বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সকাল ৬:৩৬
Home / আকাবির-আসলাফ / প্রিয় উবায়দুল্লাহ! সত্যি সত্যিই আজ চলে গেলেন আপনি!

প্রিয় উবায়দুল্লাহ! সত্যি সত্যিই আজ চলে গেলেন আপনি!

রশীদ জামীল :

ভালোই করেছেন। অকৃতজ্ঞ এই পৃথিবী থেকে চলে গিয়ে বরং ভালোই করেছেন। এই পৃথিবী আপনার ছিল না। যার জন্য ছিল আপনার আপনিত্ব, সকাল থেকে সায়াহ্ন, সেখানে চলে গিয়ে আসলেই ভালো করেছেন। সেটাই আপনার ভালো ঠিকানা।

 

পাঁচবারের মত মেজর স্টোক করেছিলেন আপনিi। তবুও ছিলেন। হয়ত জানতে, আমরা কতদিন অকৃতজ্ঞতার নজরানা পেশ করে যেতে পারি। আজ আর পারলেন না। অথবা আর চাইলেন না। চলেই গেলেন দুনিয়া ছেড়ে। ভালো থাকুন আপনি।

 

প্রিয় ক্বারী!

একটু আগে কথা বললাম আপনার ছেলে মাওলানা ক্বারী আব্দুল্লাহ বিন উবায়দুল্লাহর সাথে। তিনি জানালেন, শেষ কিছুদিন অন্যের সহায়তায় একটু-আধটু হাঁটাচলাও নাকি করে ফেলতেন আপনি!। গত সপ্তাহে চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে ব্যথা পাবার পর আর ওঠে দাঁড়াতে পারেননি। আজ চলে গেলেন কোরআনের জগতে।

 

ছয়-সাত বছর আগে এই লেখাটি পড়ে প্রিয় ক্বারী কেঁদেছিলেন অনেক। ঝাপসা চোখে লেখাটি খুঁজে বের করে আজ আবার পড়তে দিলাম সবাইকে। আমরা কেমন কৃতজ্ঞ জাতি, বারবার জানা দরকার।

———————–

‘জাতীয় ক্বারী উবায়দুল্লাহ

যত্নহীন অবহেলিত একটি জীবন্ত লাশ!’

 

পাঁচ-পাঁচটি বছর হয়ে গেল তিনি আর শব্দ করে আল্লাহ বলতে পারেন না! যে আল্লাহর নাম নিয়ে চষে বেড়িয়েছেন তিনি সারাদেশে, ঘুরে বেড়িয়েছেন দুনিয়া জুড়ে, যে আল্লাহর কোরআনের তেলাওয়াত দিয়ে ঝড় তুলেছেন নিযুত-কোটি মানুষের হৃদয়ে, সেই আল্লাহর নামটি এখন স্বশব্দে আর উচ্চারণ করতে পারেন না তিনি। আর তাই এখন দু’চোখ দিয়ে বের হতে থাকে বিদগ্ধ পানি! এ যেন কান্না নয়, কষ্টের বরফগলা। এ যেন যন্ত্রণার বিষাক্ত ঝরনাধারা। কত রাত চোখের জলে বুক ভাসিয়েছেন আল্লাহর জিকির করে করে। কত রাত ভোর হয়েছে তেলাওয়াতের সুরে সুরে। আজও তিনি চোখের জলে বুক ভাসান। এই জল মালিককে চিৎকার করে ডাকতে না পারার বেদনার। তাঁর এখনকার চোখের পানি কষ্টের, দগ্ধ অন্তরের, অতৃপ্তির, যন্ত্রণার।

 

তিনি আমাদের সকলের প্রিয় ক্বারী মাওলানা উবায়দুল্লাহ। ৫ বছর ধরে তিনি কথা বলতে পারেন না। ডানপাশ প্যারালাইজ্ড্ হয়ে আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পারলে আবারো সুস্থ হয়ে ফিরতে পারতেন ক্বিরা’আতের জগতে। আবারো মাতিয়ে তুলতে পারতেন কোরআনপ্রেমীদের হৃদয়। কিন্তু বড় অবহেলায় পড়ে রয়েছেন এই বাংলাদেশের জাতীয় ক্বারী। খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনারাও এক সময় ক্বারী উবায়দুল্লাহর তেলাওয়াত শুনে বিমুগ্ধ হতেন। আর আজ …

 

রমযান কোরআন নাজিলের মাস। জায়গায় জায়গায় বিভিন্ন বোর্ডের মাধ্যমে ক্বিরা’আত প্রশিক্ষণ দানের মাস। ক্বারী উবায়দুল্লাহও রমযান মাসে ঘুরে বেড়িয়েছেন ক্বিরাআতের সেন্টারগুলোতে। সুরের মুর্ছনায় ঝংকার তুলেছেন অযুত অন্তরে। আযান আজও আছে তবে বিলালের সেই আযান আর শুনা যায় না। ক্বিরা’আত আজও হয়, তবে ক্বারী উবায়দুল্লাহ’র সেই সুর আর কানে ভেসে আসে না!

 

দুই

বাংলাদেশের জাতীয় ক্বারীর স্বীকৃতি পাওয়া মাওলানা ক্বারী উবায়দুল্লাহ রাষ্ট্রপতির ভাষণ, বাজেট অধিবেশনসহ জাতীয় সংসদের গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন, রাষ্ট্রপতির বিশেষ কোনো প্রোগ্রাম, রেডিও, টেলিভিশন, সর্বত্র কোরআনের তেলাওয়াত দিয়ে মুগ্ধ করেছেন সবাইকে। আন্তর্জাতিক ক্বিরা’আত সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে দেশের জন্য সুনাম কুড়িয়েছেন। চকবাজার শাহী মসজিদের খতিব হিশেবে প্রতি জুম্মায় কোরআনের মর্মবাণীও ব্যাখ্যা করে শুনিয়েছেন মুসলমানদের। বিভিন্ন দ্বীনি মাহফিলে বক্তব্য রেখেছেন। নসিহত করেছেন লোককে। জীবন ভর কোরআন সংশ্লিষ্ট খেদমতে বিলিয়ে দিয়েছেন নিজেকে। কোনো প্রতিদান চান নি। নীতির প্রশ্ন আপোষও করেন নি কখনও। কাউকে হেয়-ও করেন নি আবার তেলও মারেন নি। যে যুগে টেলিভিশনে সুযোগ পাবার জন্য একশ্রেণীর ক্বারীগণ লাইন ধরে থাকেন, সেই যুগে এমনও হয়েছে যে, টেলিভিশন থেকে লোক এসছে গাড়ী নিয়ে, তেলাওয়াতের জন্য নিয়ে যাবার জন্য কিন্তু তিনি গাড়ী ফিরিয়ে দিয়েছেন, কিরা’আতের ক্লাস করাচ্ছিলেন বলে। দারস্ ছেড়ে উঠেন নি। রাষ্ট্রীয় অফার ফিরিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট বড় ঈমানী কলিজা লাগে। সেরকম বিশাল একটি কলিজা নিয়েই জন্মেছিলেন তিনি।

 

কখনোই কোনো দুর্বলতা ছিল না তাঁর। নিজের জন্য কিছুই করেননি। এবং তারচে’ও আশ্চর্য ব্যাপার হলো, সেই চেষ্টাই করেননি কখনো। এখনও চাদনীঘাটের জীর্ণ-শীর্ণ ঝুপড়ীতেই বাস করেন। খাট-বিছানাও অতি নিম্ন মানের। চাইলে অনেক কিছুই করতে পারতেন তিনি, কিন্তু কোরআনের সুর যার রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গেছে, তার আর কী চাই?

 

তিন

এই কিছুদিন আগেও জাতীয় পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতা জুড়ে কভারেজ পেয়েছিলেন কন্ঠ শিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন। ‘গানের পাখি সাবিনা ইয়াসমীনকে সু-চিকিৎসার মাধ্যমে আবারো গানের জগতে ফিরিয়ে আনতে দেশবাসীর সহযোগিতা চাই’ টাইপের নিউজ হয়েছে পত্র-পত্রিকায়। দিনের পর দিন ফলোআপ প্রতিবেদনও হয়েছে। সরকারও সাবিনা ইয়াসমীনের ব্যাপারে যথেষ্ট সহানুভূতিশীল আচরণ করেছেন। সরকারের উদ্যোগে এবং গানপ্রিয় মানুষের সহায়তায় সাবিনা ইয়াসমীন সুস্থ হয়েছেন। ফিরে এসেছেন আবারো সেই জগতে, যেখানে তার বিচরণ।

 

আটাশি পারসেন্ট মুসলমানে্র বাংলাদেশে গানের ভক্তরা তাদের গানের পাখিকে আবারো গানের জগতে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা-তদবীর করতে পারে, কিন্তু কোরআনের পাখি ক্বারী উবায়দুল্লাহকে আবারো তেলাওয়াতের জগতে ফিরিয়ে আনার জন্য কেউ ‘টু’ শব্দটিও পর্যন্ত করছেন না!

 

শিল্পী সমিতি সাবিনা ইয়াসমীনের জন্য মাঠে নেমেছিলেন। অথচ দীর্ঘ ৫০ বছর এদেশে কুরআনের খেদমত করলেন মানুষটি। তিনি তেলাওয়াতের জন্য গেলে জাতীয় সংসদের অধিবেশনই শুরু হতো না, শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামই শুরু হতো না। সেই মানুষটি আজ পড়ে আছেন অযত্ন-অবহেলায়। কেউ কিছু বলছে না।

 

ক্বারী উবায়দুল্লাহ এখনো প্রতি রাতে হাত তুলে চোখের পানি ছেড়ে ছেড়ে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য দোয়া করেন। কিন্তু তাঁর বুকের ভেতর যে চাপা ক্ষোভ ও যন্ত্রণা রয়েছে, সেটাকে তো তিনি চাইলেও মুছে ফেলতে পারবে না। ক্বারী উবায়দুল্লাহর মতো খালিস্ দ্বীনদার কুরআনের খাদিমের প্রতি আমাদের অবজ্ঞা ও অবহেলার পরও আমরা বুঝতে পারি না নার্গিস, আয়লা ও লায়লারা বারবার এসে  কেনো আমাদের হুমকি দিয়ে যায়।

 

চার

১৭ই আগষ্ট ২০০৮, বিশ্ব বরেণ্য ক্বারী, মাওলানা ক্বারী উবায়দুল্লাহকে তাঁর একান্ত কিছু অনুরাগী দুই দিনের সফরে সিলেট নিয়ে এসছিলেন। ১৭ই আগষ্ট সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে হুজুরকে রিসিভ করতে গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলাম আমি, সাথে ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের ক্বারী মাওলানা গোলাম আহমদ সাহেব। হুজুর কথা বলতে পারেন না আবার এক সাইট প্যারালাইজ হয়ে গেছে বলে একা একা চলতেও পারেন না। সাথীদের কাঁধে ভর দিয়ে এসে গাড়িতে উঠলেন। আর তখন বারবার আমার মনে পড়তে লাগলো দেড় হাজার বছর আগে শেষ নবীর জীবনের শেষে নামাজের কথা …

আম্মা আয়েশার হুজরায় বিশ্বনবী মৃত্যু শয্যায়। চলে মসজিদে যাবেন, সেই  জোর আর শরীরে নেই। হযরত আবু বকর ইমামতির জন্য দাঁড়িয়েছেন বিশ্বনবীর মুসল্লায়। পা টল্ছে, বুক কাঁপ্ছে আবু বকরের। যেখানে দাঁড়িয়ে বিশ্বনবী নামাজ পড়াতেন, নবী এখনো পৃথিবীতেই আছেন, তারপরও নবীর মুসল্লায় দাঁড়ানো… পা তো কাঁপবেই।

 

নামাজ শুরু হলো। ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি শুনে নবী আর স্থির থাকতে পারলেন না। দু’জন সাহাবির কাঁধে ভর করে সোজা চলে গেলেন মসজিদে। আয়েশা বলেন, আমি আল্লাহর কসম কেড়ে বলি, নবীজি হুজরা থেকে মসজিদে যাওয়া পর্যন্ত উভয় পায়ের কোনো একটি আঙুল মাটিতে সামান্য পরিমাণ ভরও দিতে পারেনি। পা টেনে টেনে গিয়ে পৌছে ছিলেন নামাজে।

 

১৫শত বছর পরে সেই নবীর এক শিষ্য ক্বারী উবায়দুল্লাহ নিজ পায়ে আর চলতে পারেন না। কথাও বলতে পারেন না। এই অবস্থায়ও কোরআনের টানে ছুটে এসছেন! ছুটে চলেছেন!

 

সেদিন  রাতে শায়খকে ঘিরে অনেকেই এসে জড়ো হলেন। ক্বারী সাহেবগণও এসে উপস্থিত হলেন। অনেকেই তাঁর সামনে তেলাওয়াত করলেন। একটি ছোটখাটো ক্বিরা’আত সম্মেলন মতন জমে উঠলো মুহূর্তগুলো। সকলেই খুশি প্রিয় ক্বারীকে পাশে পেয়ে। লক্ষ্য করলাম হুজুর কাঁদছেন! তাঁর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে! পরিবেশ ভারী হয়ে এলো। উপস্থিত সকলের মুখের হাসি মিলিয়ে গেল। এমন মাহফিলের মধ্যমণি হিসেবে সবচে’ উঁচু স্বরে তিনিই এক সময় ক্বিরা’আত পড়েছেন। আর আজ অন্যরা, তাঁর ছাত্ররা পড়ছে কিন্তু তিনি পারছেন না! কান্না ছাড়া আর কী-ই-বা করতে পারতেন তিনি?

 

১৯শে আগষ্ট ’০৮ ভোর ৬টায় হুজুরকে বিদায় দিতে গেলাম। মন খারাপ হয়ে গেল আবার। সবাই হাত মেলাচ্ছেন, দোয়া চাইছেন কিন্তু বিনিময়ে মুখ দিয়ে কিছুই বলতে পারছেন না। শুধু চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। ঢুকরে কেঁদে উঠলেন যাবার মুহূর্তে। কেঁদে এবং কাঁদিয়ে বিদায় নিলেন সিলেট থেকে।

 

পাঁচ

ডাক্তার বলেছেন বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠাতে পারলে আবারো কন্ঠস্বর ফিরে পাবার বেশ ভাল সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সেই অর্থে সরকা্রি-বেসরকারি কোনো উদ্যোগই নেই। এবং তারচেও আশ্চর্য্যরে ব্যাপার হল এ নিয়ে কোনো আলোচনা পর্যন্ত চোখে পড়ে না। আফসোস! প্রিন্সেস ডায়নার অন্তর্বাসের নিলামের পরিমাণ কত তে গিয়ে উঠলো, লবণ মরিছ মাখিয়ে প্রচার করবার জন্য এদেশের মিডিয়াগুলোতে যথেষ্ট জায়গা থাকে কিন্তু ক্বারী উবায়দুল্লাহ’র মত একজন জাতীয় ক্বারীর জন্য মানবিক আবেদনের জন্য কোনো জায়গা থাকে না! আমরা কোন দেশে বাস করি!

 

ছয়

৩রা জুন ২০১০। জামেয়া মাদানিয়ার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবীব্বুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ‘আল-জামেয়া কুরআন শিক্ষা বোর্ড, সিলেটের উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য ক্বিরাআত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিশেবে আবারো সিলেট আসবেন ক্বারী মাওলানা উবায়দুল্লাহ। আসবেন, মঞ্চে উঠবেন আর অবধারিতভাবে চোখের পানিই ফেলবেন।  হাজার হাজার ছাত্র, অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী চেয়ে চেয়ে দেখবে। কারো কারো চোখ ভিজে উঠব। কারো মনে সামান্য দাগ কাটবে। কিছু সময় হা হুতাশ করা হবে। ইস্ উফ্ জাতীয় কিছু আওয়াজ শুনা যাবে। আর এটা ততক্ষণ, যতক্ষণ মানুষটি সামনে থাকবেন। তিনি যখন চলে যাবেন, আমরা আবার ব্যস্ত হয়ে যাবো আপন ভুবনে। একজন ক্বারী উবায়দুল্লার জন্য ভাববার সময় কোথায় আমাদের!

 

সাত

আমি ঠিক করেছি এবারে আর বয়ো:বৃদ্ধ এই মানুষটির সামনে গিয়ে দাঁড়াবো না। কারণ তাহলে তখন আমার বলতে ইচ্ছে করবে,

 

– আপনি যদি ভেবে থাকেন বাংলাদেশে আপনার হাজার হাজার ছাত্র আছে যারা আপনাকে অন্তর দিয়ে ফিল করে, তাহলে সেটা ভুল।

– আপনি যদি ভাবেন এদেশে আপনার লক্ষ লক্ষ ভক্ত অনুরাগী আছে, তাহলে সেটা আরো বড় ভুল। থাকলে তো খোঁজ নিত।

– আপনি যদি ভাবেন এদেশের মানুষ আপনাকে ভালবাসে। তাই আপনার চিকিৎসার ব্যাপারে কিছু করবে, তাহলে ভুলে যান সেটা। আপনার মতো মানুষের জন্ম হয় দেবার জন্য, পাওয়ার জন্য নয়।

– এই যে আপনার জন্য আমরা কিছুই করছি না। কিছু করবোও না, তবুও আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে আমরা আপনাকে ভালবাসি!

– আপনি একটি জীবন্ত লাশ হয়ে আমাদেররই চোখের সামনে ধুকে ধুকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছেন, আমরা দেখেও দেখছি না, তবুও আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে আপনাকে ভালবাসি।

– আপনি চলে যাওয়ার পর পত্রিকায় পাঠানোর জন্য শোক বিবৃতিও তৈরি করে ফেলেছি অনেকে, কারণ আমরা আপনাকে ভালবাসি!

– জীবনে আপনি নিজের জন্য করেননি কিছু। করেছেন অন্যের জন্যে, আমাদের জন্যে। এই শেষ বিকেলে এসে আমাদেরকে পাশে পাচ্ছেন না, তবুও আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে আমরা আপনাকে ভালবাসি।

– আপনার যত ছাত্র (?) আছে সারাদেশে, যত ভক্ত আছে, সবাই আপনার দিকে শুধু তাকালেই সম্পন্ন হয়ে যেতো আপনার সু-চিকিৎসার সকল আয়োজন। কিন্তু ব্যস্ত এই পৃথিবীতে আপনার দিকে তাকাবার সময় কোথায়। তবে বিশ্বাস করুন আমরা আপনাকে ভালবাসি। খুব ভালবাসি।

 

প্রিয় উবায়দুল্লাহ!

আপনি কি আমাদের ক্ষমা করবেন?

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...