শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সন্ধ্যা ৭:৫৬
Home / আন্তর্জাতিক / সাদ্দাম হোসেনকে জেরা করেছিলেন যিনি

সাদ্দাম হোসেনকে জেরা করেছিলেন যিনি

অনলাইন ডেস্ক : ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন মার্কিন বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সে সময় মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর কর্মকর্তা জন নিক্সন তাঁকে শনাক্ত ও জেরা করেন।

১৯৯৮ সালে সিআইএতে যোগ দেওয়ার পর থেকে সাদ্দাম হোসেনের বিষয়ে বিশেষভাবে তত্ত্ব-তালাশ চালাতেন নিক্সন। তাই সাদ্দামকে জেরা করার জন্য তাঁরই ডাক পড়ে।

সাদ্দাম হোসেনের জীবদ্দশায় একটি কথা বেশ চালু ছিল যে নিরাপত্তার জন্য একই চেহারার কয়েকজন সাদ্দাম ছিলেন। তবে নিক্সন বলেন, ‘তাঁকে দেখার পর আমার সাদ্দামকে চিনতে একটুও কষ্ট হয়নি। আমি নিশ্চিত ছিলাম, এই মানুষটিই সাদ্দাম। আমার ডেস্কে অনেক বছর ধরে পড়ে থাকা একটি বইয়ে সাদ্দামের যে মুখভঙ্গি রয়েছে, আলাপ শুরু করার পর দেখি, সেই একই মুখ।’

নিক্সনই প্রথম ব্যক্তি, যিনি সাদ্দামকে জেরা করেছিলেন। তবে সেই জেরা করার মুহূর্তটি সিআইএর এই কর্মকর্তার কাছে ছিল বিস্ময়কর। তিনি বলেন, ‘আমি নিজের গায়ে চিমটি কেটে নিশ্চিত হয়েছিলাম যে আমিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফেরারি মানুষটিকে জেরা করছি। আমার কাছে একেবারে আজগুবি ঠেকেছিল বিষয়টি।’

নিক্সন বলেন, নানা বিপরীতমুখী বৈশিষ্ট্য ধারণ করেছিলেন সাদ্দাম হোসেন নামের মানুষটি। নিক্সন সাদ্দামের ‘মানবিক দিক’ দেখেছিলেন। তিনি বলেন, মার্কিন গণমাধ্যমে সাদ্দামকে যেভাবে তুলে ধরা হয়, এটি তার একেবারে বিপরীত। নিক্সন আরও বলেন, ‘আমি এযাবৎ যত মানুষকে জেরা করেছি, এর মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর চরিত্র ছিলেন সাদ্দাম। তিনি চাইলেই চমৎকার, নম্র আচরণ করতেন। কৌতুকবোধও ছিল তাঁর মধ্যে।’

সাদ্দাম চরিত্রের এসব বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি নিক্সন তাঁর অন্ধকার দিকের দিকেও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, মাথা গরম হয়ে গেলে সাদ্দামের প্রচণ্ড বদরাগী, অসভ্য ও নীচু মানসিকতার চরিত্রটি প্রকাশ হয়ে পড়ত।

নিক্সন বলেন, ‘দুই বা তিনবার আমার প্রশ্ন সাদ্দামের এই চরিত্র জানান দিয়েছিল।’

একটি ছোট কক্ষে বন্দী সাদ্দামকে জেরা করেন নিক্সন। একটি চেয়ারে তাঁকে বসতে দেওয়া হয়েছিল। জেরার সময় শুধু নিক্সন, জবানবন্দি ধারণকারী এবং একজন দোভাষী থাকতেন।

জেরার শুরুতেই সাদ্দামের সঙ্গে একটি সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন নিক্সন। শুরুটা ভালোই হয়েছিল। তবে ক্রমেই সাদ্দাম অনেক বেশি ধন্দ সৃষ্টি করতে শুরু করেন।

জেরার একটি বড় অংশজুড়ে ছিল গণবিধ্বংসী অস্ত্র (ডব্লিউএমডি)। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এ যুদ্ধ শুরুর আগে সাদ্দামের বিরুদ্ধে এ অস্ত্র তৈরির অভিযোগ এনেছিলেন। নিক্সন বলেন, এ বিষয়টির প্রতিই হোয়াইট হাউসের মূল আকর্ষণ ছিল। তবে সাদ্দামকে জেরা, তাঁর উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা এবং বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, সাদ্দাম তাঁর দেশের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছিলেন এ যুদ্ধের কয়েক বছর আগেই। আর এ কার্যক্রম শুরুর কোনো ইচ্ছেও তাঁর ছিল না।

সাদ্দামকে জেরার করার পাঁচ বছর পর ২০০৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশকে সেই জেরা সম্পর্কে জানানোর ডাক পান তিনি। নিক্সন হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি বুশ ও সাদ্দাম—দুই ব্যক্তির সঙ্গেই করমর্দন করেছিলেন। তবে নিক্সন বলেন, প্রেসিডেন্ট বুশ বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে ছিলেন। সিআইএর কর্মকর্তা নিক্সন বলেন, সাদ্দামকে উৎখাতের পর ইরাকে যা ঘটেছে, তা নিয়ে তিনি লজ্জিত।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

ইদলিবের মাধ্যমেই সিরিয়ার বিজয় সুচিত হবে ইনশাআল্লাহ!

ইদলিবে শিয়া মুনাফেক রুশ কাফেরদের এক কথায় তুলাধুনা চলবে……. প্রস্তুত তুরস্কের নৌবাহিনী সেনাবাহিনী বিমানবাহিনী। ইতিমধ্যেই ...