শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সকাল ৮:৫৭
Home / আমেরিকা / মিস্টার প্রেসিডেন্ট! বাস্তবতায় ফিরে আসুন

মিস্টার প্রেসিডেন্ট! বাস্তবতায় ফিরে আসুন

আমেরিকা থেকে রশীদ জামীল::
-প্রতিবাদ সভায় আহমাদ আবু সুফিয়ান

আমেরিকা জুড়ে অস্বস্থির হাওয়া। লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায়। কী হচ্ছে আর কেনো হচ্ছে, সেটা আর ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখছে না। গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে সারা বিশ্বই আজ বিশ্বে-খবর জেনে যায়।

গতকাল সন্ধ্যায় নিউ নিয়র্ক’র ম্যানহাটনে সর্ব ধর্মীয় এক প্রতিবাদ সভায় ইসলামিক কাউন্সিল অব আমেরিকার খতিব, হাফিজ মাওলানা Ahmad AbuSufian ‘র দেয়া বক্তব্যটি ছিল অসাধারণ! মূল বক্তব্যটি ব্যাপকভাবে ঘুরাঘুরি করছে অনলাইনে। আমেরিকান বাংলাভাষী বাঙালিদের সুবিধার জন্য বক্তব্যটির মূল বক্তব্য বাংলান্তর করে দিলাম। পুরো বক্তব্যের লিংক প্রথম কমেন্টে যুক্ত করছি।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা!
মিস্টার প্রেসিডেন্ট যেদিন ক্ষমতা গ্রহণ করেন, শুক্রবার ছিল সেদিন। আমাদের জুমার নামাজ ছিল। আমি তাঁর বক্তব্য সরাসরি শুনতে পারিনি, কারণ, আমি নামাজে যাচ্ছিলাম। ড্রাইভ করতে করতে বক্তব্য শুনছিলাম। সেদিন আমি আমার মুসল্লিদের নিয়ে আমাদের প্রেসিডেন্টের সাফল্যের জন্য দোয়াও করেছি। কিন্তু পরের দিন, তারপরের দিন, সোমবার, মঙ্গলবার, গত শুক্রবার… আমি ফিগার আউট করলাম আমাদের প্রেসিডেন্ট কমপ্লিটলি বাস্তবতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। যাত্রা করছেন অবাস্তব বাস্তবতার দিকে।

উদ্ভোধনি বক্তৃতায় তিনি বাইবেলে হাত রেখে প্রতিজ্ঞা করলেন। বাইবেলেও বাস্তবতা আছে। তিনি আমেরিকান সংবিধান রক্ষার শপথ করলেন। সংবিধানেও বাস্তবতার কথা বলা আছে। বিকল্প বাস্তবতার কথা বলা নাই।
কী সেই বাস্তবতা?

আমেরিকার সংবিধান যাঁরা প্রণয়ন করেছেন, তাঁরা মানুষ ছিলেন। এ জন্যই তাঁরা সংবিধানে মানবতা এবং মানুষের প্রতি সদাচরণ এবং সম্মানের কথা বলে রেখেছেন। কিন্তু আমাদের প্রেসিডেন্ট এখন পর্যন্ত বাস্তবতা ছেড়ে অবস্তবতার দিকে ছুটে চলেছেন। বাস্তবতার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না, অথচ তাকানো উচিত ছিল। একটার পর একটা এক্সিকিউটিভ অর্ডার সাইন করে চলেছেন। সাতদিনে সম্ভবত সতেরোটি করে ফেলেছেন! এরমধ্যে প্রথম যে অধ্যাদেশটি স্বাক্ষর করেছেন তিনি, সেটি হচ্ছে মানবতার মধ্যেখানে দেয়াল নির্মাণ করার। আর এটা করে তিনি মানুষকে সম্মান করার এবং মানবতার জন্য কাজ করার সাংবিধানিক প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করলেন। একই সাথে তিনি জিসাসের শিক্ষা peace and blessings of God be upon him’র প্রতিও অসম্মান দেখালেন।

আমি ১৯৯৭ সালে আমেরিকায় এসছি। জুলাই ১৭, ২০০৯ সালে আমেরিকান সিটিজেন হয়েছি। সিটিজেনশিপ গ্রহণের সময় সবাইকে শপথ করতে হয়। আমিও করেছি। আমিও প্রতিজ্ঞা করেছি সংবিধান ও দেশ রক্ষার, দেশকে অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত এমন যে কোনো ধরণের দুশমন থেকে রক্ষা করার। যে বা যারা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ত্ব নষ্ট করতে চাইবে, ত্যাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। সেই প্রতিজ্ঞাকে স্মরণে রেখ বলতে চাই, জীবনের শেষ বিন্দু অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত আমি আমার প্রতিজ্ঞায় অটল থাকব।

মিস্টার প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, মানুষের শরীরের কালার, জাতীয়তা, বিশ্বাস এবং ধর্মীয় পরিচয়ের উপর ভিত্তি করে তাদেরকে ব্যান করার প্রবণতা কমপ্লিটলি অনামবিক এবং অসাংবিধানিক। সুতরাং বাস্তবতায় ফিরে আসুন। মানুষের দিকে তাকান। মিলিয়ন্স অব আমেরিকান পিপলস আজ রাস্তায়। হাতে হাত রেখে আপনার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছে তাঁরা। একটি মানবিক কান্ট্রি থেকে মানবতাকে আপনি ব্যান করতে পারেন না। এটি অবাস্তব চিন্তা।

আর,
আপনার কাছে যদি মনেহয় বিকল্প বাস্তবতার কোনো জায়গা আছে, তাহলে আপনি ওখানে চলে যান। আমরা আপনার অন্যায় সিদ্ধান্ত মেনে নেব না। আপনি বাস্তবতায় ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। সবাইকে ধন্যবাদ।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...