শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ৮:৫৪
Home / সাহিত্য-সংস্কৃতি / মুসলিম সমাজে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রভাব (শেষ পর্ব)

মুসলিম সমাজে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রভাব (শেষ পর্ব)

মাসুম আহমদ :

অপরদিকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন কাফির গোষ্ঠীর এমন সুচারু পরিকল্পনার ফসল যে, দাসত্ব অর্জনকারী জনগোষ্ঠী ঠেরই পায় না, তারা গোলামীর জিন্দেগী অতিবাহিত করছে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সম্পর্কে আলোচনার প্রথমেই শব্দটির তাৎপর্য মনে রাখা দরকার। আগ্রাসন ইংরেজি ভাষার শব্দ। যার বাংলা অর্থ হচ্ছে, বিনা উত্তেজনায় আক্রমণ করা। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ‘আগ্রাসন’ শব্দটি যথার্থ কিনা বিষয়টি তর্ক-সাপেক্ষ। তবে এখানে যে অর্থে ব্যবহৃত হয়, তা হচ্ছে ‘তোমার পছন্দের উপর আমার পছন্দকে কৌশলগতভাবে এমনভাবে চাপিয়ে দেবো, যাতে তুমি পর্যায়ক্রমে প্রভাবিত হও এবং একসময় আমার পছন্দকে গ্রহণ করো’।

উদাহরণস্বরূপ দেখি যে, উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন চলাকালীন পরিকল্পিতভাবে আধুনিক এক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা হয়; যার প্রভাবে বাহ্যত স্বাধীন থাকলেও এদেশের অধিকাংশ মানুষ যুগ যুগ ধরে মেধাগতভাবে দাস হয়ে আছে। কিন্তু নিজেদের দাসত্ব সম্পর্কে তারা মোটেও বুঝতে পারছে না। তাদের চিন্তা চেতনায় পাশ্চাত্যের প্রভাব সুস্পষ্ট। অথচ তারা চিন্তাভাবনায় নিজেদের স্বাধীন ভাবছে। ইলমে মানতিকের পরিভাষায় এই জনগোষ্ঠীকে “মুরাক্কাবে জাহিল” বলা যায়।

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দাসত্বের প্রভাব এতো ভয়াবহ যে, দাসত্ব বরণকারী গোষ্ঠী ভালোকে মন্দ, মন্দকে ভালো, উপকারকে অপকার, অপকারকে উপকার, বন্ধুকে শত্রু আর শত্রুকে বন্ধু মনে করে থাকে। অনেকটা পুতুলের মতো এদের অবস্থান।

বর্তমান সময়ের বাস্তবতা হচ্ছে, মানসিক দাসত্ব মুসলমানদের কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন পরিচালনার পথে বিপত্তির সৃষ্টি করছে। নিজেদের ভালোমন্দ সম্পর্কে কুরআন হাদিসের আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আধুনিক শিক্ষিত মুসলিম জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই এখন পাশ্চাত্যের চাকচিক্যকে নিজেদের জীবন পথের আদর্শ ভাবছে। লেখক শ্রেণী পাশ্চাত্যের অনুকরণে সাহিত্য চর্চা করছে। মিডিয়া গোষ্ঠী পাশ্চাত্যের ভাবনাকে নিজেদের উৎস-মূল ভেবে অনুসরণ করছে। সবাই নিজেদের অজ্ঞাতে সাংস্কৃতিক দেউলিয়াপনার শিকার।

এই অজ্ঞতা ও পাশ্চাত্যের অনুকরণ মুসলিম সমাজের বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি করছে। হারিয়ে যাচ্ছে ইসলামী মূল্যবোধ। তৈরি হচ্ছে নীতি নৈতিকতায় উদাসীনতা।
কুরআন হাদিসের আলোকে কিয়ামত পর্যন্ত যাদের জাত শত্রু আর জন্ম শত্রু থাকার কথা ছিলো, তারাই বন্ধু হিসেবে আসন গ্রহণ করছে আর একই কালেমার অনুসারী একে অপরকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু ভাবছে। এখানেই ইসলামবিদ্বেষীদের সফলতা ও আমাদের ব্যর্থতা।

আরও পড়ুন : মুসলিম সমাজে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রভাব (১ম পর্ব)

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

৪৩ টি পতিতালয়ের মালিকের লেখা কবিতা কেন আমাদের জাতীয় সঙ্গীত?

ফেসবুকীয় মতামত-:: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়বিরোধী রবী ঠাকুরের কবিতা কেন আমাদের জাতীয় সঙ্গীত? জাতি তা জানতে চায়…… ...