বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সন্ধ্যা ৬:৩৪
Home / অনুসন্ধান / আতাতুর্ক থেকে এরদোগান

আতাতুর্ক থেকে এরদোগান

Masud Mozumdarমাসুদ মজুমদার:

তুরস্কের সাথে প্রথম পরিচিতি সম্ভবত ১৯৬৫ সালে। অষ্টম কি নবম শ্রেণীর ছাত্র হিসেবে প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁর সফরনামা ‘ইস্তাম্বুল যাত্রীর পত্র’ পড়েছিলাম। এরপর জাতীয় কবির উদ্দীপনাময়ী কবিতা ‘কামাল পাশা’র প্রভাব বিনা বিতর্কে সব বাঙালি মুসলমানের ওপর পড়েছে। যদিও বসনিয়ার দুর্যোগকালীন জননন্দিত প্রেসিডেন্ট আলিয়া ইজেত বেগভিচ কামাল পাশাকে উম্মাহর ইতিহাস বিচ্যুতির দায়মুক্তি দিতে নারাজ। তারপর থেকে আজ অবধি ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে তুরস্ক বারবার চিন্তা ও ভাবধারাকে আলোড়িত করেছে, প্রভাবিত করেছে। মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। বিশেষত অটোমান শাসনের অবসান, খেলাফত বিলুপ্তি ও কামাল পাশার স্বৈরতান্ত্রিক শাসন শেষে ১৯৪৬ সালে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে তুরস্কের যাত্রা ছিল ঘটনাবহুল। ১৯৫০ সাল থেকে দেশটিতে নির্বাচনব্যবস্থার অভিযাত্রা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তারপর সুলেমান ডেমিরাল, তুরগুত ওজাল, নাজমুদ্দিন আরবাকান গণতন্ত্রের বিকাশের ভূমিকা পালনের সুযোগ পান। সেনাশাসন ও গণতন্ত্রকামী মানুষের টানা লড়াইয়ের ইতিহাস যেন তুরস্কের ললাটের লিখন। এরদোগান সম্ভবত এখানেই উজ্জ্বল।

তুরস্ক, ইরান ও পাকিস্তান এক সময় আরসিডি নামে একটি ভ্রাতৃত্বমূলক মৈত্রী জোটের সদস্য ছিল। ইমামত ধারার ইরান, খেলাফত ধারার তুরস্ক ও মিশ্র ধারার পাকিস্তান মুসলিম উম্মাহর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র। তুরস্কের ওসমানিয়া খেলাফত ব্যবস্থার আওতায় এক সময় আমরাও ছিলাম। এক সময় এই উপমহাদেশের রাষ্ট্রভাষা ছিল ফারসি। এখনো আমাদের দালিলিক ও আদালতের ভাষায় ফারসির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। প্রতিদিন আমরা প্রায় দুই হাজার ২০০ ফারসি শব্দ ব্যবহার করি। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় বাঙালি মুসলমান ছিল অগ্রগামী। এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য। সঙ্গত কারণেই ইতিহাসের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে বাংলাদেশ তার উত্তরাধিকার। জাতির স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওআইসির লাহোর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে জাতিকে মুসলিম উম্মাহর সাথে পথচলার ও অভিন্ন স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন।
ভুলে যাওয়া কিংবা চেপে রাখা ইতিহাস হচ্ছে, খেলাফত আন্দোলন আমাদের ব্রিটিশ মুক্তির ঐতিহাসিক আন্দোলনকে গতিশীল করেছিল। বিখ্যাত আলি ভ্রাতৃদ্বয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত খেলাফত আন্দোলনে গান্ধীজীও সমর্থন জুগিয়েছিলেন। খেলাফত ব্যবস্থা বিলুপ্তির পরও ১৯২১ সাল থেকেই তুরস্ক মুসলিম বিশ্বের একটি প্রভাবক দেশ। মানতেই হবে, ‘অটোমান’ সাম্রাজ্যের কারণে তো বটেই, ওসমানি খেলাফত ব্যবস্থা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। অটোমান বা ওসমানি খেলাফতের উত্থান-বিকাশ ও পতন বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল মূলত এর ইনসাফ-ভিত্তিক শাসনতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে। তুরস্ক আরো একবার সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল মোস্তফা কামাল পাশার কালজয়ী ভূমিকার জন্য। নব্য তুর্কিবাদ বা কামালইজম খেলাফত ব্যবস্থার শিকড় কেটে দিয়ে আধুনিক তুরস্কের গোড়াপত্তনের দাবি করে। প্রতিপক্ষ মনে করে, সেকুলারিজমকে মুসলিম বিশ্বে আমন্ত্রণ করে আনার জন্য একক দায় বর্তায় কামাল পাশার ওপর। আরবি শব্দ উপড়ে ফেলে ‘রোমান অক্ষরে’ তুর্কি ভাষা চালু করে কামাল ইউরোপীয় হতে চেয়েছিলেন। তবে তুর্কি ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব তাকে সফল হতে দেয়নি। তুর্কি জাতির জাতীয়তাবাদী চৈতন্যের জায়গায় কামাল পাশা নিঃসন্দেহে একজন বীর। নন্দিত হওয়ার মতো গুণ যেমন তার ছিল; নিন্দিত হওয়ার মতো কিছু দায় থেকেও তিনি মুক্ত নন। তারপরও তিনি তুর্কি ইতিহাসের অন্যতম নায়ক। নতুন ধারায় এগিয়ে চলা জাতিসত্তার স্থপতি। ইস্তাম্বুল থেকে রাজধানী আঙ্কারায় স্থানান্তর ইউরেশিয়ার এ দেশটিকে কতটা লাভবান করেছে, তার চেয়েও বড় কথা ওসমানি শাসনকে আড়াল করার একটা অসাধু ইচ্ছা যে সক্রিয় ছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ইস্তাম্বুলের দু’টি অংশ। একটি ইউরোপ অংশ, অপর অংশ এশিয়া জোনে। তবে ইস্তাম্বুলজুড়ে মুসলিম ঐতিহ্যের একটি ভাবগাম্ভীর্য এখনো বিদ্যমান। অপর দিকে আঙ্কারার আছে চোখ ধাঁধানো, মন ভোলানো নজরকাড়া আধুনিকতা। আঙ্কারায় বসফরাস প্রণালীর মায়াবী হাতছানি নেই। মারমারা সাগরের শান্ত জলধির চোখ জুড়ানো প্রশান্তি নেই। মনে করা হয়- ইস্তাম্বুল ঐতিহ্যসমৃদ্ধ নগরী, আঙ্কারা ইট-পাথুরে শুধুই আধুনিক নগরী। তবে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধনে আধুনিক তুরস্ক যেন নতুনভাবে নিজেদের মেলে ধরতে চাইছে। তুর্কি জাতি বারবার স্মরণ করছে, তারা শাসক জাতি, এক সময় তাদের পূর্বপুরুষেরা প্রায় ৬০০ বছর তিন মহাদেশ শাসন করেছেন। তাদেরই কোনো কোনো শাসক ইতিহাসে অনন্য অবদানের জন্য খ্যাতির শীর্ষে স্থান করে নিয়েছেন। সুলতান সুলেমান সব ইতিহাসবিদের কাছে ‘গ্রেট’ এবং ‘ম্যাগনিফিসেন্ট’ হিসেবে বিশেষ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। এক সময় ওসমানিয়া খলিফাদের নামে আমাদের দেশেও জুমার খুৎবায় দোয়া পড়া হতো। মনে করা হতো, পৃথিবীতে সুলতান আল্লাহর ছায়াতুল্য। এমন একটি বাণী ইস্তাম্বুলের তোপকাপি প্রাসাদের দরজায় এখনো লেখা রয়েছে। যে জাতি ঐতিহ্যকে লালন করে আধুনিক হয়ে উঠতে জানে, সে জাতির সামনে চলার পথ রোখার সাধ্য কারো নেই। সেই প্রমাণ কামাল পাশাও দিয়েছেন। ইউরোপীয় শক্তি চেয়েছিল বসফরাসের দখল নিতে। ইস্তাম্বুলকে স্পেনের মতো পদানত করতে। সেই বিলাস কামাল পাশা গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন উনিশ শতকের শুরুতেই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর ভাগবাটোয়ারায় অটোমান সাম্রাজ্য ভেঙে খান খান হয়ে গেলেও তুরস্ক রাষ্ট্র হিসেবে টিকে যায়।
সম্প্রতি তুরস্কে ব্যর্থ সেনা-অভ্যুত্থান ঠেকিয়ে দিয়ে জনগণ প্রমাণ করলেন, জনগণের শক্তি রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঠিক নির্দেশনায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারে। জনগণের অর্থে পোষা সেনাবাহিনী বন্দুকের জোরে শাসক হয়ে যেতে পারে না। সাধারণভাবে তুরস্কের রাজনৈতিক নেতৃত্ব দলবাজি কিংবা দল পূজার ঊর্ধ্বে। দেশ-জাতির প্রয়োজনে তারা দলীয় সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে এবং দলের নাম ছুড়ে ফেলে দিয়ে জনগণকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ জাতি গড়ে তুলতে জানেন। রজব তাইয়েব এরদোগান এই মুহূর্তে তুরস্কের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। এর আগেও তিনি এক মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ছিলেন, আরো আগে ছিলেন মহানগরী ইস্তাম্বুলের মেয়র। ১৫ জুলাই ২০১৬ তারিখের সামরিক অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দেয়ার পর এরদোগান হয়ে উঠেছেন তুরস্কের আরেক মহানায়ক। জনগণকে সাথে নিয়ে জীবনবাজি রাখা এক নতুন নায়কের সাথে পরিচিত হলো তুর্কি জাতি ও বিশ্ববাসী। প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী ও মেয়র এরদোগান অন্য দশজনের মতো; কিন্তু ব্যর্থ অভ্যুত্থানের বিপরীতে মহানায়ক এরদোগান ইতিহাসে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। কামাল আতাতুর্ক যদি নব্য তুরস্কের স্থপতি হন, এরদোগান হয়ে উঠলেন তুরস্কের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার নতুন স্থপতি। জনগণ এখনই তুরস্কের পতাকার পাশে কামাল পাশার সাথে এরদোগানের ছবিরও ঠাঁই দিয়েছে। এই দৃশ্য এখন তুরস্কজুড়ে চোখে পড়ে। এটা শাসকদের ইচ্ছার ফসল নয়, জনগণের আবেগ ও উপলব্ধির নজির।
একাডেমিক আলোচনার বাইরে তুরস্কের শাসকেরা জাতির স্থপতি কে, তা নিয়ে বিতর্ক করেন না। জীবনঘনিষ্ঠ নয়, এমন ধর্মচর্চা নিয়ে বিতণ্ডায় জড়ান না। পোশাকি ইসলাম নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন না। কামালবাদীদের সাথে বেশ ক’বার নামে নয়, ইসলামের প্রাণস্পর্শে দীক্ষিত দলের বোঝাপড়ায় সরকার পরিচালিত হয়েছে। তুরস্ক সে দেশ, যেখানকার জনগণ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সরকার রক্ষার জন্য মধ্যরাতে বিপথগামী সেনাদের কামান-গোলা ও ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে যেতে পারে। যে দেশের প্রেসিডেন্ট মোবাইল ফোনে জাতিকে রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়ে নিজেও রাজপথে নেমে আসতে পারেন, পার্লামেন্ট ভবনে বোমা পড়ার শব্দে হকচকিত না হয়ে সে ভবনের নিজ কক্ষে খাবার টেবিল ছেড়ে যে স্পিকার অজু করে তাৎক্ষণিক পার্লামেন্টের বৈঠক ডাকতে পারেন; বোমার শব্দে ভড়কে না গিয়ে যে দেশের সংসদ সদস্যরা পার্লামেন্ট ভবনের দিকে ছুটে আসেন- সে দেশের জনগণের তুলনা আর কোথায়! মধ্যরাতে একজন মহিলা বসফরাস প্রণালীর সংযোগ সেতুতে গিয়ে বিপথগামী সেনা সদস্যকে প্রশ্নবাণে রুখে দিয়ে নিজে আহত হতে পারেন। তাদের তুলনা তো সালাউদ্দিন আইয়ুবির সাথে হতে পারে। হতে পারে ইস্তাম্বুলে শায়িত রাসূল সা:-এর সাহাবার প্রেরণার সাথে। ভাবতে অবাক লাগেÑ এই তুর্কি জাতির ওপর সেনাবাহিনী অন্যায্যভাবে দীর্ঘ দিন আধিপত্য বজায় রেখেছে কামালবাদের নামে। সেখানে এখন জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত।
জাতীয় কিংবা রাজনৈতিক সঙ্কটে একটি দেশের সব রাজনৈতিক দল ভেদাভেদ ভুলে একাট্টা হওয়ার ঘটনা ইতিহাসে বিরল। সেই বিরল দৃষ্টান্তই স্থাপন করলেন আরো একবার ১৫ জুলাইয়ের মধ্যরাতে তুর্কি জনগণ ও রাজনীতিবিদেরা। রাজপথ ও পার্লামেন্টের ভেতর যে ঐকতান সৃষ্টি করে দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র ও নির্বাচিত সরকার রক্ষার নজির সৃষ্টি করলেন, তার তুলনা কমই পাওয়া যাবে।
সমরকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের মতে হরমুজ প্রণালী, সুয়েজ খাল ও বসফরাস প্রণালী বিশ্বের সামরিক কৌশলের বেশির ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আরো নিয়ন্ত্রণ করে বিশ্ববাণিজ্যের অর্ধেকটা। তাই ইতিহাস বারবার সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ওপর দৃষ্টি ফেলতে চাইবে। সে ক্ষেত্রে পারস্য, আরব এবং তুর্কি বা অটোমানদের প্রাধান্য খর্ব করা কঠিন হবে। এই শক্তিগুলো ইতিহাসের নানা বাঁকে বিশ্বরাজনীতির ওপর প্রভাবও ফেলবে বহুবার। এরদোগানের তুরস্ক যেন সেই প্রেক্ষাপটে এসে দাঁড়াল আরো একবার।
তুরস্কের রাজনীতিতে অভিজাত, ব্যুরোক্রেসি ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা আলোচনার দাবি রাখে। মনে করা হয় তুর্কি জনগণ বিশ্বাসী; আর এই ত্রিশক্তির বিশ্বাসের ফাটল দৃষ্টিগ্রাহ্য। তুরস্কের রাজনীতির গভীর গবেষণার স্বার্থে ওস্তাদ বদিউজ্জামান নুরসির আলোচনাও খুবই প্রাসঙ্গিক। সেই সাথে ফতেহউল্লেহ গুলেন, যার দিকে এরদোগান অভিযোগের তীর ছুড়েছেন, যিনি রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে; তার স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্যও কম প্রাসঙ্গিক নয়।
শাসনতান্ত্রিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোর ভেতর, পোশাকি ও প্রান্তিক চিন্তার ইসলামচর্চার বিপরীতে তুর্কি রাজনীতিবিদেরা বাস্তবে কিভাবে ইসলাম অনুসরণ করেন, সেটাও বিবেচনায় নেয়ার মতো। প্রফেসর নাজমুদ্দিন আরবাকান থেকে এরদোগান পর্যন্ত রাজনীতিবিদেরা কিভাবে জাতির স্থপতিকে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে রেখে জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ অবদান রেখেছেন, তা রীতিমতো অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে। বাংলাদেশের জনগণ, সরকার ও রাজনীতিবিদদের জন্য তুরস্ক হতে পারে একটি রোল মডেল। তুরস্কের নিজস্ব রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি ও অভ্যন্তরীণ সব বিষয়ে আমাদের উৎসাহ প্রদর্শনের কোনো কারণ নেই। একমত হওয়াও জরুরি নয়। অতিরিক্ত অনুরাগ প্রদর্শনও অর্থহীন। তবে যা কিছু ভালো ও কল্যাণকর, তার প্রতি আগ্রহ থাকা কোনো অযৌক্তিক আচরণ নয়। তাই বারান্তরে এসব বিষয়-আশয় নিয়ে আলোচনার আশা রইল।
তবে এই লেখা শেষ করার আগে ভবিষ্যদ্বাণী নয়, ক’টি আশঙ্কার কথা বলে রাখা ভালো। প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও তার জনগণকে নতুন কিছু সঙ্কট মোকাবেলা করতে হবে। সিরিয়ার ১৫ লাখ শরণার্থীর সাথে কিছু সঙ্কটও আমদানি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র গুলেন নিয়ে খেলবে নাÑ তাও মনে না করার কারণ নেই। তা ছাড়া গুলেনের সমর্থকেরা একেবারে ভুঁইফোড় হওয়ার কথা নয়। ক্ষয়িষ্ণু বামপন্থীরা সুযোগ পেলেই পানি ঘোলা করতে চাইবে। ব্যর্থ অভ্যুত্থানের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সহজেই মিলিয়ে যাবে না। এক ধরনের ‘রক্তক্ষরণ’ অর্থনীতি ও পর্যটনে ভাটার টানকে আহ্বান জানাবে। তবে ভরসা একটাই, তুর্কি জনগণ দলান্ধ নন। আবার সেনাশাসনের নিগড়ে যেতেও রাজি নন। গণতন্ত্র ও জাতির স্বার্থে বড় ত্যাগ মেনে নেন। বারবার সেই প্রমাণ তারা দিয়েছেন।

 

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...