরণের কর্মকান্ডগুলো প্রতিরোধ প্রতিহত করে বিশ্ব সমাজে মানব সভ্যতা পুন: প্রতিষ্ঠা করা? কাম প্রবৃত্তি ও লোভ-লালসার জালে আবদ্ধ হয়ে লজ্জা-শরম ও ভাল-মন্দের স্বভাবজাত পার্থক্য বিসর্জন দিয়ে পার্লামেন্টে সমকামিতা বিল পাশ করে রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রকাশ্যে বৈধ ঘোষণা করেছে। ব্যভিচার যখন পার্লামেন্টে বৈধ ঘোষণা করা হয় তখন স্বাভাবিক-ভাবেই তা সমাজে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। আর তখনই সেই সমাজ আল্লাহর গজবের উপযুক্ত হয়ে যায়। তারা এমন প্রকৃতির বিরুদ্ধে নির্লজ্জতায় লিপ্ত হয় যা হারাম ও গোনাহ তো বটেই, সুস্থ স্বভাবের কাছে ঘৃণ্য হওয়ার কারণে সাধারণ জন্তু জানোয়ারও এর নিকটবর্তী হয় না। মানুষের পাশবিক ও লজ্জাকর অশোভন আচরণ যে কত দ্রুত সমাজ সভ্যতাকে ধ্বংসের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়, আধুনিক শিক্ষিত পাশ্চাত্য সমাজ ব্যবস্থা কিভাবে ভয়াবহ ধ্বংসের মুখোমুখি এসে
দাঁড়িয়েছে তা সমস্ত বিশ্ববাসী আজ হাড়ে হাড়ে উপলদ্ধি করতে পারছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: যারা নিকৃষ্ট বস্তু অর্জন করেছে তার বদলাও সেই
পরিমাণ নিকৃষ্ট এবং অপমান তাদের চেহারাকে আবৃত করে ফেলবে। তাদেরকে আল্লাহর হাত থেকে বাঁচাতে পারবে এমন কেউ নেই।[13] আজ এইডস আতংকে সমগ্র বিশ্ব প্রকম্পিত, সমস্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত, সারা বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ এই ভয়াবহ মরণব্যধি ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। এই মহামারী এইডস থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে এবং করছে। কিন্তু সকল প্রচেষ্টা সমূলে ব্যর্থ হয়েছে এবং তারা বলছে, এইডস রোগের কোন চিকিৎসা নেই। কুরআনে বর্ণিত রয়েছে : আল্লাহর পক্ষ থেকে অবশ্যম্ভাবী দিবস আসার পূর্বে তোমরা তেমাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য কর। সেদিন তোমাদের কোন আশ্রয় স্থল থাকবে না এবং তা নিরোধকারী কেউ থাকবে না।[14] বর্তমান দুনিয়ায় পারিবারিক,
সামাজিক, জাতীয়, এমন কি আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে যে অশান্তি বিরাজমান রয়েছে তার কারণ হলো পবিত্র কুরআনের শিক্ষা মেনে না চলা এবং প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহান আদর্শ অনুসরণ না করা। তাই আজকের অশাস্ত পৃথিবীতে শান্তি এবং বিভিন্ন জটিল, দুরারোগ্য ও ধ্বংসাত্মক ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভের একমাত্র উপায় হল পবিত্র কুরআনের মহান শিক্ষা গ্রহণ এবং যাবতীয় বিধি নিষেধ যথাযথ ভাবে পালন। আর শান্তির দূত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহান আর্দশের বাস্তবায়ন।
বিশ্বের এই মহা দূর্যোগের সময় ইসলামের এই ধ্রুব সত্য ও হুশিয়ারী বাণী উপলদ্ধি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এইডস প্রতিরোধে ধর্মীয় অনুশাসনের গুরুত্ব অনুধাবন করতে বাধ্য হয়েছে। তাই WHO এ মর্মে ঘোষণা করেছে :
ÒNothing can be more helful in this preven:ive effort than religious teachings and the adoption of proper and decent behavior as advocated and urged by all divine religions (the role of Religion and ethics in the prevention and control of AIDS.Ó
“এইডস প্রতিরোধ প্রচেষ্টায় ধর্মীয় শিক্ষাদান এবং যথাযথ নির্মল আচরণ প্রবর্তনের চেয়ে আর কোন কিছুই অধিক সহায়ক হতে পারে না যার প্রতি সকল ঐশ্বরিক ধর্মে সমর্থন প্রদান ও গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।” [15] ডা: মো: মনসুর আলী বলেন: “এখন পর্যন্ত এইডস ভাইরাস প্রতিরোধ বা প্রতিহত করার কোন ওষধ বা টিকা আবিস্কৃত হয়নি। তাই আক্রান্ত ব্যক্তির নিরাময়েরও কোন সম্ভাবনা নেই। অর্থাৎ এইডস এর পরিণাম নিশ্চিত মৃত্যু। এই ভয়াবহ মরণ ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে হলে, বাঁচতে হলে অবশ্যই পরিচ্ছন্ন এবং পবিত্র বৈবাহিক জীবন যাপন করাই একমাত্র উপায়। এর জন্য সত্যিকার ভাবে যা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ তা হল ধর্মীয় অনুশাসন কড়াকড়ি ভাবে মেনে চলা।” এ থেকে মুক্তি পাবার জন্য ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতা জাগিয়ে অবাধ যৌনাচার থেকে বিরত রাখার মধ্যেই রয়েছে প্রতিবিধান।
চরিত্রের উত্তম গুণাবলী দিয়ে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলে এইডস প্রতিরোধ করার আজকের দাবী প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর বাণী ও রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসের প্রতিধ্বনি মাত্র। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: যারা ঈমান আনে এবং ¯^xq বিশ্বাসকে শিরকের সাথে মিশ্রিত করে না, তাদের জন্যই শান্তি ও নিরাপত্তা এবং তারাই সুপথগামী। [16] সুতরাং আমাদের সকলের উচিত যে, কুর’আন, সুন্নাহ ও ইসলামী হুকুমত অনুযায়ী নিজেদের জীবন পরিচালনা করে দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণকামী হওয়া এবং সে সম্পর্কে যথেষ্ট আমল করে নিজেদের আল্লাহ্ অনুগ্রহ পাওয়ার যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা। আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদের সকলকে এ সুতৌফিক দান করুন। আমীন। কপিকৃত পোষ্ট।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...